দেশে ক্ষুদ্র্র সঞ্চয়ের অগ্রগতি এবং দারিদ্র্য বিমোচনে এর প্রভাব সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ক্ষুদ্র ঋণের পরিবর্তে ক্ষুদ্র সঞ্চয় পদ্ধতি গ্রহণ করার জন্য ২০১৫ সালের ৮ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এই নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ওই নির্দেশনার বাস্তবায়ন অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে চিঠি পাঠিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সংশ্লিষ্টরা জানান, ৮০’র দশকে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ক্ষুদ্র ঋণের প্রভাব ছিল গুরুত্বপূর্ণ। এখন সেই ধারার পরিবর্তন ঘটছে। যারা এক সময় ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে নিজেদের জীবনমান উন্নয়নের চেষ্টায় নেমেছিলেন, এখন তারাই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের মাধ্যমে ব্যক্তিপুঁজি গড়ে তুলছেন। কেউ কেউ এসব পুঁজি কৃষিতে বিনিয়োগ করছেন। কেউ বিনিয়োগ করছেন মত্স্য খামারে। কেউ আবার ক্ষুদ্রশিল্পে বিনিয়োগ করে নিজেদের ভাগ্যটাই বদলে ফেলছেন। সরকারও এই পরিবর্তনকে লক্ষ্য হিসেবে নিয়ে ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করার নীতি নিয়েছে। ক্ষুদ্র সঞ্চয় দিয়ে ২০২১ সালের মধ্যে দারিদ্র্যকে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে এনে মধ্যম আয়ের লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করেছে বাংলাদেশ। সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের পথে দেশকে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। সেই প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের সঞ্চয় দিয়ে তৈরি হয়েছে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক। প্রকল্পের অগ্রগতি প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৬-এর জুন শেষে প্রায় ২৪ লাখ পরিবারকে ৪০ হাজার ৪৪৫টি গ্রাম উন্নয়ন সমিতির মাধ্যমে ক্ষুদ্র সঞ্চয় পদ্ধতিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মোট সঞ্চয়ী তহবিলের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬২৮ কোটি টাকা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ক্ষুদ্র ঋণ নয়, ক্ষুদ্র সঞ্চয় ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে শতভাগ স্বাবলম্বী করাই এর উদ্দেশ্য। সে লক্ষকে সামনে রেখেই এগিয়ে যাচ্ছে প্রকল্পের কার্যক্রম। এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন রয়েছে ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার। সারা দেশে যে সমবায় সমিতি গড়ে উঠছে তার মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনে সুদূরপ্রসারী ফল মিলছে। আমেরিকার মতো দেশে প্রায় ৯ লাখ সমবায় সমিতি আছে। মালয়েশিয়ার মতো দেশে এমএমই ব্যাংক গঠন হয়েছে। তিনি বলেন, ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের মাধ্যমে গড়ে ওঠা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শিল্পে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। দরিদ্র, অনাহারি মানুষ নিজেরাই এখন বিভিন্ন কৃষি ও খামারভিত্তিক শিল্প গড়ে তুলছেন। আর এভাবেই ক্ষুদ্র সঞ্চয় দারিদ্র্য বিমোচনের পাথেয় হিসেবে কাজ করছে। আগামী ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্যম আয়ে উন্নীত করা ও কৃষি জমির সুষ্ঠু ব্যবহারের মাধ্যমে পারিবারিক শ্রম ও স্থানীয় সম্পদ কাজে লাগিয়ে দারিদ্র্য দূর করার জন্যই সরকারের এ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী। সূত্রগুলো জানায়, সমন্বিত গ্রাম উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রতিটি বাড়িকে অর্থনৈতিক কার্যাবলীর কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়াসে ১ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পটি গ্রহণ করে আওয়ামী লীগ সরকার। ২০০৯ থেকে শুরু করে ২০১৪ সালে এই প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ইতিবাচক ফলাফল আসায় দ্বিতীয় দফায় প্রকল্পের মেয়াদ দুই বছর বাড়ানো হয়। দ্বিতীয় সংশোধনীতে ব্যয় ৩ হাজার ১৬২ কোটি টাকায় উন্নীত করে প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৬ সালে জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। পরে প্রকল্পের কর্মসূচি অব্যাহত রেখে একে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক আইন ২০১৪ পাস করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের লাইসেন্স নেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী গত বছরের ২২ জুন ব্যাংকটির ১০০টি শাখা উদ্বোধন করেন। গত বছরের অক্টোবরে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত উন্নীত করা হয়। এই প্রকল্পে ৪ হাজার ৮৪৭ কোটি টাকা বাড়িয়ে ৮ হাজার ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সরকারের লক্ষ্য সারা দেশের দরিদ্র মানুষকে এই প্রকল্পের আওতায় এনে তাদের ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের মাধ্যমে জীবনমান উন্নয়নে সহায়তা করা।
শিরোনাম
- রাবি শিক্ষার্থীদের ওপর দুর্বৃত্তদের হামলার প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ
- বিপিএল নিলামের নতুন তারিখ ঘোষণা
- স্বর্ণের দাম বেড়েছে
- বগুড়ায় তারেক রহমানের পক্ষে ভোট চেয়ে পথসভা ও গণসংযোগ
- গাজায় ৩ হাজার পুলিশ সদস্যকে প্রশিক্ষণ দিতে চায় ইইউ
- অজিত দোভালকে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানালেন খলিলুর রহমান
- শেখ হাসিনাকে বন্দী বিনিময় চুক্তির মাধ্যমে ফিরিয়ে রায় কার্যকর করতে হবে : দুলু
- সাইফের স্ট্যালিয়ন্সকে হারাল তাসকিনের নর্দান ওয়ারিয়র্স
- তা’মীরুল মিল্লাত মাদরাসার টঙ্গী শাখা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা
- ৪২ বছর বয়সে বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পেলেন স্কটিশ গোলরক্ষক গর্ডন
- দেশে থেকেই কার্ড দিয়ে বিদেশি রুটের বিমানের টিকিট কেনা যাবে
- জিয়া পরিবার ফোবিয়ায় যারা ভোগেন, তাদের জনভিত্তি নেই : প্রিন্স
- বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করলো ডেনমার্ক
- গণভোট নিয়ে অধ্যাদেশ জারির পর করণীয় বিষয়ে পদক্ষেপ : সিইসি
- শান্তি প্রচেষ্টা জোরদারে আলোচনার জন্য তুরস্কে জেলেনস্কি
- সাংবাদিক খাসোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে সৌদি যুবরাজের পক্ষ নিলেন ট্রাম্প
- কিবরিয়া হত্যায় ৩০ হাজার টাকার চুক্তি হয় : র্যাব
- লাশ পোড়ানোর মামলায় ক্ষমা চেয়ে জবানবন্দি দিলেন রাজসাক্ষী আবজালুল
- শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনে সামরিক বাহিনীর সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা
- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করলো বসুন্ধরা নিবাসী চবিয়ানরা