বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দেশনেত্রীকে (খালেদা জিয়া) ভয় পায় আওয়ামী লীগ। তাই রাজনৈতিকভাবে তাকে মোকাবেলা করতে না পেরে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে চায়।’
খালেদার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার বিষয়ে মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, 'আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই, এই মামলা সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করবার জন্যে হীন উদ্দেশ্যে প্রণোদিত। গণবিচ্ছিন্ন সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা বেগম জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতেই এই ধরনের হীন মিথ্যা মামলার আশ্রয় নিয়েছে। রাজনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ দেউলিয়া হয়ে এই শাসকগোষ্ঠি মিথ্যা মামলা দিয়ে বিরোধী দলকে নির্মূল করবার ভয়াবহ চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে। আমরা এই মিথ্যা মামলা দায়েরের নিন্দা জানাই।”
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য বিরোধী সকল শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ দেশের হাজার হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অসংখ্য মিথ্যা মামলা দিয়ে গণতান্ত্রিক রাজনীতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে সরকার। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে ১০টি মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। দুর্নীতির মামলা, নাশকতা মামলা সর্বশেষে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়ের করে প্রমাণ করেছে যে, আওয়ামী লীগ দেশনেত্রীকে ভয় পায় এবং তাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে না পেরে মিথ্যা মামলা দিয়ে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে চায়।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, ‘জোর করে হত্যা, গুম, খুন ও মিথ্যা মামলা দিয়ে ক্ষমতায় চিরদিনের জন্য টিকে থাকা যায় না। বাংলাদেশের মানুষ তা বারবার প্রমাণ করেছে। জনগণই তাদের অধিকার ফিরিয়ে আনতে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাদের দাবি আদায় করবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, “দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মহান মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক, যুদ্ধাকালীন সেক্টর কমান্ডার, বীর উত্তম শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী, নিজে দীর্ঘ ৯ মাস পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর হাতে কারাবন্দি ছিলেন। তিনি তিনবার দেশের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ও গণমানুষের নেতা।
“বেগম জিয়া মুক্তিযুদ্ধের প্রতি শ্রদ্ধাশীলই নন, তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও মর্যাদা সংরক্ষণ এবং তাদের পরিবারবর্গ ও সন্তানদের সার্বিক কল্যাণের ব্যবস্থা গ্রহন করেছিলেন, যা অতীতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেও করেনি।”
মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস রচনায় শহীদ জিয়াউর রহমানের প্রকল্প গ্রহণ ছাড়াও খালেদা জিয়ার সরকার সারাদেশে মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোকে সংরক্ষণ করতে স্মৃতিস্থাপনা নির্মাণ করেছিল বলেও দাবি করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন-বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শামছুজ্জামান দুদু, অ্যাডভোকেট আহমদ আযম খান, যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, যুব বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপি নেতা সানা উল্লাহ মিয়া, হাবীবুর রহমান হাবীব, আবু সাঈদ খোকন, শাম্মী আক্তার, হেলেন জেরিন খান প্রমুখ।
বিডি-প্রতিদিন/২৬ জানুয়ারি, ২০১৬/মাহবুব