ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের নিরাপদ ও আরামের বিষয়টি মাথায় রেখে পূর্বাঞ্চলের পাহাড়তলী রেল ওয়ার্কশপে পুরোদমে চলছে কোচ নির্মাণের কাজ। ওয়ার্কশপ শ্রমিকদের দম ফেলার ফুরসত নেই। কেউ করছে ওয়েল্ডিং, কেউ করছে রঙয়ের কাজ। নতুন নির্মিত কোচগুলোতে লাগানো হচ্ছে জানালা ও অত্যাধুনিক সিট। প্রাথমিকভাবে এবার ৮০টি কোচ যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে রেলের। ইতোমধ্যে ৩০টি কোচ প্রস্তুত হয়েছে। বাকি কোচগুলো নির্মাণে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ওয়ার্কশপ শ্রমিকরা। তবে এবার থাকছে ইন্দোনেশিয়া থেকে আশা লাল-সবুজের কোচও।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) প্রকৌশলী মো. আবদুল হাই বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ঘরমুখো যাত্রীদের ট্রেনে বাড়ি ফেরা আরামদায়ক করতে ওয়ার্কশপে নির্মিত হচ্ছে নতুন ট্রেন। ইন্দোনেশিয়া থেকে আনা লাল-সবুজ ট্রেনও এবার ঈদের বহরে যুক্ত হতে পারে। তবে নতুন কোচের কারণে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের দুর্ভোগও কমবে বলে মনে করেন তিনি।
পাহাড়তলী ওয়ার্কশপের বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ঈদের আগেই ৮০টির মতো কোচ যুক্ত হবে পূর্বরেলে। এছাড়াও ইন্দোনেশিয়া থেকে আসা লাল-সবুজের কয়েকটি কোচও যুক্ত হবে। ইতোমধ্যে ৩০টি কোচ ওয়ার্কশপ থেকে বের হয়েছে। বাকিগুলোও ঈদের আগে বের হবে। ঈদের কোচ প্রস্তুত করতে ওয়ার্কশপ শ্রমিকরা ব্যাপক পরিশ্রম করছে। প্রতিদিন একটি করে গাড়ি বের করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
রেলওয়ে শ্রমিক নেতা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঈদ উপলক্ষে অত্যাধুনিকভাবে এসি, নন-এসি কোচগুলোর সৌন্দর্য্য বাড়ানো হচ্ছে। নতুন করে তৈরিকৃত এসব কোচে যাত্রীরা আরামদায়ক পরিবেশে গন্তব্যে পৌঁছতে পারবে। একই কথা বললেন শ্রমিক নেতা কামাল পারভেজ বাদল।
পাহাড়তলী ওয়ার্কশপ ঘুরে দেখা যায়, ঈদ উপলক্ষে নতুন কোচ নির্মানে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ চলছে পাহাড়তলী ওয়ার্কশপে। বেশকিছু কোচ নতুন করে সংস্কারের জন্য ওয়ার্কশপে মজুদ করা হয়েছে। ঈদের আগেই যাতে কোচগুলো রেল বহরে যুক্ত করা যায় সেজন্য ওয়ার্কশপ শ্রমিকরা পুরোদমে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ক্যারেজ সপের পিছনের অংশে নতুন প্রস্তুতকৃত কোচগুলোকে সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়েছে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা ১০০টি কোচের মধ্যে প্রথম ধাপে ১৫টি ও দ্বিতীয় ধাপে ২২টি কোচ মিলিয়ে ৩৭টি কোচ এসেছে। আমদানি করা কোচগুলোর মধ্যে ১৫টির ট্রায়াল সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ২২টি নতুন কোচেরও ট্রায়াল চলছে। ঈদের আগে আরও একটি চালান আসার কথা রয়েছে। নতুন কোচগুলো রেলবহরে যুক্ত হলে যাত্রীসেবায় আরও বেশি গতি বাড়বে। ঈদ পরিকল্পনায় এবার সুবর্ণ এক্সপ্রেসের মতো একজোড়া ট্রেন চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ট্রেনটির নাম হবে সুবর্ণ স্পেশাল। পাশাপাশি ঈদের আগে স্পেশাল ট্রেন ও আন্তঃনগর ট্রেনের ঈদ সেবা চালু থাকবে।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ