প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বাধীনতা রক্ষার সুমহান দায়িত্ব সশস্ত্র বাহিনীর হাতে ন্যস্ত। সেই পবিত্র দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা, দেশের উন্নয়ন কার্যক্রম, অবকাঠামো নির্মাণ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়ে আসছেন। ভবিষ্যতেও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষাসহ জাতির যে কোনো প্রয়োজনে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা সমসময় নিবেদিত থাকবেন এটাই প্রত্যাশা।
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সোমবার (২১ নভেম্বর) সকালে ঢাকা সেনানিবাসে সশস্ত্র বিভাগে আয়োজিত খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু দেশেই নয়, বহির্বিশ্বেও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও বেশি উজ্জ্বল করতে হবে।
সশ্রস্ত্র বাহিনীর কল্যাণে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়ন, ভৌত ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও বিবিধ কল্যাণমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর। জাতির বীর সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক মর্যাদায় পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে এবং তাদের অবদানের সর্বোচ্চ স্বীকৃতি দিতে আমাদের সরকার নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে।
মুক্তিযোদ্ধা ও খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারবর্গের ভাতা বৃদ্ধি, মুক্তিযোদ্ধাদের মেধাবী সন্তান ও তাদের পরবর্তী প্রজন্মের লেখাপড়ায় সহায়তা ও উৎসাহ প্রদানের জন্য বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট ‘বঙ্গবন্ধু ছাত্র বৃত্তি’ চালু, ‘ভূমিহীন ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বাসস্থান নির্মাণ’, প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ কর্মসূচি, চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা ও উত্তরাধিকারীদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা, পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধার পুত্র-কন্যা এবং তাদের সন্তানদের নিয়োগের বিধান রাখাসহ বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে ৭ বীরশ্রেষ্ঠের নিকট আত্মীয়সহ ৭০ জন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের হাতে সম্মানি চেক, শাল, মোবাইল ট্যাব উপহার হিসেবে তুলে দেন শেখ হাসিনা।
কৃতিত্বপূর্ণ অবদনের স্বীকৃতি হিসেবে সেনাবাহিনীর লেফট্যানেন্ট জেনারেল মইনুল ইসলাম, নৌবাহিনীর কমডোর কামরুল হক চৌধুরীকে অসামান্য সেবা পদক এবং সেনাবাহিনীর কর্পোরাল মোকলেছুর রহমান, বিমান বাহিনীর এয়ার ভাইস মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত ও নাঈম হাসানকে বাহিনী পদক পরিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।
সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের উদ্যোগে খেতাবপ্রাপ্ত জীবিত সশস্ত্র বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে পরিচয়পত্র বিতরণ করা হয়। এ পরিচয়পত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়েসহ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহনের ফেরি, বিআরটিসি বাসে বিনা ভাড়ায় ভ্রমণ, বাংলাদেশ বিমানের আন্তর্জাতিক রুটে বিনা ভাড়ায় বছরে একবার পবিত্র হজ বা ওমরাহ পালন, বিমান বন্দরগুলোতে ভিআইপি লাউঞ্জসহ ফেরি পারাপারে ভিআইপি রুম ও কেবিন ব্যবহারের সুযোগ থাকবে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- মুক্তিযোদ্ধা বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আবু এসরার, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাহফুজুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম প্রমুখ।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ