চাঁদাবাজির মামলায় বাগেরহাট পৌরসভার প্যানেল মেয়র, পৌর যুবলীগের সভাপতি এবং আন্তঃজেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মিনা হাসিবুল হাসান শিপনসহ তিনজনকে আটকের ঘটনায় গতকাল সকাল থেকে উত্তাল হয়ে ওঠে বাগেরহাট শহর। ভোর থেকে শহরে বিক্ষোভ মিছিল বিক্ষিপ্ত পিকেটিং শুরু হয়। সকাল ৯টার দিকে বিক্ষুব্ধরা মিছিল সহকারে বাগেরহাট মডেল থানার সামনে পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙে সামনে এগিয়ে গেলে পুলিশ লাঠিচার্জ ও ৬ রাউন্ড শটগানের গুলি ছুড়ে। শহরের সব দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। বাগেরহাটসহ আন্তঃজেলার ১১টি রুটের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরে বিকাল ৪টায় প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের পর মানবিক কারণ দেখিয়ে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এতে ১০ ঘণ্টা পর বাগেরহাটের সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্য স্থানের সড়ক যোগাযোগ ফের চালু হয়। অন্যদিকে চাঁদাবাজির মামলায় আটক প্যানেল মেয়র ও তার দুই সহযোগীকে পুলিশ আদালতের মাধ্যমে দুপুরে কারাগারে প্রেরণ করেছে।
এদিকে পুলিশের হাতে আটক পৌরসভার প্যানেল মেয়র মিনা হাসিবুল হাসান শিপন সাংবাদিকদের জানান, সরকারদলীয় কতিপয় নেতা ভূমিদস্যু আবদুল মান্নানের কাছ থেকে বিশেষ সুবিধা লাভের পর তাদের নির্দেশে পুলিশ তাকে আটক করে। অন্যদিকে নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেটের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আবদুল মান্নান সাংবাদিকদের জানান, বাগেরহাটের অনেক ক্ষমতাসীন ও রাজনৈতিক নেতাদের চাঁদা দিতে দিতে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় দেউলিয়া হওয়ার উপক্রম হয়েছে। পিঠ দেয়ালে ঠেকে যাওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটিকে বাঁচাতে নির্যাতন ও হয়রানির হাত থেকে রক্ষা পেতে মামলা করতে তিনি বাধ্য হয়েছেন।
বাগেরহাট মডেল থানার ওসি আলী আজম খান জানান, সোমবার রাতে বাগেরহাট মডেল থানায় নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট প্রা. লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক আবু জাফর বাদী হয়ে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি ও তার প্রতিষ্ঠানে হামলার অভিযোগে বাগেরহাট পৌরসভার প্যানেল মেয়র মিনা হাসিবুল হাসান শিপনসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। এ ঘটনার পর সোমবার রাতেই প্যানেল মেয়র ও ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শিপনকে তার বাড়ি থেকে এবং সদর উপজেলার নোনাডাঙ্গা এলাকা থেকে মামলার এজাহারনামীয় অপর আসামি সিদ্দিকুর রহমান ও নাগেরবাজার এলাকা থেকে ফহম শেখকে (২৫) পুলিশ আটক করে।