দেশের বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো বিবরণ-
নওগাঁ : নওগাঁয় মাঠে কাজ করার সময় ও নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে দুই নারীসহ বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বিকালে জেলার মহাদেবপুর ও পোরশা উপজেলায় পৃথক পৃথক স্থানে বজ্রপাতের ঘটনায় তাদের মৃত্যু হয়। নিহতরা হলেন- মহাদেবপুর উপজেলার রাইগাঁ ইউনিয়নের সিলিমপুর গ্রামের নেপাল পাহানের স্ত্রী শ্রীমতি পাহান (২৭) ও একই গ্রামের মৃত সুবেন্দ্রনাথ পাহানের স্বামী সবানী পাহান (৬৫) এবং পোরশা উপজেলার চকবিষ্ণুপুর গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে রফিকুল ইসলাম (৫০)। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন জানান, নিহত শ্রীমতি পাহান ও সবানী পাহান বাড়ির পাশেই মাঠে কাজ করছিলেন। এ সময় বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর হঠাৎ সেখানে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই তারা দুজন মারা যান। নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার বলাইশিমুল ইউনিয়নের বেজগাঁও গ্রামের রিফাত (১০) বজ্রপাতে নিহত হয়েছে। রিফাত উপজেলার বেজগাঁও গ্রামের বলাইশিমুল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রতন মিয়ার ছেলে এবং স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
স্থানীয় লোকজন জানান, দুপুরে রিফাত বাড়ির সামনে নদীতে বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে গিয়েছিল। এ সময় বৃষ্টি এবং বজ্রপাত শুরু হলে নদীর পাশে একটি গাছের নিচে সে আশ্রয় নেয়। এ সময় বজ্রপাত শুরু হলে রিফাত আহত হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে কেন্দুয়া উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে এলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
কুমিল্লা : কুমিল্লার মুরাদনগরে ঘাস কাটার সময় বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল উপজেলার বাঙ্গরাবাজার থানার আকুবপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম মো. আলম মিয়া (৫৬)। তিনি আকুবপুর গ্রামের এয়াকুব আলীর ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. সালাউদ্দিন। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে তিনি জানান, কৃষিকাজের পাশাপাশি গরু পালন ও আকুবপুর বাজারে পোলট্রির দোকান ছিল আলম মিয়ার। বেলা ১২টার দিকে মাঠে গরুর জন্য ঘাস কাটছিলেন তিনি। এ সময় বজ্রপাতে মারা যান আলম। আলম ছয় মেয়ে ও এক ছেলের জনক।
হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জ শহরতলির ছোট বহুলা গ্রামে মাঠ থেকে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে বাচ্চু মিয়া (৪৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। দুপুরে ছোট বহুলা গ্রামের পার্শ্ববর্তী মাঠে এ বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। নিহত কৃষক বাচ্চু মিয়া ওই গ্রামের বারিক মিয়ার ছেলে। স্থানীয়রা জানান, সকাল থেকেই হবিগঞ্জের ওপর দিয়ে বৃষ্টিসহ বজ্রপাত শুরু হয়। বৃষ্টির মধ্যেই কৃষক বাচ্চু মিয়া গ্রামের পার্শ্ববর্তী মাঠ থেকে গরু আনতে গেলে সে বজ্রাঘাতের শিকার হয়। তাৎক্ষণিক স্থানীয় লোকজন বিষয়টি দেখতে পেরে তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে আসে। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন।
ফরিদপুর : ফরিদপুরে গরুর ঘাস কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে তুলসী রানি সরকার (৪২) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও চারজন। আহতদের উদ্ধার করে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে সদর উপজেলার মাচ্চর ইউনিয়নের পরানপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার দুপুরের দিকে বাকচর গ্রামের দুই নারীসহ পাঁচজন বৃষ্টির মধ্যে কৃষিকাজ ও গরুর জন্য মাঠে ঘাস কাটতে যান। এ সময় বজ্রপাতে পাঁচজন আহত হন। ঘটনাস্থলের একটু দূরে মাঠে কাজ করা কৃষকরা ও স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে নেওয়ার পথে তুলসী রানি সরকার মারা যান।