নড়াইল জেলা বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর বিশ্বাস আধিপত্য বিস্তার এবং নিজের শক্তি বাড়ানোর জন্য ফ্যাসিবাদের দোসরদের দলে টানছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে দলের নিবেদিতপ্রাণ নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ। কারণ যারা এতদিন বিএনপিসহ বিরাধী দলকে অত্যাচার-নির্যাতন করেছে, তাদের দলে নেওয়া হয়েছে।
নড়াইল জেলা বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে কালিয়া উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটি নিয়ে নানান অভিযোগ করেছেন দলের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা। তাঁরা জালজালিয়াতির মাধ্যমে কমিটিতে আওয়ামী লীগের উপজেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদকসহ কয়েকজনকে উপজেলা ও পৌর কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত এবং অনুমোদন দেন। সব মিলিয়ে আওয়ামী লীগের আটজনকে কালিয়া উপজেলা ও পৌর কমিটিতে ঢোকানো হয়। তাঁরা হলেন অ্যাডভোকেট এ এস এম সাইফ আহমেদ হিরক (আইনবিষয়ক সম্পাদক), মো. জামেরুল ইসলাম (মৎস্যজীবীবিষয়ক সম্পাদক), মোল্লা জাকির হোসেন (সহযুববিষয়ক সম্পাদক), মো. মিলু মল্লিক, মো. রাফিকুজ্জামান ও আনিসুর রহমান মাহরূফ (সদস্য)। এ ছাড়া বিভিন্ন উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটিতেও একইভাবে আওয়ামী লীগের লোকজনকে পদ দিয়েছেন তাঁরা। এর প্রতিবাদে ত্যাগী নেতা-কর্মীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুল লতিফ সম্রাট বলেন, ‘আমরা জীবন বাজি রেখে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। জাতিসংঘ, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, হোয়াইট হাউসসহ এক-এগারো থেকে শুরু করে খুনি হাসিনার পতন পর্যন্ত মাঠে ছিলাম। পট পরিবর্তনের পর নিজের এলাকার বেন্দারচর ষোলাবিল মাঠে ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে যাওয়ার সময় হামলার শিকার হই। এ হামলার নেতৃত্ব দেন জেলা বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর বিশ্বাসের ছোট ভাই আসজাদুর রহমান মিঠু বিশ্বাস।’
কালিয়া পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম রেজা ইউসুুফ বলেন, ‘আমাদের দেওয়া তালিকাটিতে জালজালিয়াতির মাধ্যমে জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকসহ ফ্যাসিস্টের অসংখ্য লোকজনকে উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটিকে অন্তর্ভুক্ত করেন।’ তিনি জেলা ও উপজেলা কমিটি কাউন্সিলের মাধ্যমে পুনর্গঠনের দাবি জানান।
বি এম বাকির হোসেন স্মৃতি সংস্থার সভাপতি, জিয়া পরিষদের নেতা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক বি এম নাগিব হোসেন বলেন, ‘কমিটি নিয়ে বাণিজ্যের কারণে দলের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে।’
এসব ব্যাপারে জানতে একাধিকবার মুঠোফোনে চেষ্টা করলেও জেলা বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম ফোন ধরেননি।