ব্যতিক্রমী বর্ণিল এক আয়োজনের মধ্য দিয়ে কানাডার ক্যালগেরির সাইমন ভেলি চার্ট মিলনায়তনে কবিতালোক এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত হল শরৎ উৎসব। তুষারাবৃত কানাডার কর্মময় একঘেঁয়েমি জীবন থেকে বেরিয়ে এসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা আনন্দ উৎসবে মেতেছিল অন্যরকম এক মিলন মেলায়।
বাংলার শরৎ যেন ঋতু বৈচিত্রের এক অপার বিস্ময়। বাংলার ঘাটে প্রান্তে এই ঋতু রানী এখন তার আপন মহিমায়। ঝড়ে যাওয়া গাছের পাতা, নীল আকাশ, শুভ্র মেঘের সারি আর শিউলি শেফালী ভোরের শিশিরে স্নাত হয়ে ঘাসের উপর বিছিয়ে থাকা ফুলের যেন বিনর্ম অঞ্জলীর। দূর প্রবাসে বসে এসব স্মৃতি মনে হতেই ভেসে উঠে বাংলায় এখন শরৎ।
শরৎ এলে শাপলা শালুকের ফুটে উঠা, কাশফুল সাথে মেঘ আর রোদের লুকোচুরির মধ্যে হঠাৎ বৃষ্টিতে প্রকৃতি যখন উন্মাতাল তখন কানাডার চিত্র পুরোই ভিন্ন। বছরের প্রায় আট মাসই বরফাচ্ছাদিত থাকলেও লোকজ ভাবনা, বাংলার প্রকৃতির ঐতিহ্য ও আনুষ্ঠানিকতায় শরৎ উৎসবে হৃদয় মন ভরে উঠেছিল প্রবাসী জীবনের আনন্দ জয়গানে। শিশু-কিশোর আর নারী পুরষের পদচারনায় বরণ করা হয় শরৎ উৎসবকে।
আবহমান বাংলার কৃষ্টি, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সত্তাকে তুলে ধরা হয় নতুন প্রজন্মের কাছে। নানা মাত্রিক আয়োজনের মধ্যে ছিল শরৎ কথন, আবৃত্তি, গান, বাঙ্গালির চিরাচরিত আড্ডা আর একে অন্যের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়।
বিপুল দর্শক সমন্বয়ে, জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের আয়োজক কবিতালোকের সভাপতি বায়াজিদ গালিব বলেন, কবিতালোক এবার একটু ভিন্নভাবে একটি সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করেছে। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে আমাদের ডাকে এবার সুদূর বাংলাদেশ থেকে বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল আমদের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন। কবিতালোক আপনাদের সাথে সবসময়ই থাকবে এবং নতুন কিছু উপহার দেবার চেষ্টা করবে।
কবিতালোকের প্রধান উপদেষ্টা মাহফুজুল হক মিনু বলেন, অনেক দিন পর কবিতালোক আবার আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও সুন্দর কিছু অনুষ্ঠান কবিতালোক উপহার দেবে এই আশা করি। সুস্থ কবিতা চর্চা, সুস্থ সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং বাংলা ভাষাকে আগলে রাখার ব্রত নিয়ে এগিয়ে যাবে কবিতালোক।
অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশ থেকে আগত বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল ।
আরও ছিলেন স্থানীয় শিল্পীরা। এর মধ্যে রয়েছেন সঙ্গীতশিল্পী খালিদা নাসরিন বানী এবং শুভাশীস চক্রবর্তী, বাচিক শিল্পী, জাহিদ হক , সালেহা আশরাফ কান্তা এবং শারমিন সুলতানা। তবলা সঙ্গীত করেন এডমন্টন থেকে আগত আনন্দ সাহা।
অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা ও পরিচালনায় ছিলেন কবিতালোকের সহ-সভাপতি খায়ের খোন্দকার রুবেল।
ভাদ্র আশ্বিনের পাকা তাল আর তালের সাথে আমন ধানের পিঠা পায়েস। গায়ের বধূর কাচা ঘরে ঘোমটা দিয়ে মাটির লেপন- ও আমার বাংলাদেশ, হয়ে উঠুক আরও সুন্দর আরও উন্নত-এমনটাই প্রত্যাশা ক্যালগেরিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের।
বিডি প্রতিদিন/কালাম