আমেরিকান এয়ারলাইন্সের ১৯ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অক্টোবর থেকে বরখাস্তের হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে পুনরায় শুরু করা হয়েছে করোনা-স্টিমুলাস বিল নিয়ে সমঝোতা বৈঠক। ডেমোক্র্যাটদের সাথে হোয়াইট হাউজের সমঝোতা বৈঠক পুনরায় শুরুর তথ্য গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন ট্রাম্পের চীফ অব স্টাফ মার্ক মেডোজ।
প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার (ডেমোক্র্যাট) ন্যান্সি পেলসীর সাথে ২৫ অগাস্ট তারা এ নিয়ে কথা বলেছেন বলেও উল্লেখ করেন মার্ক মেডোজ।
৩১ জুলাই করোনা স্টিমুলাস বিলের বেকার ভাতা প্রদানের মেয়াদ ফুরিয়ে গেছে। এরপর তা ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধির আরেকটি বিল পাশের প্রয়োজন হওয়া সত্ত্বেও রিপাবলিকানদের গড়িমসির কারণে তা সম্ভব হয়নি। তবে ১৫ মে ডেমোক্র্যাটরা স্টিমুলাস বিল প্রতিনিধি পরিষদে পাশ করেন। এরপর জুলাই অতিবাহিত হলেও রিপাবলিকানরা ইউএস সিনেটে কোনো বিল পাশ দূরের কথা উত্থাপনও করেনি।
রিপাবলিকানরা সপ্তাহে ২০০ ডলারের বেকার ভাতা প্রদানের একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করেন জুলাইয়ের শেষ দিকে। অপরদিকে, ডেমোক্র্যাটরা যে বিল পাশ করেছেন, সেখানে সপ্তাহে ৬০০ ডলার করেই প্রদানের কথা রয়েছে। এই অঙ্ক নিয়ে উভয় পক্ষ বিপরীত অবস্থানে থাকায় ৭ আগস্ট সেই সমঝোতা ভেস্তে যায়।
তবে ৮ আগস্ট প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজের ক্ষমতাবলে বিশেষ একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেন যে, বেকার ভাতার পরিমাণ সপ্তাহে ৪০০ ডলার করে দেওয়া হবে। তবে ১০০ ডলার দেবে দেশটির বিভিন্ন স্টেট। অবশিষ্ট ৩০০ ডলার আসবে ফেমা (ফেডারেল ইমার্জেন্সি এজেন্ট) থেকে। অর্থাৎ ঢাকডোল পিটিয়ে নির্বাহী আদেশ জারির কোনো সুফল এখন পর্যন্ত পায়নি বেকার ৩ কোটি আমেরিকান।
এ অবস্থায় নাজুক পরিস্থিতি বিরাজ করছে সর্বত্র। এয়ারলাইন্সসহ বেশ কয়েকটি সংস্থার জন্যে বিশেষ প্রণোদনা ও অনুদানের অঙ্গীকারও পূরণ করতে পারেনি ট্রাম্প প্রশাসন। এ অবস্থায় প্রকাশ্যে কর্মী ছাঁটাইয়ের হুমকি দেয় আমেরিকান্স এয়ারলাইন্স। আরও কয়েকটি এয়ারলাইন্সের একই ধরনের ঘোষণার আশঙ্কায় হোয়াইট হাউজ নড়েচড়ে উঠেছে।
ফলে করোনা স্টিমুলাস বিল নিয়ে আবারও আলোচনা শুরু হতে যাচ্ছে এবং শিগগিরই উভয়পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি সমাধান আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। আর্থিক কর্মকাণ্ডে প্রাণের সঞ্চার ঘটাতে স্টিমুলাস বিল পাশের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদরা।
বিশেষ করে বেকার ভাতা হিসেবে ফেডারেল থেকে সপ্তাহে কমপক্ষে ৫০০ ডলার এবং প্রত্যেকের জন্যে এককালীন ১২০০ ডলার করে প্রদানের জরুরি একটি ব্যবস্থা অবলম্বনে পরামর্শ দিয়েছেন উভয় পার্টির নীতি-নির্ধারকরা।
হোয়াইট হাউজের চীফ অব স্টাফ উল্লেখ করেছেন, স্পিকারের কাছে থেকে ইতিবাচক সাড়া মিলেছে। সেপ্টেম্বরের শুরুতেই আনুষ্ঠানিক আলোচনা হতে পারে। নভেম্বরের ৩ তারিখে জাতীয় নির্বাচনে স্টিমুলাস বিলের বড় একটি প্রভাব পড়বে ভোটারের মধ্যে-এমন মন্তব্য করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
সামনের নির্বাচনে সকলকেই ভোটারের কাছে যেতে হচ্ছে। অথচ ৩ কোটি আমেরিকান এখনও বেকার। তাদের দৈনন্দিন ব্যয়-নির্বাহ অসম্ভব হয়ে পড়েছে আগস্টের শুরু থেকেই। মার্চ থেকে লকডাউনে যাবার পর অনেকেই বাড়ি/এপার্টমেন্ট ভাড়া দিতে পারেননি। সেপ্টেম্বরে পর দেড় কোটি আমেরিকানকে উচ্ছেদের ভিকটিম হতে হবে বলেও সেনসাস ব্যুরো থেকে জানানো হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই