কানাডার ক্যালগেরিতে মুক্তিযুদ্ধের ৪ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার সি আর দত্ত স্মরণে 'মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর উত্তম সি আর দত্ত এবং প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ' শিরোনামে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশটির স্থানীয় সময় শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে এক ভার্চুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রবাস বাংলা ভয়েস-এর প্রধান সম্পাদক আহসান রাজিব বুলবুলের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন মুক্তিযোদ্ধা, বাংলাদেশের জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী, ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠীর ফকির আলমগীর, নিউইয়র্কের শিল্পী, লেখক, প্রকৌশলী ও কম্পিউটার বিজ্ঞানী জীবন বিশ্বাস, আলবার্টা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর সেলিম, আলবার্টা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি আবদুল্লাহ রফিক, আলবার্টা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ কাদির এবং উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষক মাহমুদ হাসান দিপু।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই সি আর দত্ত স্মরণে তার আত্মার প্রতি এক মিনিট নীরবতা পালন করে অনুষ্ঠান শুরু করেন প্রবাস বাংলা ভয়েস-এর প্রধান সম্পাদক আহসান রাজিব বুলবুল।
বক্তারা মহান মুক্তিযুদ্ধে সিআর দত্তের অনবদ্য ভূমিকা, বীরত্বের সাথে ৪ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার হিসেবে তার দায়িত্ব পালন এবং বীরত্বগাথা জীবনের স্মৃতিচারণ করেন।
বক্তারা বলেন, শুধু মহান মুক্তিযুদ্ধে নয়, ধর্মীয় সম্প্রীতির জগতে তিনি ছিলেন এক অনবদ্য উদাহরণ। মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব হয়ে তিনি আজীবন মানুষের হৃদয়ে থাকবেন। তার চলে যাওয়া জাতির জন্য মানবতার অগ্রগতির ক্ষেত্রে এক অপূরণীয় ক্ষতি।
সংগীত শিল্পী ফকির আলমগীর বলেন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক এবং একটি বিজ্ঞানভত্তিক বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে আমরা কাজ করে চলেছি। আমরা সংগ্রাম করে স্বাধীনতা এনেছি। এই সংগ্রামের ইতিহাস মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, আগামী প্রজন্মের কাছে সঠিকভাবে তুলে ধরতে হবে। শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় বাংলাদেশের মানুষের কাছে সি আর দত্ত আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
প্রকৌশল বিজ্ঞানী জীবন বিশ্বাস বলেন, বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্নকে ধারণ করে সি আর দত্ত তার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কাজ করে গেছেন। মুক্তিযুদ্ধে তার বীরত্বপূর্ণ অবদানের কথা বাংলাদেশের মানুষ স্মরণ রাখবে।
আলবার্টা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি আব্দুল্লা রফিক বলেন, বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ সৈনিক সি আর দত্তের মৃত্যুতে জাতি একজন প্রগতিশীল, মুক্ত চিন্তার ধারককে হারিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের ৪ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার হিসেবে যুদ্ধে তার ভূমিকা ছিল অনন্য। মুক্তিযুদ্ধে তার সাহসী নেতৃত্বের জন্য বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত করা হয়। তার জীবনগাঁথা নতুন প্রজন্মের জন্য পাথেয় হয়ে থাকবে।
স্বাধীনতা যুদ্ধের অকুতোভয় এই যোদ্ধার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আলবার্টা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহ-সভাপতি প্রকৌশলী মোহাম্মদ কাদির বলেন, মুক্তিযুদ্ধে প্রয়াত সি আর দত্তের অসামান্য অবদান দেশ ও জাতি শ্রদ্ধার সঙ্গে চিরদিন স্মরণ রাখবে। তার প্রত্যাশিত অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই এগিয়ে যাবে, এমনটাই আমার বিশ্বাস।
আলবার্টা আওয়ামী লীগ সভাপতি ড. জাফর সেলীম বলেন, সকল শোককে শক্তিতে রূপান্তরের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। সি আর দত্তের কর্ম ও জীবন আমাদের সকলের জন্য হবে নতুন এক অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ।
উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ ও সমাজতাত্ত্বিক মাহমুদ হাসান দিপু বলেন, মুক্তিযুদ্ধের কিংবদন্তী মেজর জেনারেল চিত্তরঞ্জন দত্ত ছিলেন আজীবনের সংগ্রামী সেনানী, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তার একাত্তরের বীরত্বগাথা ইতিহাস যেমন পরবর্তী প্রজন্মের জন্য শ্রদ্ধার সাথে স্মরণীয় হতে পারে, তেমনি ৭৫ পরবর্তী সময়ে জাতির জনকের স্বপ্নের ঠিকানা জাতীয় চার মূলনীতি তথা সুখী, সমৃদ্ধ, বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই