করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুর সংখ্যা শুক্রবার ৭ লাখ ছাড়ালো। এদিন রাত ১০টা পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ৭ লাখ ৪২৯ এবং আক্রান্তের সংখ্যা ৪ কোটি ৩৫ লাখ ৮৪ হাজার ১২৫। করোনার টিকা নিয়ে কোন সংকট/সমস্যা না থাকা সত্বেও মৃত্যুর হার ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে না কেন-এ নিয়ে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে মৃত্যুবরণকারিদের সিংহভাগই টিকা নেয়নি বলেও স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনে উল্লেখ করা হয়। যেসব দেশে টিকার সরবরাহ খুবই স্বল্প, সেসব দেশের চেয়েও যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুর হার উদ্বেগজনক। চলতি গ্রীষ্মেও করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমানো দূরের কথা, নিয়ন্ত্রণ করাও সম্ভব হয়নি, যার ফলে শত বছর আগে অর্থাৎ ১৯১৮ এবং ১৯১৯ সালে ফ্লু মহামারিতে মৃত্যুর সংখ্যাকেও স্নান করে দিল। সে সময় মোট ৬ লাখ ৭৫ হাজার আমেরিকানের প্রাণ ঝরেছে।
ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের চিকিৎসা-বিজ্ঞানী হাওয়ার্ড মারকেল এ প্রসঙ্গে বলেন, ডেল্টার সংক্রমণ চরমে উঠেছে টিকা না নেয়া লোকজনের মধ্যে। টিকা নিলে এমন ভয়ংকর অবস্থা অবলোকন করতে হতো না।
নিউইয়র্ক টাইমসের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, গত সাড়ে তিন মাসে যারা মারা গেছে, তাদের সিংহভাগই আমেরিকার দক্ষিণের স্টেটসমূহের বাসিন্দা ছিলেন। তারা টিকা নিতে এখনো অনীহা প্রকাশ করছেন। ফ্লোরিডা, মিসিসিপি, লুইজিয়ানা এবং আরকানসাস স্টেটে সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার কোনভাবেই কমানো যাচ্ছে না। বিশ্বাস না হলেও সত্য যে, এসব অঞ্চলে মৃত্যুবরণকারিদের প্রায় সকলেই তরুণ বয়সের। গত আগস্টে ৫৫ বছরের কম বয়সীরাই বেশি মারা গেছেন। দক্ষিণ, প্যাসিফিক নর্থওয়েস্ট এবং মধ্য-পশ্চিমের কোন কোন এলাকায় মধ্য জুন থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এক লাখ আমেরিকানের মৃত্যু হয়-যখন ১২ বছরের অধিক বয়সী সকলের জন্যেই টিকা প্রদানের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
সিডিসি সূত্রে জানা গেছে, মৃত্যুবরণকারি উপরোক্ত এক লাখের মধ্যে টিকা নিয়েছিলেন মাত্র ২৯০০ জন। গত মাসে এক গবেষণা পর্যবেক্ষণে সিডিসি জানতে পারে যে, টিকা নিলে মৃত্যুর ঝুঁকি অনেক কমে এবং ডেল্টাতে আক্রান্ত হলেও কাউকেই হাসপাতালে যেতে হয়নি। সিডিসির এই গবেষণায় আরো নিশ্চিত হওয়া যায়, টিকা নেয়নি এমন রোগীর মৃত্যুর ঝুঁকি টিকা নেয়াদের চেয়ে ১০ গুণ বেশি। নিউইয়র্ক সিটি, সিয়াটল, লসএঞ্জেলেসসহ সবচেয়ে বেশি মানুষ মৃত্যুবরণকারি ১০ স্টেটের ডাটা পর্যালোচনার পর এমন তথ্য পেয়েছে সিডিসি।
জানা গেছে, সেপ্টেম্বরের শেষার্ধের প্রতিদিনই গড়ে দুই হাজারের বেশি আমেরিকানের মৃত্যু হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মার্চ এপ্রিল মে জুন জুলাই মাসে মৃত্যুর সংখ্যা মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে ছিল।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন