ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কে কেমন করবেন কমলা হ্যারিস। সঞ্চালকের নির্দেশনা অবজ্ঞা করে কমলাকেও লাগাতারভাবে আক্রমণ করার মানসিকতা ট্রাম্প পরিহার করেন কিনা তা নিয়ে রয়েছে কৌতুহল। কারণ, জো বাইডেনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বিতর্কে ট্রাম্পকে থামাতে সক্ষম হননি সিএনএন’র হোস্ট।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ায় ন্যাশনাল ইন্সটিটিউশনাল সেন্টারের এই বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে এবিসি টিভির উদ্যোগে।
প্রথম বিতর্কের আয়োজন করেছিল সিএনএন টিভি আটলান্টাস্থ তার নিজস্ব অডিটরিয়ামে। সেখানে ছিলেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে জো বাইডেন। নানাবিধ কারণে বাইডেন সরে দাঁড়িয়েছেন, তাই কমলা হ্যারিসের মুখোমুখি হতে হচ্ছে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সঙ্গে এটাই কমলার প্রথম ও শেষ বিতর্ক। কারণ, ৫ নভেম্বর নির্বাচনের আগে আর কোন বিতর্কের সম্ভাবনা নেই। ফলে নিজের ভোটারকে সন্তুষ্ট করার পাশাপাশি সিদ্ধান্তহীন ভোটারকে পক্ষে আনতে এই বিতর্কের ভূমিকা অপরিসীম বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। ইতিমধ্যেই ঘোষিত নির্বাচনী অঙ্গীকারের ব্যাখাও দিতে হবে সবিস্তারে। এছাড়া অপ্রত্যাশিত কিছু ইস্যুতেও কথা বলতে হবে অত্যন্ত গোছালোভাবে।উল্লেখ্য, ট্রাম্প এবং কমলা এই প্রথম মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন। একজন আরেকজনকে কীভাবে রিসিভ করবেন বিতর্কের মঞ্চে সেটিও প্রভাব ফেলবে দল-নিরপেক্ষ ভোটারের ওপর। উভয়ে হোয়াইট হাউজে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতায় অভিজ্ঞ। তবে ট্রাম্পের মত কমলার একক কৃতিত্ব কতটা ছিল বাইডেনের পাশাপাশি সেটি গুরুত্ব পাবে অধিক। ট্রাম্পের কৃতিত্ব কতটা ছিল প্রথম টার্মে-তা নতুন ভোটারের অনেকেই জানেন না। তাই এবারের বিতর্কের পারফর্ম্যান্স এবং যুক্তির আলোকে ব্যাখ্যা প্রদানের ব্যাপারটি গুরুত্ব পাবে। এক্ষেত্রে কমলা যে অধিক পারদর্শিতা প্রদর্শনে সক্ষম হবেন-এটা প্রায় নিশ্চিত। কারণ, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনের সাথী রয়েছেন কমলা এখনো।
নানা ইস্যুতে কমলাকে ঘায়েলের চেষ্টা করা হয়েছে এবং হচ্ছে কিন্তু কখনোই উত্তেজিত হয়ে অসংলগ্ন জবাব দিতে দেখা যায়নি কমলাকে। পক্ষান্তরে কথায় কথায় উত্তেজিত হবার অভ্যাস রয়েছে ট্রাম্পের। শুধু তাই নয় প্রতিপক্ষকে আক্রমণের অভিপ্রায়ে অসংলগ্ন মন্তব্য ছুড়ে দিতেও দ্বিধা করেন না ট্রাম্প। শুধু তাই নয়, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় এবং হোয়াইট হাউস ত্যাগের পর বহুবার প্রতিষ্ঠিত অনেক সত্যকে অস্বীকারের ঔদ্ধত্ব দেখিয়েছেন ট্রাম্প। অসত্য তথ্য উপস্থাপনেও জুড়ি নেই ট্রাম্পের। এমন অভ্যাস যদি এই বিতর্কেও অব্যাহত থাকে তাহলে পোয়াবারো হবে কমলার-এমন মন্তব্য সুধীজনের।
তবে গাজা পরিস্থিতিতে ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে কমলার ভূমিকা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ডেমোক্র্যাটদের মনোভাবের প্রকাশ ঘটাতে হবে এবং নির্বাচিত হলে কমলা কী করবেন সেটিও উপস্থাপন করতে হবে। ট্রাম্পের অবশ্য যুদ্ধ লাগানোর কোন ইতিহাস নেই। তবে আন্তর্জাতিক মিত্রদের সাথে বৈরি সম্পর্ক তৈরির উদাহরণ রয়েছে ট্রাম্পের। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ট্রাম্প আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক অটুট রাখতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেবেন সে সব বিবৃত করতে হবে এ বিতর্কে এবং এ বিষয়টি ট্রাম্পের ভোট ব্যাংকে বিস্তর প্রভাব রাখবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত