শিরোনাম
সোমবার, ২৯ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

আম কাহিনি

ইকবাল খন্দকার

আম কাহিনি

 আইডিয়া ও ডায়ালগ : তানভীর ► কার্টুন : কাওছার মাহমুদ

আমার এক বড় ভাই বললেন, তুই তো জানিস, আমি একটু সংগীতচর্চা করি। কিন্তু এই সিজনে চর্চাটা করা বোধহয় ঠিক হবে না। কারণ, বাড়তি খরচ। এমনিতেই জিনিসপত্রের দাম বেশি। খরচের অভাব নেই। সেখানে যদি আবার বাড়তি খরচ যোগ হয়, তাহলে উপায় আছে? আমি বললাম, একদম উপায় নেই। কিন্তু সংগীতচর্চা করলে বাড়তি খরচটা কেন হবে, সেটা তো বুঝতে পারছি না। বড়ভাই বললেন, খুলে না বললে না বোঝাটাই স্বাভাবিক। ঠিক আছে, খুলে বলছি। সংগীতচর্চা করতে তো অনেক বাদ্যযন্ত্রই লাগে। তবে একা একা যখন চর্চাটা করা হয়, তখন লাগে মাত্র একটা যন্ত্র। আর এই যন্ত্রটা থাকে তোর ভাবির ড্রেসিং টেবিলটার পাশে একটা জায়গা আছে, সেখানে। তো আমি যখন সংগীতচর্চা করার জন্য বসি, তখন তোর ভাবিকে বলি যন্ত্রটা দেওয়ার জন্য। আর তাতেই নাকি তার আম খাওয়ার কথা মনে পড়ে যায়। সে আমাকে বাজারে পাঠায় আম কিনে আনার জন্য। এ জন্য আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যতদিন আমের সিজন থাকবে, ততদিন সংগীতচর্চা করব না। এতে যন্ত্রটার নামও উচ্চারণ করতে হবে না, তোর ভাবিরও আম খাওয়ার কথা মনে পড়বে না। মানে আম খাওয়ার ইচ্ছে হবে না। আমি কিছুক্ষণ টাসকি মেরে বসে থেকে বললাম, এমন কী বাদ্যযন্ত্র, যেটার নাম শুনলে ভাবির আম খাওয়ার কথা মনে পড়ে বা আমার খাওয়ার ইচ্ছে হয়? বড় ভাই বললেন, হারমোনিয়াম। যন্ত্রটার নামের শেষে কেমন আম-আম একটা বিষয় আছে না? আমার এক ছোটভাই বলল, ফলের এত শক্তি, আগে জানা ছিল না। এমনিতে মানুষে মানুষে কত বিভেদ। অথচ একটা ফল মানুষকে এক কাতারে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, সেই ফলটার নাম আম। আমি বললাম, কীভাবে? ছোটভাই বলল, প্রশ্ন না করে আশপাশে একটু খোঁজ নেন। দেখবেন অনলাইনে সবাই আমের বিজনেস শুরু করেছে। কোনো ভেদাভেদ নেই। এতে অবশ্য আমার এক প্রতিবেশীর আত্মীয়ের কাছে বড় সুসংবাদ এনে দিয়েছে। প্রতিবেশী বললেন, অনেকদিন ধরেই শ্যালিকার জন্য ভালো একটা পাত্র খুঁজছিলাম। কিন্তু শ্যালিকা কাউকেই পছন্দ করছিল না। কারণ, তার নিজের পছন্দের একজন ছিল। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, ছেলেটা বেকার। তাই বিয়ে হচ্ছিল না। অবশেষে গতকাল বিয়েটা হলো। আমি বললাম, নিশ্চয়ই ছেলেটা চাকরি পেয়েছে? প্রতিবেশী বললেন, জি না। সে ফেসবুকে আম বিক্রি করে নিজের পায়ে প্রায় দাঁড়িয়ে গেছে। তাকে আর বেকার বলা যায় না।

আমার এক বন্ধু বলল, এই যে সবাই বলছে তাদেরটা নাকি ফরমালিনমুক্ত আম, এখন কার কথা বিশ্বাস করব, কারটা অবিশ্বাস করব? আদৌ কি সবারটা ফরমালিনমুক্ত? এবার পাশ থেকে একজন বলল, আপনার পরিচিতজনদের মধ্যে যে সবচেয়ে কৃপণ, সে যদি আমের ব্যবসায় যুক্ত হয়ে থাকে, তাহলে তার কাছ থেকে নির্দ্বিধায় আম কিনতে পারেন। তারটা ফরমালিনমুক্ত। আমি জানতে চাইলাম, এত কনফার্ম কীভাবে হচ্ছেন? লোকটা বলল, ভাইরে কোনো কৃপণ ব্যক্তি আমে ফরমালিন মেশাবে না। কারণ, ফরমালিনের ভালোই দাম। কৃপণ ব্যক্তির অত ঠেকা পড়েনি যে বাড়তি খরচ করতে যাবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর