আমার এক প্রতিবেশী বললেন, যানজটের সঙ্গে পারা যাচ্ছে না। যতই এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি, ততই ঘাড়ে এসে পড়ে। আমি বললাম, যানজট কি ঘাড়ে পড়ার জিনিস? যানজট হচ্ছে রাস্তাঘাটের সমস্যা। প্রতিবেশী আমার কথায় খানিকটা বিরক্ত হলেন। বললেন, কথায় কথায় ভুল ধরার অভ্যাসটা আপনার গেল না। আপনার মতো লোকের শাস্তি হওয়া উচিত। শাস্তিটা কী জানেন? এক ঘণ্টা জ্যামে আটকে রাখতে হবে। এক ঘণ্টা জ্যামে আটকে রাখতে পারলে আশা করি এক বছর কারাগারে শাস্তি পেয়ে যাবেন। আমি বললাম, এই শাস্তি আমি রোজই পাচ্ছি। অতএব নতুন করে এ একই শাস্তি কার্যকরের কোনো প্রয়োজন আছে কি? প্রতিবেশী বললেন, যেহেতু জ্যামের শাস্তি কম বেশি আপনি অলরেডি ভোগ করে ফেলেছেন। এখন বলেন এই যে অসহনীয় যানজট, এই অসহনীয় যানজটকে সহনীয় পর্যায়ে আনা যায় কীভাবে। আমি বললাম, একজন বিখ্যাত কবি একটা কথা বলেছেন। যদি কবির কথাটা ঠিকঠাক মানতে পারেন, তাহলে যানজট সহনীয় পর্যায়ে আনা সম্ভব। এমনকি ঢাকা শহরেও বসবাস করা সম্ভব। প্রতিবেশী অতি উৎসাহী হয়ে বললেন, কবি কোন কথাটা বলেছেন? না, মানে কবির কথাটা মানলে যদি যানজট সহনীয় পর্যায়ে চলে আসে, তাহলে একবার কেন, কবির কথা আমি একশবার মানতে রাজি। আমি বললাম, কবি বলেছেন, যে সহে, সে রহে। আমার কথা শুনে প্রতিবেশী বিরক্ত হয়ে কিছু একটা বলতে চাইলে আমি তাকে থামিয়ে দিলাম এবং বললাম, কবির কথার মর্মার্থ হচ্ছে, যানজটটা আপনাকে সহ্য করতে হবে। যদি সহ্য করতে পারেন, মানে সহিতে পারেন, তাহলে রহিতে পারবেন। কোথায় রহিতে পারবেন? ঢাকা শহরে রহিতে পারবেন। নইলে শহর ছেড়ে গ্রামে চলে যেতে হবে। গ্রামে কোনো যানজট নেই। আমার কথায় প্রতিবেশীর বিরক্তি এবার বিপৎসীমায় উঠে গেল। অর্থাৎ তার চোখ-মুখের এক্সপ্রেশন দেখে মনে হলো ঘুসিটুসি মারবেন। তাই আমি একটু পেছনে সরে দাঁড়ালাম। যেহেতু সেফটি ফার্স্ট। তারপর বললাম, যানজটের বিষয়টা অনেকটা আপেক্ষিক। মানে যানজট মনে করলেই যানজট, মনে না করলে কিছু না। প্রতিবেশী বললেন, পুরো ঢাকা শহর অচল হয়ে যাচ্ছে যানজটে, আর আপনি বলছেন যানজট মনে না করলে কিছু না? আপনি কি ঢাকা শহরে থাকেন? নাকি আফ্রিকার জঙ্গলে থাকেন? ঢাকা শহরে থাকলে তো এসব উদ্ভট কথা বলার কথা না। আমি এবার হেসে বললাম, ভাইরে, উদ্ভট কথা না বলে উপায় আছে? রোজই অফিসে যাই ঘণ্টাখানেক দেরি করি। আর বস আমাকে ঝাড়ে আরও ঘণ্টাখানেক। এ দ্বিমুখী ঝড়ে কথাবার্তার ব্যালান্স থাকে? প্রতিবেশীর হাসি এবার দেখে কে! দীর্ঘক্ষণ পর যখন তার হাসি থামল, তখন আমি তার এ হাসির কারণ জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, ওপরে ওপরে যতই ‘ব্যাপার না’ টাইপের ভাব ধরেন, ভিতরে ভিতরে ঠিকই যানজটের যন্ত্রণা সহ্য করে যাচ্ছেন। কেন ভাই, এত সহ্য কেন করতে হবে। চলেন পদক্ষেপ নিই। আমি মিনমিনিয়ে বললাম, যানজট নিরসনে আপনি আমাকে পদক্ষেপ নিতে বলছেন? প্রতিবেশী বললেন, জি, বলছি। তো কী হয়েছে? আমি এবার অট্টহাসি দিয়ে বললাম, না, কিছু হয়নি। আমার পদোন্নতি হয়েছে বলতে পারেন। প্রতিবেশী অবাক হলেন, আপনার প্রমোশন হয়েছে মানে? কীভাবে? কখন? আমি বললাম, এই যে, এখন। আর সেটা আপনার কথার সুবাদে। প্রতিবেশী বললেন, আমি এমন কী বললাম, যার কারণে আপনার প্রমোশন হয়ে গেল? আমি বললাম, আপনি আমাকে বললেন না যানজট নিরসনে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য? এতেই আমার প্রমোশন হয়ে গেছে। আমি আমজনতা থেকে হয়ে গেছি ‘কর্তৃপক্ষ’। জানেন তো, যানজট নিরসনে পদক্ষেপ নিতে পারে কেবল কর্তৃপক্ষই।
শিরোনাম
- আরাকান আর্মির কাছে বন্দি ১০৪ জন জেলে: বিজিবি সেক্টর কমান্ডার
- বগুড়ায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার উৎপাদন, স্নিগ্ধ বেকারিকে জরিমানা
- কুমিল্লা নগরীতে ভুতুড়ে বিলে দিশেহারা গ্রাহক
- স্ত্রীর পদবি গ্রহণ করতে পারবেন দক্ষিণ আফ্রিকার পুরুষরা
- ফাজিল স্নাতকের ফল প্রকাশ, পাশের হার ৯৫.০৫
- বগুড়ায় টাইফয়েড টিকার সমন্বয় সভা
- শেরপুরের বিভিন্ন কলেজে একাদশ শ্রেণির ওরিয়েন্টেশন ক্লাস অনুষ্ঠিত
- যমুনা অভিমুখে শিক্ষকদের মিছিল, পুলিশের জলকামান-সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ
- ভারতে বিতর্কিত ওয়াকফ সংশোধনী আইনের কয়েকটি ধারা স্থগিত
- শুল্ক না কমালে ভারতের জন্য ব্যবসা করা কঠিন হবে, যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারি
- চুয়াডাঙ্গায় বৃদ্ধার অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার
- সোনালী আঁশে ফিরছে সুদিন, খুশি দিনাজপুরের কৃষকরা
- নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা সহ্য করা হবে না: খায়ের ভূঁইয়া
- শেখ হাসিনার মামলায় আর দু’একজনের সাক্ষ্য নেয়া হবে: চিফ প্রসিকিউটর
- পারমাণবিক অস্ত্রই মার্কিন হুমকি থেকে রক্ষার অবশ্যম্ভাবী বিকল্প: উত্তর কোরিয়া
- গাইবান্ধায় বাসের ধাক্কায় শ্রমিকের মৃত্যু, আহত তিন
- নীলফামারীতে আধুনিক ট্রাক টার্মিনাল ও নিরাপদ বাইপাস সড়কের দাবি
- ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৬৩৬
- আ. লীগের প্রেতাত্মারা ফেব্রুয়ারির নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে : ফারুক
- প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার কারণে সিঙ্গাপুর অনুকরণীয় দেশ : বাণিজ্য উপদেষ্টা
যানজটের আলাপ
ইকবাল খন্দকার
প্রিন্ট ভার্সন

টপিক
সর্বশেষ খবর