শনিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা
ছিলেন হোটেল বয়

মোবাইল এক্সেসরিজ তৈরির প্রতিষ্ঠান টগরের

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

মোবাইল এক্সেসরিজ তৈরির প্রতিষ্ঠান টগরের

অনেকটা রূপকথার গল্পের মতো। পরিবারের হাল ধরতে যে ছেলে হোটেল বয়ের কাজ করত, সে এখন মোবাইল এক্সেসরিজ তৈরি কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা। না এটি ব্রিটেন বা আমেরিকার কোনো তরুণের গল্প নয়। বাংলাদেশের কুমিল্লার এক তরুণের জীবনের বাঁকবদলের গল্প। পরিশ্রম আর চেষ্টা তাকে দিয়েছে সফলতা। তিনি আবুল কালাম হাসান টগর। এক দশক ধরে তার হালিমা টেলিকম কোম্পানি দেশে মোবাইল ফোন এক্সেসরিজ উৎপাদনে নেতৃত্ব দিচ্ছে। তার মধ্যে অন্যতম চার্জার, ব্যাটারি, পাওয়ার ব্যাংক। সম্প্রতি তিনি মোবাইল ফোন বাজারে এনেছেন। এসব উৎপাদন হচ্ছে কুমিল্লা শহরতলির চাঁন্দপুর এলাকায়। তার কারখানায় কাজ করেন হাজারের মতো শ্রমিক। তাদের ৯০ ভাগ নারী। যাদের অধিকাংশই নিরক্ষর। সেই নারীদের হাতে-কলমে শিখিয়ে তিনি স্বাবলম্বী করেছেন।

জানা গেছে, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কৈয়নী টগরদের পৈতৃক বাড়ি। বাবা মো. সিরাজুল হক বাড়ি করেন নগরীর মোগলটুলীতে। তারা তিন ভাই এক বোন। তিনি মেজ। বাবা ছিলেন ঠিকাদার। তিনি সন্তানদের ছোট রেখে মারা যান। টগরের বয়স তখন পাঁচ বছর। তাদের সচ্ছল পরিবারে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। ১৯৯৮ সালের দিকে তিনি ২০ ঊর্ধ্ব তরুণ। বাড়ি থেকে বেরিয়ে কাজ নেন সিরাজগঞ্জের একটি হোটেলে। সেখানে জমানো ৩ হাজার টাকা নিয়ে ঢাকায় আসেন। ঢাকায় তিনি বিভিন্ন দোকানে গিয়ে একটি ফোন কোম্পানির কার্ড বিক্রি শুরু করেন। সেখানে পরিচয় হয় ওই কোম্পানির এক কর্মকর্তার সঙ্গে। তিনি তাকে কুমিল্লা ফিরে গিয়ে কোম্পানির সাব-ডিলার হতে বলেন। টগর স্বজনদের থেকে টাকা নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। সাইকেল চালিয়ে দোকানে পণ্য পৌঁছে দিতেন। সে সময় অনেক ব্যবসায়ী বেশি দামে পণ্য বিক্রি করতেন। তিনি ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতেন। এতে তার প্রতি মানুষের আস্থা বেড়ে যায়। তিনি ওই কোম্পানির ডিস্ট্রিবিউটর হন। ফোনের সিম ব্যবসা করতে গিয়ে দেখলেন ফোন ব্যবসায়ীরা মোবাইল ফোন এক্সেসরিজ এনে দেওয়ার দাবি জানান। তিনি ঢাকা থেকে মোবাইল ফোন এক্সেসরিজ এনে তাদের দিতে থাকেন। এক সময় তার মাথায় আসে বড় কিছু করার। সে লক্ষ্যে ২০১০ সালে চীন যান। সেখানে গিয়ে মোবাইল ফোন এক্সেসরিজ তৈরির প্রশিক্ষণ নেন। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তিনি এখন সফল উদ্যোক্তা।

সর্বশেষ খবর