ছাগলনাইয়ার চাঁদগাজীর বাসিন্দা মোশাররফ হোসেন। তিনি শ্রবণ প্রতিবন্ধী। করেছেন স্ট্রোক। বড় কোনো হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর মতো সক্ষমতা নেই তার। ভর্তি করা হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে। দীর্ঘদিন চট্টগ্রামে থেকে চিকিৎসা করা দরকার। কিন্তু তার চট্টগ্রামে তেমন কেউ নেই। পরে খোঁজ পেয়ে তিনি অবস্থান করেন অতিথিশালায়। সেখানে থেকে তিনি চিকিৎসা গ্রহণ করেন। বাড়ি ফেরেন সুস্থ হয়ে।
এভাবে কেবল মোশাররফ নন; অতিথিশালায় বিনামূল্যে থেকে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা। অসহায়, সুবিধাবঞ্চিত, আর্থিকভাবে অসচ্ছল, চট্টগ্রাম শহরে থাকার ব্যবস্থা নেই- এমন রোগীদের বিনামূল্যে থাকা এবং খাবারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এ অতিথিশালায়। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও রোগীর স্বজনরা সাময়িকভাবে থাকতে পারছেন এখানে। চট্টগ্রাম নগরীর প্রবর্তক মোড় এলাকার আফমি প্লাজার পাশে রূপনগর কমিউনিটি সেন্টারের বিপরীতে প্রবর্তক পল্লী আবাসিক এলাকার একটি ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় গড়ে তোলা হয়েছে অতিথিশালা। এখানে দেওয়া হয় চিকিৎসা-সংক্রান্ত পরামর্শ। ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক মিজানুর রহমান মজুমদারের পৃষ্ঠপোষকতা এবং অজ্ঞাত রোগীর স্বজনখ্যাত সাইফুল ইসলাম নেসারের সহযোগিতায় এটি প্রতিষ্ঠা হয়। চলতি বছর যাত্রা করা অতিথিশালায় ইতোমধ্যে ৩৫৫ জন রোগী ও স্বজন সেবা নিয়েছেন। তবে অতিথিশালায় ফেনীর ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী, পরশুরামের বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের মানুষদের বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
মিজানুর রহমান মজুমদার বলেন, চমেক হাসপাতালে চট্টগ্রামের আশপাশের রোগীরা সেবা নিতে আসেন। অনেক রোগীকে দিনের পর দিন থাকতে হয়। অনেককে ফলোআপ চিকিৎসায় থাকতে হয়। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত অথবা জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীদের দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিতে হয়। এর মধ্যে অনেকের থাকার ব্যবস্থা নেই। অনেককে আবার দীর্ঘদিন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয়। এতে অনেক রোগীর পরিবার আর্থিক সংকটে পড়েন। অনেক রোগীর স্বজনকে আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে হাসপাতালের বারান্দায় রাত যাপন করতে হয়। এ সময় রোগীর মানিব্যাগ, মোবাইল চুরি হলে তারা আরও বেশি অসহায় হয়ে পড়েন। এসব বিষয় চিন্তা করে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমধর্মী সেবা অথিতিশালা চালু করা হয়েছে।