শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ফুল-জলাশয়ে বর্ণিল ডিসি পার্ক

অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে খুশি স্থানীয়রা। তারাই পার্কটির নাম দেয় ডিসি পার্ক। লাগানো হয়েছে প্রায় ১২২ প্রজাতির ফুলের গাছ। লাগানো হবে আরও ফুল-ফলের গাছ।

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

ফুল-জলাশয়ে বর্ণিল ডিসি পার্ক

বিস্তীর্ণ জলরাশি। পাশেই ফুলের রাজ্য। বাহারি ফুল ছড়াচ্ছে মন মাতানো সুগন্ধি। রাঙিয়ে তুলছে হৃদয়। শোভা ছড়াচ্ছে গাঁদা, লাল, নীল, হলুদ বর্ণের ডালিয়া ফুল। সঙ্গে আছে বর্ণিল মেরিগোল্ড, চন্দ্রমল্লিকার মতো রং-বেরঙের ফুল। ফুলের সুগন্ধির সঙ্গে জলরাশির নয়নাভিরাম দৃশ্য যারপর নাই আন্দোলিত করছে সবাইকে। ফুল আর জলাশয়ের সমন্বয়ে ‘ডিসি পার্ক’ এক নান্দনিক ও বর্ণিল বিনোদন স্পটে পরিণত হয়েছে; যা পড়ন্ত বিকালে দর্শনার্থীদের কাছে এক অপার আনন্দের জায়গা।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুন্ড সলিমপুর ফৌজদারহাট-সংযোগ সড়কের কাছেই প্রায় ১৯৯ একর জায়গায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তৈরি হয় ডিসি পার্ক। এটি এখন চট্টগ্রামবাসীর অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র। ফুলের সমারোহে উচ্ছ্বসিত পর্যটকরা। চলতি বছরের শুরুতে এটি উদ্বোধন করা হয়।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জায়গাগুলো ছিল বেদখল। সেখানে চলত নানা অনিয়ম। বসত মদ-গাঁজার আসর। ছিল মাদকের স্বর্গরাজ্য। ঘটত নানা অঘটন। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে জায়গাটি উদ্ধার করে। সেখানেই তৈরি করা হয় ‘ডিসি পার্ক নামে একটি নান্দনিক বিনোদন কেন্দ্র। এখন সেখানে প্রতিদিনই সমারোহ ঘটে নানা শ্রেণি-পেশার ভ্রমণপ্রেমী মানুষের।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, এক সময়ের মাদকের আখড়া এখন ফুলের রাজ্য। এটি এখন চট্টগ্রামের মানুষের জনপ্রিয় বিনোদন কেন্দ্র। মানুষ এখন এখানে এসে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন। সঙ্গে এলাকাও শান্তিপ্রিয় হয়ে গেছে। আমরা এই পার্ক ঘিরে একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করব। এখানে নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর, যুুবক, তরুণ, বৃদ্ধ- সব বয়সী ও শ্রেণি-পেশার মানুষের বিনোদনের জন্য উপযুক্ত করে সাজানো হচ্ছে। রঙিন ফুলের সঙ্গে এখানে গড়ে তোলা হবে ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট, সংরক্ষিত বন, সাইক্লিং ট্র্যাক, বিলুপ্তপ্রায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রসহ বন্যপ্রাণীদের আবাসস্থল। থাকবে কায়াকিংয়ের ব্যবস্থা এবং সাম্পান। শিশুদের জন্য কিডস জোন, থাকবে মুক্ত আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর ব্যবস্থা এবং আন্তর্জাতিক কনভেনশন হল। বিনোদন ও অবসর সময় কাটানোর জন্য এখানকার দুই জলাশয়ের মাঝখানে নির্মাণ করা হবে ওয়াকওয়ে, কটেজ। থাকবে লাইটিংয়ের ব্যবস্থা। এখানে ব্যবস্থা করা হবে নৌকাবাইচ ও মাছ শিকারের।

জানা যায়, অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে খুশি স্থানীয়রা। ফলে তারাই পার্কটির নাম দেয় ডিসি পার্ক। লাগানো হয়েছে প্রায় ১২২ প্রজাতির ফুলের গাছ। আগামীতে লাগানো হবে আরও ফুল-ফলের গাছ। উদ্বোধনের পরই গত ১০ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সেখানে প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হয় ফুল উৎসব। উৎসবে প্রতিদিন গড়ে ৬০ হাজার দর্শনার্থীর সমাগম হয়। কম সময়ের মধ্যে এটি চট্টগ্রামের মানুষের কাছে হয়ে ওঠে জনপ্রিয় বিনোদন কেন্দ্র।

সর্বশেষ খবর