প্যারিস অলিম্পিকে আলজেরিয়ান বক্সার ইমান কেলিফ এবং তাইওয়ানের লিন ইউ-টিংয়ের পদক গ্রহণের ছবি ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিয়েছে। তবে এই দুই নারী বক্সারের অলিম্পিক অংশগ্রহণ নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি) গত বছরের নারী বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে অযোগ্য ঘোষিত হওয়া সত্ত্বেও তাদের প্যারিসে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়েছে।
লিঙ্গ নির্ধারণের জটিলতা এবং জেনেটিক্সের প্রভাব নিয়ে বিজ্ঞানীরা ক্রমাগত গবেষণা করছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, লিঙ্গ নির্ধারণে ক্রোমোসোমের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হলেও, কিছু ক্ষেত্রে জেনেটিক বৈচিত্র্যের কারণে সুনির্দিষ্টভাবে লিঙ্গ নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। যাদের লিঙ্গ বিকাশের ক্ষেত্রে কিছু বৈচিত্র্য রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে Y ক্রোমোসোম থাকা মানেই যে তারা পুরুষ, এটি সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিত করা যায় না।
কেলিফ এবং লিনের বক্সিংয়ে অংশগ্রহণ নিয়ে বিতর্কের কেন্দ্রে থাকা বিষয়টি হলো, তারা কি XY ক্রোমোসোম বহন করছে। নাকি তাদের টেস্টোস্টেরন মাত্রা বেশি? যদিও তাদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, তারা ‘নারী হিসেবেই জন্মেছে এবং নারী হিসেবেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে।’ তবে অনেকেই মনে করছেন যে, তাদের মধ্যে ডিএসডি (লিঙ্গ বিকাশের পার্থক্য) থাকতে পারে। ডিএসডি থাকা ব্যক্তিরা কিছু ক্ষেত্রে পুরুষের কিছু বৈশিষ্ট্য থাকলেও, তারা সাধারণত নারী হিসেবেই নিজেদের পরিচিতি লাভ করে।
কেলিফ এবং লিনের লিঙ্গ নির্ধারণ পরীক্ষার ফলাফল সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি আন্তর্জাতিক বক্সিং অ্যাসোসিয়েশন (আইবিএ)। ফলে, তাদের লিঙ্গ নির্ধারণ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেবল Y ক্রোমোসোমের উপস্থিতি লিঙ্গ নির্ধারণের পুরো চিত্রটি প্রদান করে না, বিশেষ করে যেখানে "SRY" জিনের উপস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ।
এই পরিস্থিতি ক্রীড়াবিদদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে। কারণ, তাদের লিঙ্গ পরিচয় নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ধরনের জেনেটিক বৈচিত্র্য নিয়ে আরও গভীর গবেষণা প্রয়োজন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল