পৃথিবী থেকে ১৫৫ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত সূর্যসদৃশ এক তরুণ তারার (HD 181327) চারপাশে পানির বরফ আবিষ্কার করেছে নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। মাত্র ২৩ মিলিয়ন বছর বয়সী এই তারাটি আমাদের সৌরজগতের তুলনায় অনেক নবীন এবং এখনও গঠনের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।
টেলিস্কোপের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা দেখতে পেয়েছেন, তারাটির চারপাশে থাকা ধুলাবালি ও বরফের মিশ্রণে গঠিত ‘ডার্টি স্নোবল’ বা ময়লা বরফের বলের মতো বস্তুতে ২০ শতাংশের বেশি অংশ বরফ। এই বরফ মূলত তারার বাইরের বলয়ে পাওয়া গেছে। তারার কেন্দ্রের দিকে যত এগিয়েছে, বরফের উপস্থিতি তত কমেছে।
মাঝামাঝি অঞ্চলে বরফ মাত্র ৮ শতাংশ এবং কেন্দ্রে প্রায় নেই বললেই চলে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, তারা থেকে আসা অতিবেগুনি রশ্মি বরফ গলিয়ে ফেলতে পারে বা এগুলো পাথরের মতো কঠিন বস্তুর মধ্যে আটকে গেছে।
এই গবেষণায় নেতৃত্ব দেওয়া জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক চেন জি বলেন, জেমস ওয়েব স্পষ্টভাবে যে শুধু বরফ নয়, বরং ক্রিস্টালিন ওয়াটার আইস (স্ফটিকাকৃতির বরফ) শনাক্ত করতে পেরেছে, এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সৌরজগতের কুইপার বেল্ট বা শনি গ্রহের বলয়েও এমন বরফ পাওয়া যায়। এমন বরফ গ্রহ তৈরিতে সহায়ক এবং ভবিষ্যতে পৃথিবীর মতো গ্রহে পানি পৌঁছাতেও ভূমিকা রাখতে পারে।
ক্রিস্টিন চেন, স্পেস টেলিস্কোপ সায়েন্স ইনস্টিটিউটের জ্যোতির্বিজ্ঞানী বলেন, ২৫ বছর আগে আমি যখন গ্র্যাজুয়েট ছাত্র ছিলাম, তখন আমার উপদেষ্টা বলেছিলেন, ধ্বংসাবশেষ বলয়ে বরফ থাকা উচিত। কিন্তু জেমস ওয়েবের আগ পর্যন্ত আমরা এত সংবেদনশীল যন্ত্র পাইনি যা এটি নিশ্চিত করতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই আবিষ্কার শুধু মহাকাশ নয়, পৃথিবীতে পানির উৎস ও জীবনের উৎপত্তি সম্পর্কেও নতুন দিগন্ত খুলে দিচ্ছে। এমন তারাব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করে বিজ্ঞানীরা গ্রহ গঠনের ধাপ এবং আমাদের সৌরজগতের ইতিহাস আরও ভালোভাবে বুঝতে পারবেন।সূত্র: নাসা
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল