চমকপ্রদ উদ্ভাবন আর অভিনব সব সেবা দিয়ে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে সাড়া জাগানো পরিবর্তন এনেছে মোবাইল আর্থিক সেবা নগদ। ফলাফল হিসেবে মাত্র চার বছরেই নগদ এখন সাড়ে ৭ কোটি গ্রাহকের ভালোবাসার এক অপারেটর-
শুরু থেকেই প্রযুক্তিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে নগদ
যাত্রা শুরুর মাত্র চার বছরের মধ্যে মোবাইল ব্যাংকিং সেবাটি ধনী-গরিব সবার সেবা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে নগদ। এখানে ক্যাশ-আউট খরচ বাজারের তুলনায় অর্ধেক; সেন্ড মানিও ফ্রি...
নওগাঁর মারুফ হোসেন, জীবিকার সন্ধানে এখন কারওয়ান বাজারের মানুষ। সারা রাত কাজ করেন সবজির ট্রাকে। রোজ রাতে এভাবেই যা আয় হয় নিজের খরচের টাকাটা রেখে বাকিটা পাঠিয়ে দেন গ্রামে স্ত্রীর কাছে।
সেদিন সকালেও এমন টাকা পাঠাচ্ছিলেন একটা মোবাইল এজেন্টের কাছ থেকে। ঘাড়ের গামছাটা নামিয়ে মুখ মুছেই বললেন, ‘এই ১ হাজার টাকা নগদে পাঠাও।’
নগদে কেন?
প্রশ্নটা শুনে মারুফ হাসলেন। বললেন, ‘আমার মতো মানুষের জন্য নগদই ভালো। খরচ কম। গরিবের জন্য নগদ আছে!’
হ্যাঁ, নগদ আসলে এ কাজটাই করেছে। যাত্রা শুরুর মাত্র চার বছরের মধ্যে মোবাইল ব্যাংকিং সেবাটি ধনী-গরিব সবার সেবা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে নগদ। এখানে ক্যাশ-আউট খরচ বাজারের তুলনায় অর্ধেক; সেন্ড মানিও ফ্রি। এ দুটোই মারুফের মতো খেটে খাওয়া মানুষের জন্য সবচেয়ে বেশি কাজে লাগে।
তাছাড়া যাত্রার শুরুতেই ফ্রিতে বিল পেমেন্ট থেকে শুরু করে মধ্যবিত্তকে নড়েচড়ে বসতে বাধ্য করেছিল নগদ। আর মাস তিনেক আগে বিএমডব্লিউ ক্যাম্পেইন চালু করে পেমেন্টেও জয়যাত্রা শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। আর এরকম অনেক সুবিধা নিয়ে কয়েক বছরেই তারা চলে এসেছে শিখরে। তাতে আদতে লাভ হয়েছে গ্রাহকের। নগদের দাবি, প্রতি বছর তারা গ্রাহকের হাজার কোটি টাকার সাশ্রয় করছে।
নগদ জানাচ্ছে, শুরুর চার বছরেই তাদের গ্রাহক সংখ্যা সাড়ে ৭ কোটি পেরিয়েছে। আর দৈনিক গড় লেনদেন ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা। আর এসব কিছু সম্ভব হয়েছে একদিকে খরচ কমানোয়, আরেক দিকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের কারণে। প্রযুক্তির ব্যবহারে নগদ মোবাইলে আর্থিক সেবার অ্যাকাউন্ট খোলাকে করেছে সহজতর। একটা সময় ব্যাংক বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নতুন অ্যাকাউন্ট খোলাটা ছিল বিরাট ঝক্কির ব্যাপার। এক গাদা ফরম পূরণ করা, ছবি ও অন্যান্য কাগজ দেওয়া এবং সপ্তাহ খানেক অপেক্ষা করা। এই পুরো ব্যাপারটিকে এক মিনিটেরও কম সময়ে নামিয়ে এনেছে নগদ উদ্ভাবিত ইলেকট্রনিক কে-ওয়াইসি বা ই-কেওয়াইসি এবং *১৬৭# চেপে অ্যাকাউন্ট খোলার পদ্ধতি। নগদ মনে করে, সর্বনিম্ন খরচ এবং আধুনিক প্রযুক্তির মিশেলে তারা যে সেবা দিচ্ছে, সেখানেই সত্যিকার অর্থে দেশের আর্থিক খাতে ডিজিটালাইজেশনের সূত্রপাত। নগদের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেছেন, ডিজিটালাইজেশন ছাড়া মানুষের জীবন সহজ করা যাবে না। সে কারণে শুরু থেকেই তারা প্রযুক্তিকেই অগ্রাধিকার দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘অন্যরা যেখানে হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে কেবল গ্রাহক নিবন্ধনের জন্য, সেখানে আমাদের খরচ শূন্য। কারণ শুরু থেকেই নগদ ইলেকট্রনিক্যালি গ্রাহক নিবন্ধন করেছে। আর সেভাবেই নগদ হয়ে উঠেছে ধনী-গরিব সবার সেবা।’ তানভীর বলেন, আরও বেশি মানুষকে ডিজিটাল লেনদেনের আওতায় নিয়ে আসার বিকল্প নেই। আর সেটা করতে গেলে মানুষকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের চেয়ে ভালো প্ল্যাটফরম দিতে হবে। সেটাই হতে পারে ডিজিটাল ব্যাংক। এ জন্য নগদ প্রস্তুত বলেও মনে করেন তিনি।
ইতোমধ্যে তারা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে কীভাবে গ্রাহকের ক্রেডিং রেটিং করতে হয়, সে কাজও শুরু হয়ে গেছে। তানভীর বলেন, ‘গত দুই বছর ধরে এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। আশা করি আমরা সফল হব।’
উপবৃত্তি বিতরণ একমাত্র নগদে
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, স্বামী নিগৃহীতা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য ভাতা বিতরণ করে এ খাতে অবিশ্বাস্য সাফল্য পায় নগদ। ভাতা বিতরণ হওয়ার এক মিনিটের মধ্যে ভাতাভোগীর মোবাইলে পৌঁছে যাচ্ছে টাকা...

সরকার অনেক দিন ধরেই বিভিন্ন ভাতা বিতরণে গতি আনার কথা চিন্তা করছিল। সেটাই আলোর মুখ দেখে কভিডের সময়। সারা পৃথিবীর মতো বাংলাদেশও তখন স্থবির হয়ে পড়ে। এই সময় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে মোবাইল আর্থিক সেবার মাধ্যমে ৫০ লাখ পরিবারকে আড়াই হাজার টাকা করে ঈদ উপহার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নগদের অ্যাকাউন্ট খোলা যেহেতু সহজ, আর ডাক বিভাগের সঙ্গেও রয়েছে সমঝোতা, ফলে ভাতা বিতরণের সিংহভাগ চলে আসে নগদের কাছে। এই ভাতা বিতরণে ডাক বিভাগের মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসটি চমক দেখায়। সরকারি সহায়তা বিতরণের কাজে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে নগদ বের করে ফেলে এর আগে কোথায় কীভাবে অনিয়ম হয়েছে? একটা পর্যায়ে বিতরণ না হওয়া বেশ কিছু টাকা সরকারকে ফেরতও দেয় নগদ। আর তাতেই আলোচনায় চলে আসে তারা। আর এটাও প্রমাণ হয় যে, ডিজিটাল মাধ্যমে ভাতা বিতরণ করলে সেটা স্বচ্ছতার নিশ্চয়তা দেয়। এই দৃষ্টান্ত দেখে উৎসাহিত হলো কয়েকটি মন্ত্রণালয়। বিশেষ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং সমাজসেবা অধিদফতর। আর সরকারের এ দুটি ভাতা ও উপবৃত্তির প্রায় পুরোটাই এখন নগদের মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের কাছে যাচ্ছে।
সমাজসেবা অধিদফতর আগে থেকেই সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় ভাতা বিতরণ করে আসছে। আগে সেটা প্রচলিত ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণ করা হতো। তাতে বেশ কিছু সমস্যা ছিল। বয়স্ক ও দরিদ্র মানুষের পক্ষে শহরের ব্যাংকে গিয়ে লাইন দিয়ে ভাতা গ্রহণটা কঠিন একটা কাজ ছিল। ভাতার লাইনে দাঁড়িয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর পাওয়া যেত তখন। এর সঙ্গে ছিল ৯০০ টাকা ভাতা নিতে ২০০-৩০০ টাকা যাতায়াত খরচ। এসব সংকট কাটাতে ২০২১ সালে সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা বিতরণের দায়িত্ব দেওয়া হয় মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে। সেখানে প্রায় ৭৫ শতাংশ ভাতা বিতরণের দায়িত্ব পায় নগদ। তারা সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, স্বামী নিগৃহীতা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য ভাতা বিতরণ করে এই খাতে অবিশ্বাস্য সাফল্য পায় নগদ। নগদ এই ভাতা বিতরণ শুরু করার পর চিত্রটাই বদলে গেল। বয়স্ক, বিধবা, অসহায় মানুষগুলো ঘরে বসে পেতে শুরু করলেন ভাতার টাকা। ভাতা বিতরণ হওয়ার এক মিনিটের মধ্যে ভাতাভোগীর মোবাইলে পৌঁছে যাচ্ছে টাকা। পাশেই কোনো এজেন্টের কাছ থেকে ক্যাশ-আউট করে নিচ্ছেন তারা। প্রায় একই ঘটনা ঘটেছে প্রাথমিক উপবৃত্তি বিতরণের ক্ষেত্রে। উপবৃত্তি চালু করার ক্ষেত্রে সরকারের উদ্দেশ ছিল, প্রতিটি প্রাথমিক ছাত্রের হাতে উপবৃত্তির টাকা পৌঁছে দেওয়া, যাতে একটু অসমর্থ পরিবারগুলো সন্তানের শিক্ষা উপকরণ, পোশাক কেনা নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে না হয়। এই উপবৃত্তিও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রদানের সিদ্ধান্ত হলেও প্রথম দিকে যে মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠানটি দায়িত্ব পেয়েছিল তারা হ-য-ব-র-ল পাকিয়ে ফেলে। অস্বচ্ছতার কারণে এর টাকা ওর কাছে, টাকা না পাওয়াসহ আরও হাজারো অভিযোগ আসতে শুরু করে। তাছাড়া প্রতিষ্ঠানটির এজেন্টই ছিল না সবখানে। ফলে সরকার বেছে নেয় সমাজসেবার ভাতা বিতরণে অভিজ্ঞ নগদকে। শুরুতেই নগদ একটা পূর্ণাঙ্গ ডাটাবেজ তৈরির কাজে হাত দিল। শিক্ষার্থীদের মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে, তার নগদ নম্বর এবং শিক্ষার্থীর জন্মনিবন্ধন সনদ মিলে তৈরি হলো ডেটাবেজ। ফলে নিশ্চিত হলো স্বচ্ছতা।

চার বছরে অগ্রযাত্রার শীর্ষে
► ৭ কোটি ৭০ লাখ মানুষের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি
► প্রতিদিন গড় গ্রাহক অন্তর্ভুক্তি ৫০ হাজার
► সেবা খাতে দেশের দ্রুতবর্ধনশীল কোম্পানি
► দৈনিক গড় লেনদেন ১২০০ কোটি টাকা
► সরকারি ভাতা বিতরণ মোট ২২ হাজার কোটি টাকা
► বছরে গ্রাহকের সাশ্রয় ১ হাজার কোটি টাকা
► সর্বনিম্ন ক্যাশ-আউট চার্জ, হাজারে ১১.৪৯ টাকা
► দেশে প্রথম ই-কেওয়াইসির প্রচলন
► *১৬৭# ডায়াল করে অ্যাকাউন্ট খোলার সহজ উপায়
► দেশব্যাপী ২.৩৩ লাখ উদ্যোক্তা পয়েন্ট
► সরাসরি রেমিট্যান্স আসার প্রথম অপারেটর
দিন বদলের হাতিয়ার
দেশে মোবাইল আর্থিক লেনদেনের বয়স এক যুগ হলেও মানুুষের ভাগ্য বদলে এই সেবা ব্যবহার হতে শুরু করেছে আসলে নগদ বাজারে আসার পর থেকে। নগদের ই-কেওয়াইসি ব্যবহার করে সহজে অ্যাকাউন্ট খোলার প্রযুক্তির প্রচলনের চেয়েও বড় ঘটনা হলো যে কোনো মোবাইল থেকে *১৬৭# ডায়াল করে অ্যাকাউন্ট খোলার পদ্ধতি চালু করা। কারণ দেশে প্রায় ৬৫ শতাংশ মানুষ বাটন ফোন ব্যবহার করেন। এদের পক্ষে ই-কেওয়াইসি দিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলা সম্ভব হচ্ছিল না। *১৬৭# ডায়াল করে অ্যাকাউন্ট খোলার পদ্ধতি চালু হওয়ার পর হু হু করে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়তে থাকে। আর দিনকে দিন নগদ হয়ে ওঠে মানুষের দিন বদলের হাতিয়ার। যেহেতু আগে থেকেই সব মোবাইল টেলিকম অপারেটরের কাছে তাদের প্রত্যেক গ্রাহকের বায়োমেট্রিক ডেটা ছিল, সেটাকেই কেবল ব্যবহার করেছে নগদ। যদিও এর জন্য আগে থেকে টেলিকম অপারেটরের সঙ্গে সমঝোতা করতে হয়েছে। ফলে *১৬৭# ডায়াল করে চার ডিজিটের পিন দিলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে খুলে গেছে নগদ অ্যাকাউন্ট। এই উদ্ভাবন গ্রামাঞ্চল ও শহরে বাটন ফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে একটা জোয়ার এনে দিয়েছে। আর তার মাধ্যমেই নগদ হয়ে উঠল সবার অপারেটর; নগদ পরিগণিত হলো দিন বদলের হাতিয়ার হিসেবে। পরপর এই দুটি আবিষ্কার নগদকে এই ফিনটেক ইন্ডাস্ট্রির চালকের আসনে বসিয়ে দিল। আর বিশ্বখ্যাত বড় বড় প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা থেকে আসতে থাকল স্বীকৃতি। ফলে বাংলাদেশই চলে এলো ফিনটেক দুনিয়ার আলোচনায়।
বিএমডব্লিউ ক্যাম্পেইনে পেমেন্ট বিপ্লব
 কেনাকাটার পর মোবাইলে বিল প্রদান এখন বাংলাদেশের বাজারে কেনাকাটার নতুন এক বাস্তবতা। অবধারিতভাবে নগদের দাপটই এখানে সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ছে। আর মোবাইল রিচার্জের প্রায় সবটাই তো বহু আগেই উঠে এসেছে মোবাইল আর্থিক সেবার অ্যাপে। এখানেও নগদ আছে গ্রাহক পছন্দে এক নম্বর অবস্থানে।
কেনাকাটার পর মোবাইলে বিল প্রদান এখন বাংলাদেশের বাজারে কেনাকাটার নতুন এক বাস্তবতা। অবধারিতভাবে নগদের দাপটই এখানে সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ছে। আর মোবাইল রিচার্জের প্রায় সবটাই তো বহু আগেই উঠে এসেছে মোবাইল আর্থিক সেবার অ্যাপে। এখানেও নগদ আছে গ্রাহক পছন্দে এক নম্বর অবস্থানে।
একটা সময় কেনাকাটা বা সংশ্লিষ্ট যে কোনো বিল দিতে যারা কার্ড ব্যবহার করতেন তারাও এখন মোবাইল পেমেন্টের ওপর নির্ভর করছেন। আর ছাপা টাকা বাদ দিয়ে ক্যাশলেস পেমেন্ট, বিশেষ করে নগদের মাধ্যমে কেনাকাটার পেমেন্ট করা এখন গ্রাহকদের অভ্যাসের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত কিছুদিন থেকে যারা কেনাকাটার এই গতিধারা খেয়াল করছেন, তারা ভালো করেই জানেন নগদের বিএমডব্লিউ ক্যাম্পেইন কীভাবে কেনাকাটার পদ্ধতিই বদলে দিয়েছে। কোটি টাকার একটা বিএমডব্লিউ, একাধিক সেডান গাড়ি, পাঁচ শতাধিক মোটরসাইকেল, শত শত ফ্রিজ, স্মার্ট টেলিভিশন, স্মার্টফোন, স্মার্ট ওয়াচসহ হাজার হাজার উপহার সত্যিই হঠাৎ করেই যেন শপিং মলগুলো থেকে ছাপা টাকার ব্যবহার ‘নাই’ করে দিয়েছে। সেখানে অবধারিতভাবে গ্রাহক পছন্দের শিখরে নগদ। কিন্তু কেন হঠাৎ কোটি কোটি টাকার উপহার দিতে শুরু করল নগদ? এ প্রশ্নের উত্তরে নগদের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২৭ সালের মধ্যে দেশের মোট লেনদেনের ৭৫ শতাংশকে ক্যাশলেস করতে চায়। সেই উদ্যোগের সঙ্গে নগদও একাত্ম। গ্রাহকদের উদ্বুদ্ধ করতেই এমন উদ্যোগ বলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান তিনি। ‘আমরা চেয়েছি মানুষ ছাপা টাকা ব্যবহার ছেড়ে মোবাইল লেনদেনে আসুক। আর এ জন্য গ্রাহকদের একটু উৎসাহ দিতেই আমরা অনেক অনেক উপহার নিয়ে হাজির হয়েছিলাম’, বলেন তানভীর। রমজানের শুরু থেকে চলা এই ক্যাম্পেইনের অধিকাংশ উপহার বিতরণ করা হয়ে গেছে। সেডান গাড়িসহ অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছে মানুষ, আর তাতে ক্যাশলেস লেনদেন আরও উৎসাহিত হয়েছে। ছাপা টাকা ব্যবহার, সেটির ব্যবস্থাপনায় যেমন খরচ আছে, তেমনি আছে নানান ধরনের নিরাপত্তার ঝুঁকিও। আর এ সব কিছুকে বলতে গেলে তুলে দিচ্ছে নগদের এই একটা ক্যাম্পেইন, বলছিলেন বিক্রেতারা।
প্রতি বছর কেবল টাকা ছাপতে আর সেটির ব্যবস্থাপনা করতে সরকারের খরচ হয় ৯ হাজার কোটি টাকা। ক্যাশলেস লেনদেন নিশ্চিত করতে পারলে এই টাকা যেমন সাশ্রয় করে জাতীয় উন্নয়নে ব্যবহার করা সম্ভব, একইভাবে ক্যাশলেস লেনদেনের ফলে একই দিনে বহুবার হাত বদল হতে পারে। তাতে টাকার উপযোগিতা বহুগুণ বেড়ে যায়, অর্থনীতিতেও ইতিবাচক ধারার সৃষ্টি হয়, যোগ করেন তানভীর। ‘আমরা জানি লেনদেনকে ক্যাশলেস করতে পারলে আমাদের ব্যবসা আসবেই। তবে আমাদের ভালো লাগছে যে দেশের কাজে লাগতে পারছি।’ ঈদের আগে যমুনা ফিউচার পার্কে কেনাকাটা করতে এসেছেন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার আরিফুল হোসেন। আরিফুল জানান, মূলত নগদের ক্যাম্পেইনে অংশ নিতেই ডিজিটালি কেনাকাটা করছেন তিনি। আরিফুলের মতো লাখো মানুষ এই ক্যাম্পেইনে যুক্ত হয়েছেন। আর সব মিলে পেমেন্ট হয়েছে কয়েক কোটি বার। টাকার অঙ্কে যা হাজার কোটি টাকার ওপরে। রমজানের সময় নগদে কেনাকাটার বিল দিয়ে রাজধানীর তেজকুনিপাড়ায় অনুপ এলভিন অধিকারী যখন তামিম ইকবালের হাত থেকে একটা সেডান গাড়ি বুঝে নিলেন, তারপর যেন নগদের মাধ্যমে কেনাকাটার ঝড় বয়ে গেল। সামগ্রিক ক্যাম্পেইন নিয়ে তানভীর এ মিশুক বলেন, ক্যাম্পেইনে ব্যবসার চেয়ে ভবিষ্যৎকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন তারা। ‘আমরা চেয়েছি, যত বেশি সম্ভব মানুষকে ডিজিটাল পেমেন্টের আওতায় আনতে। তাতে ব্যবহারকারীদের ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট তৈরি হবে। গ্রাহকের ক্রেডিট রেটিং ব্যবহার করে ক্ষুদ্র সঞ্চয়, ক্ষুদ্র ঋণ, বাই নাউ পে লেটারের মতো সেবা তখন দেওয়া সহজ হবে। আমরা মনে করি আমাদের পরিকল্পনা কাজে দিয়েছে।’
নারীর জন্য, নারীর পাশে
নগদ-এর লম্বা এই যাত্রার বড় একটা মন্ত্র ছিল, তারা নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করতে চায়। আর সেটা যতটা সম্ভব নিশ্চিত করেছে এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি। প্রাথমিকের উপবৃত্তি বিতরণ যখন থেকে নগদের হাতে আসে তখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির অর্থ যাবে তার মায়ের মোবাইলে। ফলে এক পদক্ষেপে নারীর ক্ষমতায়নের বড় কাজটি হয়ে যায়। এখানে আরও একটি বড় অগ্রগতি হলো নগদের লাখো উদ্যোক্তার মধ্যে একটা বড় অংশ প্রান্তিক নারী গোষ্ঠী। সমাজের আর্থিক কাঠামোতে সেভাবে না থাকা এই মানুষগুলো নগদের উদ্যোক্তা হয়ে বদলে দিচ্ছেন নিজের পরিবার ও সমাজকে। দক্ষিণবঙ্গে এরকম বেশ কিছু উদাহরণ আছে যে, ডুবতে বসা একটা সংসারকে একাই নগদ উদ্যোক্তা হয়ে টেনে তুলেছেন পরিবারের নারী সদস্য। এ ছাড়া নগদ কাজ করছে নারীদের ভোগান্তি নিয়েও। বাংলাদেশে নারীদের একটা বড় ভোগান্তি হলো মোবাইলে উত্ত্যক্ত করা এবং প্রতারণা করা। এ ক্ষেত্রে তাদের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর প্রকাশ হয়ে পড়াটাই মূল সমস্যা ছিল। এক্ষেত্রে নারীরাই ছিল মূল লক্ষ্যবস্তু। এই জায়গায় প্রযুক্তি নিয়ে দারুণ একটা কাজ করেছে নগদ। তারা ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরের বিপরীতে নিয়ে এসেছে ভার্চুয়াল কার্ড নম্বর। নগদের এজেন্ট পয়েন্টে গিয়ে ১৬ ডিজিটের এই কার্ড নম্বর বললেই সব ধরনের লেনদেন থেকে শুরু করে মোবাইল রিচার্জ পর্যন্ত করা সম্ভব। ফলে নিজের মোবাইল নম্বর গোপন রেখে লেনদেন করতে পারছেন এখন নারীরা।
লক্ষ্য এবার ডিজিটাল ব্যাংক
 সরকার ঠিক করেছে, ২০২৭ সালের মধ্যে দেশকে ৭৫ শতাংশ ক্যাশলেস করবে। নগদও এ ঘোষণার সঙ্গে একাত্ম। তারা মনে করেন, কেবল মোবাইল আর্থিক সেবার মাধ্যমে সত্যিকারের ক্যাশলেস করা সম্ভব না। সে জন্য দরকার ডিজিটাল ব্যাংক। এখনো বহু মানুষ প্রচলিত আর্থিক সেবার বাইরে আছে। অনেকে সামর্থ্য থাকার পরও ব্যাংকে যেতে হবে বলে এই সেবা নেন না। অনেকে আবার বড় অঙ্কের লেনদেন করতে পারেন না বলে ব্যাংকে যান না। অনেকের আবার জামানত দেওয়ার মতো সম্পদ নেই বলে ঋণ পান না। আর এসব মানুষকে আর্থিক সেবায় নিয়ে আসতে পারে ডিজিটাল ব্যাংক। ডিজিটাল ব্যাংকের প্রয়োজনীয়তা বলতে গিয়ে নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলছিলেন, ‘যদি নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স পায়, আমাদের প্রথম ফোকাস হবে সেই মানুষগুলো, যারা ব্যাংকে যেতে পারছেন না। তারা প্রথাগত ব্যাংক থেকে লোন পাচ্ছেন না; ফলে তারা মহাজনের কাছ থেকে দৈনিক ৪০ শতাংশ সুদে ঋণ নিচ্ছেন। এ মানুষগুলোর দেওয়ার মতো জামানত নেই, এই মানুষের ট্রেড লাইসেন্স নেই, এরা ব্যাংকেও যেতে পারেন না। এদের আমরা জামানতহীন সিঙ্গেল ডিজিট মুনাফায় লোন দেব। তখন তার পুরো টাকাটা ফরমাল চ্যানেলে চলে আসবে। তাতে করে জাতীয় অর্থনীতিও প্রসারিত হবে।’
সরকার ঠিক করেছে, ২০২৭ সালের মধ্যে দেশকে ৭৫ শতাংশ ক্যাশলেস করবে। নগদও এ ঘোষণার সঙ্গে একাত্ম। তারা মনে করেন, কেবল মোবাইল আর্থিক সেবার মাধ্যমে সত্যিকারের ক্যাশলেস করা সম্ভব না। সে জন্য দরকার ডিজিটাল ব্যাংক। এখনো বহু মানুষ প্রচলিত আর্থিক সেবার বাইরে আছে। অনেকে সামর্থ্য থাকার পরও ব্যাংকে যেতে হবে বলে এই সেবা নেন না। অনেকে আবার বড় অঙ্কের লেনদেন করতে পারেন না বলে ব্যাংকে যান না। অনেকের আবার জামানত দেওয়ার মতো সম্পদ নেই বলে ঋণ পান না। আর এসব মানুষকে আর্থিক সেবায় নিয়ে আসতে পারে ডিজিটাল ব্যাংক। ডিজিটাল ব্যাংকের প্রয়োজনীয়তা বলতে গিয়ে নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলছিলেন, ‘যদি নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স পায়, আমাদের প্রথম ফোকাস হবে সেই মানুষগুলো, যারা ব্যাংকে যেতে পারছেন না। তারা প্রথাগত ব্যাংক থেকে লোন পাচ্ছেন না; ফলে তারা মহাজনের কাছ থেকে দৈনিক ৪০ শতাংশ সুদে ঋণ নিচ্ছেন। এ মানুষগুলোর দেওয়ার মতো জামানত নেই, এই মানুষের ট্রেড লাইসেন্স নেই, এরা ব্যাংকেও যেতে পারেন না। এদের আমরা জামানতহীন সিঙ্গেল ডিজিট মুনাফায় লোন দেব। তখন তার পুরো টাকাটা ফরমাল চ্যানেলে চলে আসবে। তাতে করে জাতীয় অর্থনীতিও প্রসারিত হবে।’
 
                         
                                     
                                                             
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                        