মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিসিবির সমালোচনায় সালাউদ্দিন

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বিসিবির সমালোচনায় সালাউদ্দিন

প্রশ্ন শুনে ফোনের ওপাশ থেকে জোরে নিঃশ্বাস ফেলেন মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। অনেকক্ষণ থেমে শীতল কণ্ঠে বলেন, ‘হঠাৎ নিয়ম বদলে ক্রিকেটের উন্নতি সম্ভব নয়। এ জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা জরুরি। শুধু একটি টুর্নামেন্টের জন্য বিসিবির এমন সিদ্ধান্ত সত্যিই পীড়াদায়ক।’ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিসিবি বিপিএলের নামকরণ করেছে ‘বঙ্গবন্ধু বিপিএল’। আসরটিকে জমকালো করতে এমন কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি, যা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে বোর্ড পরিচালকদের মেধাকে। সমালোচনায় ভরা সিদ্ধান্তগুলোর অন্যতম দলগুলোর কোচের পদে স্থানীয়দের বদলে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে বিদেশিদের। এ ছাড়া প্রতিটি দলে একজন লেগ স্পিনার ও ১৪০ কিলোমিটার গতির একজন পেসারও নেওয়া বাধ্যতামূলক করেছে বিসিবি। বোর্ডের এই সিদ্ধান্তগুলোকে হাস্যকর বলেননি সালাউদ্দিন। কিন্তু প্রশ্ন তুলেছেন। এক সময় ক্রিকেট খেলেছেন। এখন কোচিং করাচ্ছেন। তার হাতে গড়া ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিমরা এখন বিশ্ব শাসন করছেন। গত পাঁচ আসরে বিপিএলে কোচিং করিয়েছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে। চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন এবং প্রতিটি আসরেই কোয়ালিফাইয়ার্স রাউন্ড খেলেছে কুমিল্লা। এমন একজন সফল কোচ বিস্মিত হয়েছেন দেশি কোচের জায়গায় বিদেশিদের নেওয়ার সিদ্ধান্তে, ‘ক্রিকেট এখন পুরোদস্তুর পেশাদার খেলা। একটি দলের কোচের পদে দেশি, না বিদেশি থাকবেন, সেটা প্রশ্ন নয়। প্রশ্ন হচ্ছে, যিনি ভালো করবেন, যার মেধা আছে, যার সামর্থ্য ও যোগ্যতা আছে, তিনিই কোচিং করাবেন। পেশাদার যুগে তারাই টিকে থাকবেন, যারা ভালো করানোর সামর্থ্য রাখেন।’ সালাউদ্দিন সমালোচনার তীর ছুড়ে আরও বলেন, ‘কোচিং পেশা কিন্তু এখন একটি ব্যবসা। সারা বিশ্বে শ্রীলঙ্কার ৩০-৪০ কোচ কোচিং করাচ্ছেন। ভারত, পাকিস্তানের কোচরাও দেশের বাইরে যাচ্ছেন। অথচ আমাদের কেউ দেশের বাইরে যেতে পারছেন না। এদিকে অবশ্যই নজর দেওয়া উচিত বোর্ডের। অথচ তারা বিদেশি কোচের দিকেই নজর দিচ্ছেন।’ বিদেশি কোচের নিয়োগ দেওয়ার মতো বিপিএলে একজন লেগ স্পিনার ও ১৪০ কিলোমিটার গতির পেসার খেলানোর বিষয়েও হাসির জন্ম দিয়েছে বলেন সালাউদ্দিন, ‘টি-২০ ক্রিকেটের চেয়ে দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে লেগ স্পিনার খেলানো বাধ্যতামূলক করা উচিত ছিল।’ছোট্ট পরিসরের ক্রিকেটে লেগ স্পিনারের আত্মবিশ্বাস হারানোর সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে টানা বোলিং করে আত্মবিশ্বাস বাড়াতে পারতেন লেগ স্পিনার। অন্যদিকে ১৪০ মিটার গতির পেসার খেলানোর সিদ্ধান্ত বলছে আমাদের ব্যাটসম্যানরা জোরে বোলিং খেলতে পারেন না। এমনসব সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ক্রিকেট বোর্ডের উচিত ছিল আরও অনেক বেশি চিন্তাভাবনা করার।’

বিপিএলের প্রতিটি আসরে হাতে গোনা কয়েকজন বিদেশি কোচ কোচিং করিয়েছেন। অধিকাংশই ছিলেন দেশি কোচ। সালাউদ্দিন, খালেদ মাহমুদ সুজন, সারোয়ার ইমরানরা উল্লেখ্যযোগ্য। এরা সবাই লেবেল ‘থ্রি’ করা। বোর্ডের এমন সিদ্ধান্তে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, দেশি কোচদের সামর্থ্য ও যোগ্যতা নিয়ে প্রকারান্তরে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে বিসিবি।

 

সর্বশেষ খবর