শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

দৃষ্টি যখন মাঠের বাইরে!

ক্রীড়া প্রতিবেদক

দৃষ্টি যখন মাঠের বাইরে!

গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টাইগারদের অনুশীলন

লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে আজ প্রথম টি-২০ ম্যাচে খেলতে নামছে বাংলাদেশ। কিন্তু মাঠের চেয়ে ক্রিকেটপ্রেমীদের দৃষ্টি যেন মাঠের বাইরেই বেশি!

‘পাকিস্তান সফর বলে কথা।’ নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে আতঙ্কিত ভক্তরা! এই সফরে দৃষ্টি রয়েছে পুরো ক্রিকেট বিশ্বেরই!

বাংলাদেশ দল পাকিস্তান সফরে গেছে দীর্ঘ ১২ বছর পর। সর্বশেষ ২০০৮ সালে গিয়েছিল টাইগাররা। ২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কা দলের ক্রিকেটারদের বহনকারী বাসে জঙ্গি হামলার পর দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হয়নি পাকিস্তানে। এরপর জিম্বাবুয়ে দল সফর করেছে। সর্বশেষ সেই শ্রীলঙ্কাই গিয়েছিল পাকিস্তানে। তাই এবার পাকিস্তান যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ দল।

টাইগাররা বিশেষ বিমানে বুধবার রাতে লাহোরে পৌঁছে। এয়ারক্রাফট থেকে নামার পর বিমানবন্দরেই অভ্যর্থনা জানানো হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে। তারপর কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে লাহোরের পার্ল কন্টিনেন্টাল হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয় টাইগারদের। প্রথম রাতটা ফুরফুরে মেজাজেই কেটেছে হোটেলে।

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের একটি সূত্র গতকাল পাকিস্তান থেকে ফোনে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানিয়েছে, ‘পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখে আমরা মুগ্ধ। বিমানবন্দর থেকে হোটেলে এসেছি আমরা কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে। হোটেলেও আমাদের কোনো সমস্যা হয়নি। ক্রিকেটাররাও ফুরফুরে মেজাজে আছেন।’

তবে বেশি নিরাপত্তার কারণে ক্রিকেটারদের বন্দীদশার মধ্যে থাকতে হচ্ছে এই যা! অবশ্য এমন পরিস্থিতির জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিয়েই পাকিস্তান সফরে গেছেন ক্রিকেটাররা। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে তাই ইতিবাচকভাবেই দেখছেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, ‘আমরা যখন পাকিস্তানে আসার জন্য বিমানে উঠেছি অথবা বোর্ড থেকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে আমরা এখানে খেলব, তখন থেকেই আমরা বদ্ধ পরিবেশে কিনা কিংবা কোন পরিবেশে খেলব, এসব আর ভাবছি না। আমার মনে হয়, এখানে এসে ওই ধরনের চিন্তাভাবনা থেকে সরে আসাই ভালো। দলের প্রত্যেক খেলোয়াড় সেভাবেই চিন্তা করছে। আমরা শুধুই এখানে ভালো খেলার জন্য এসেছি, আর সবাই ভালো খেলার জন্য মুখিয়ে আছি।’

কোচ রাসেল ডমিঙ্গো যেন বেশ উপভোগই করছেন! তিনিই কিছু ইতিবাচক দিক দেখছেন। মিডিয়াকে কোচ বলেছেন, ‘অনেক সময় এমন বদ্ধ পরিবেশে একসঙ্গে থাকাটা দলের জন্য ভালো হতে পারে। এটা দলের ফাঁকফোকরগুলোকে ঝালাই করে দিতে পারে। এমন পরিবেশ দলের মধ্যে ঐক্য ও যোগাযোগ বাড়াতে সাহায্য করে।’

নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় থাকলেও আজ জয়ের জন্যই মাঠে নামবে টাইগাররা। মাহমুদুল্লাহরা কি পারবেন? একে তো সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমের মতো বড় তারকা নেই। তাছাড়া খেলতে হবে টি-২০ র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর দলের বিরুদ্ধে এবং তাদের নিজেদের মাটিতে। টি-২০ পরিসংখ্যানও পাকিস্তানের পক্ষেই কথা বলে! দুই দলের দেখা হয়েছে মোট ৯ বার, এর মধ্যে বাংলাদেশ জিতেছে মাত্র দুই ম্যাচে। হেরেছে বাকি ৭ ম্যাচেই।

তবে বাস্তবতা কিন্তু ভিন্ন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সর্বশেষ তিন ম্যাচের মধ্যেই কিন্তু দুটি জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। তাছাড়া টাইগাররা সর্বশেষ টি-২০ সিরিজে ভারতের বিরুদ্ধে হারলেও তাদের মাটিতে একটি দারুণ জয় পেয়েছিল। অন্যদিকে পাকিস্তানে দ্বিতীয় সারির দল নিয়ে গিয়েও তিন ম্যাচের সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে জিতেছিল শ্রীলঙ্কা। তাই পাকিস্তান র‌্যাঙ্কিংয়ের ১ নম্বরে থাকলেও লড়াইয়ে পিছিয়ে রাখার উপায় নেই সফরকারীদের। তাছাড়া বিপিএলে খেলে টি-২০ প্রস্তুতিটা ভালোভাবে নিয়ে গেছে টাইগাররা।

দলীয় শক্তিমত্তার কথা চিন্তা করলেও পাকিস্তানকে খুব একটা এগিয়ে রাখার উপায় নেই। কেননা তরুণদের নিয়ে গড়া হয়েছে বাবর আজমের দল। বিপিএলে দুর্দান্ত বোলিং করার পরও মোহাম্মদ আমির, ওয়াহাব রিয়াজ, মোহাম্মদ ইরফান সুযোগ পাননি। সিনিয়রদের মধ্যে আছেন শোয়েব মালিক।

সে তুলনায় বাংলাদেশ দল বেশ শক্তিশালী! মুশফিক না থাকলেও ফিরেছেন তামিম ইকবাল। ড্যাসিং ওপেনারের সঙ্গে টপ অর্ডারে রয়েছেন লিটন দাস, নাঈম শেখ, মিথুন। মিডল অর্ডারে আছেন মাহমুদুল্লাহ, সৌম্য সরকার, আফিফ হোসেন। পেস বোলিং আক্রমণ শানিত হবে মুস্তাফিজের নেতৃত্বে। রয়েছেন রুবেল হোসেনের মতো অভিজ্ঞ তারকা। অভিষেক হতে পারে তরুণ পেসার হাসান মাহমুদের।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর