জাকারিয়া পিন্টু
আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশের অভিষেক হয় ১৯৭৩ সালে। সেবার মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত মারদেকা কাপ ফুটবলে বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করে। অভিষেক আসরেই জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দেন মোহামেডানের কিংবদন্তি ফুটবলার জাকারিয়া পিন্টু। অর্থাৎ দেশের প্রথম অধিনায়ক হিসেবে পিন্টুর নাম ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই পেয়েছে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলেরও নেতৃত্বে ছিলেন পিন্টু। মোহামেডানের টানা সাত মৌসুমে অধিনায়কও ছিলেন। পিন্টুর অধিনায়কত্বে তিনবার লিগ, একবার স্বাধীনতা কাপ ও একবার আগা খান গোল্ডকাপ শিরোপা জিতে সাদা কালোরা।
কাজী সালাউদ্দিন
বাংলাদেশের প্রথম পেশাদার লিগ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে কাজী সালাউদ্দিনের। তাও আবার বিদেশের মাটিতে। ১৯৭৬ সালে আবাহনীতে থাকা অবস্থায় তিনি হংকং পেশাদার লিগে সুযোগ পান। ১৯৭৫ সালে জাতীয় দলের অধিনায়কও ছিলেন তিনি। জাতীয় দলের কোচও ছিলেন। সালাউদ্দিনই প্রথম ফুটবলার যিনি স্বাধীনতার পর বিদেশি কোনো দলের বিপক্ষে গোল করেন। ১৯৭২ সালে তারই গোলে ঢাকা একাদশ পরাজিত করে কলকাতার জায়ান্ট ক্লাব মোহনবাগানকে। তিনিই একমাত্র ফুটবলার জাতীয় দলের অধিনায়ক, কোচ ও বাফুফের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
সালাম মুর্শেদী
জাতীয় দলে বেশি দিন খেলতে পারেননি। তবু দেশের তারকা ও অন্যতম জনপ্রিয় ফুটবলার সালাম মুর্শেদী। তিনিই প্রথম ফুটবলার যিনি বিদেশের মাটিতে প্রথম ডাবল হ্যাটট্রিক ও সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পান। ১৯৮২ সালে ভারতের আশীষ জব্বর স্মৃতি টুর্নামেন্টে মোহামেডান অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়। সালাম ১টি ডাবল ও ২টি হ্যাটট্রিক করে সর্বোচ্চ গোলদাতার পাশাপাশি সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন। সে বছরই ঢাকায় অনুষ্ঠিত প্রথম বিভাগ লিগে ২৭ গোল করে রেকর্ড গড়েন। যা স্বাধীনতার পর ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ গোল। ১৯৮৩ সালে তিনি মোহামেডানের অধিনায়ক হন।
মোনেম মুন্না
বাংলাদেশের তারকা ফুটবলার মোনেম মুন্না। ১৯৯৫ সালে তারই নেতৃত্বে দেশের বাইরে বাংলাদেশ প্রথম শিরোপা জিতে। মিয়ানমারে চার জাতি চ্যালেঞ্জ কাপে ফাইনালে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে পরাজিত করে বাংলাদেশ। ১৯৯৪ ও ৯৫ সালে মুন্নার নেতৃত্বে টানা দুবার লিগ জিতে আবাহনী। যা ব্যক্তিগত রেকর্ডই বটে। এর আগে কোনো ফুটবলারের নেতৃত্বে
কোনো ক্লাব টানা দুবার চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। নব্বই দশকে কলকাতা লিগে ইস্টবেঙ্গলে খেলে সুনাম কুড়ান মুন্না। ইস্টবেঙ্গল শিরোপা জয়ের পেছনে বড় ভূমিকা রাখেন তিনি।
সম্রাট হোসেন এমিলি
১৯৮২ সালে ওয়ারীতে খেলেই সবার নজর কাড়েন তরুণ ফুটবলার এমিলি। তার গোলে সেবার সুপার লিগে ওয়ারী হারায় আবাহনীকে। হন তৃতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা। ১৯৮৩-তেই যোগ দেন জনপ্রিয় আবাহনীতে। হ্যাটট্রিক লিগ শিরোপা জয়ের অংশীদার হন এ ক্লাব থেকেই। ১৯৮৬ সালে তার গায়ে চড়ে ঐতিহ্যবাহী মোহামেডানের জার্সি। এখানে আরও বড় রেকর্ড। লিগে অপরাজিত হ্যাটট্রিক শিরোপার স্বাদ পান। বাংলাদেশের প্রথম ফুটবলার হিসেবে ডাবল হ্যাটট্রিক শিরোপার কৃতিত্ব পান। যা এখনো কারোর পক্ষে ভাঙা সম্ভব হয়নি।