আইসিসি টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালের আগে ইংল্যান্ড জাতীয় ফুটবল দলের কোচ গেরেথ সাউথগেট এবং অধিনায়ক হ্যারি কেইন শুভকামনা জানিয়েছিলেন জস বাটলারদের। ইংল্যান্ডের ক্রিকেট অধিনায়ক বাটলারও বলেছিলেন, ক্রিকেটে ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন হলে এটা ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হতেও অনুপ্রেরণা জোগাবে। ইংল্যান্ড ক্রিকেটের ফাইনালে পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এবার সত্যিই কী ফুটবল বিশ্বকাপেও এমন কিছু ঘটবে! টি-২০ বিশ্বকাপ জয়ের পর ইংল্যান্ডের চোখে এখন ফুটবল বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন।
ইংল্যান্ড একবারই বিশ্বকাপ ফুটবলের ট্রফি হাতে চুমু খেয়েছে। ১৯৬৬ সালে। সেবার নিজেদের দেশে ববি মুর, গর্ডন ব্যাঙ্কস, ববি চার্লটন, জিওফ হার্স্টরা এক নতুন অধ্যায় লিখেছিলেন ইংলিশ ফুটবলের। এরপর কেটে গেছে বহু যুগ। ইংলিশরা এখনো বিশ্বকাপের মাঠে সুর করে কোরাস গায়, ‘ইটস কার্মি হোম’। কিন্তু বিশ্বকাপের ট্রফি আর তাদের ঘরে আসেনি। গতবার ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপে খুব কাছে গিয়েছিল ইংল্যান্ড। সেমিফাইনালে হ্যারি কেইনরা হেরে যান ক্রোয়েশিয়ার কাছে। ভাঙা মন নিয়ে বাড়ি ফেরে ইংলিশরা। তবে আবারও তাদের চোখে স্বপ্ন। ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দ করতে করতে তারা ভাবছে, ফুটবলের ট্রফিটাও আসুক এবার। কোচ গেরেথ সাউথগেট বলেছেন, ‘আমরা অন্য চিন্তা বাদ দিয়ে কেবল ফুটবলেই মন দিয়েছি। সর্বোচ্চ চেষ্টা করেই আমাদের দেশের জন্য সফলতা বয়ে আনব।’ তার সঙ্গে একমত সাবেক ইংলিশ তারকা ফুটবলার গ্যারি লিনেকারও। ১৯৮৬ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের জার্সিতে ৬ গোল করেন লিনেকার। সেবার সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার গোল্ডেন বুটও জয় করেন তিনি। গ্যারি লিনেকার বলছেন, ‘এবার ইংল্যান্ডের যাত্রাটা পুরো করা উচিত। কারণ, এই দলটার অনেক ভালো মানের ফুটবলার আছে। তারা নিজেদের সেরা ফর্মটা ধরে রাখতে পারলেই হলো।’ এখানেই থেমে থাকেননি লিনেকার। তার মতে, আগামী যুগটা ইংলিশ ফুটবলের। তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপ জেতা বেশ কঠিন। এজন্যই তো আমরা দীর্ঘদিন ধরে এটা জিততে পারিনি। তবে আমার মনে কোনো সন্দেহ নেই বর্তমান দলটাকে নিয়ে। তারা বিশ্বকাপ জিতবে। আগামী ১০/১২টা বছর এই দলটা আধিপত্য বিস্তার করবে।’
গেরেথ সাউথগেট আর গ্যারি লিনেকারের ইচ্ছে কী পূরণ হবে? ইংলিশরা ফুটবলপাগল জাতি। তাদের সমর্থকদের বলে ‘হুলিগান’। খেলায় একটু এদিক-ওদিক হলেই এই হুলিগানরা ভয়ংকর তা ব ঘটিয়ে দেয় মাঠে-ঘাটে। এই তা ব থামাতে সভ্য সমাজের উচ্চ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নিরাপত্তারক্ষীদেরও হিমসিম খেতে হয়। ইংল্যান্ডে ফুটবলের আধিপত্য নিয়ে তাদের ক্রিকেট দলের অধিনায়ক জস বাটলার বলেছেন, ‘ইউরো কাপের (২০২১ সালে) সময় দেশের চিত্রটা আপনারা নিশ্চয়ই দেখেছেন। আমাদের দেশে ফুটবলের সঙ্গে অন্য কোনো কিছুরই তুলনা চলে না।’ ২০২১ সালের ইউরো কাপে রানার্সআপ হয় ইংল্যান্ড।
ক্রিকেট নিয়েও উন্মাদনা কম নেই ইংল্যান্ডে। জস বাটলাররা ট্রফি জয়ের পর পুরো ইংল্যান্ড উৎসব করেছে। লন্ডনে উৎসবের মাত্রা ছিল অন্য সব স্থানের চেয়ে বেশি। অন্তত মিডিয়ার রিপোর্ট তাই বলছে। ক্রিকেটে টি-২০ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। একই সঙ্গে তারা ওয়ানডে বিশ্বকাপেরও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। এমন কীর্তি আছে ইংল্যান্ডের মেয়েদেরও। ২০০৯ সালে ওয়ানডে ও টি-২০ দুটি বিশ্বকাপেই চ্যাম্পিয়ন হয় ইংলিশ মেয়েরা। এবার ফুটবল বিশ্বকাপটা জিতলে ষোলোকলা পূর্ণ হয় ইংলিশদের!