ফ্রান্সের গোলমেশিন এমবাপ্পে
কিলিয়ান এমবাপ্পে। ফ্রান্সের গোল মেশিন হিসেবে খ্যাতি পেয়েছেন। ২০১৮ সালে তরুণ ফুটবলার হিসেবে জয় করেছেন বিশ্বকাপের ট্রফি। ২৩ বছর বয়সী এই তারকা ফুটবলার গতি, ড্রিবলিং, নিখুঁত লক্ষ্যভেদ, পজিশনিংয়ে দারুণ। আরও নানা বিশেষণ আছে তার নামের পাশে। আজ মরক্কোর বড় বিপদের কারণ হতে পারেন এমবাপ্পে।
কিলিয়ান এমবাপ্পের গতি দারুণ। বল নিয়ে ছুটতে শুরু করলে তাকে আটকে রাখে, সাধ্য কার! দুই পায়েই সমান দক্ষ। সাধারণত উইঙ্গার হিসেবে খেললেও মাঝেমধ্যে সেন্টার ফরোয়ার্ড হিসেবেও দেখা যায় তাকে। এমবাপ্পের আরও একটা বড় গুণ, দ্রুত গতিতে ড্রিবলিং করার ফাঁকেই তিনি দিক বদলে নিতে পারেন। প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের বিভ্রান্ত করে খেলাটার নিয়ন্ত্রণ নিজের কাছে নিয়ে নেন। ডি বক্সের কাছাকাছি ইঞ্চিখানেক স্থান পেলেও ভয়ংকর হয়ে ওঠেন এমবাপ্পে। গোল করেন নিশ্চিন্তে! এবারের বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ৫টি গোল করেছেন এমবাপ্পে। দুটি গোলে এসিস্টও করেছেন। বিশ্বকাপে সেরা ফুটবলার হওয়ার লড়াইয়ে আছেন এমবাপ্পে। গোল্ডেন বুটের লড়াইয়ে এগিয়ে আছেন তিনিই।
এমবাপ্পেই আজ ফ্রান্সের তুরুপের তাস হয়ে উঠতে পারেন। যেমনটা গত বিশ্বকাপে শেষ ষোলোতে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে হয়েছিলেন। সেই ম্যাচে এমবাপ্পের গতির কাছেই হেরেছিল আর্জেন্টিনা। মরক্কো কী আটকাতে পারবে ফরাসি এই তারকাকে! নাকি তাদের লাল বিপ্লব থেমে যাবে এখানেই! এমবাপ্পের গতির কাছে হার মানবে! অবশ্য ফ্রান্সের আক্রমণভাগ মানেই কেবল এমবাপ্পে নন। এই দলে আঁতোয়ান গ্রিজমান, অলিভিয়ের জিরদরাও আছেন। যারা সামান্য সুযোগও কাজে লাগিয়ে গোল করতে পারেন।
মরক্কোর প্রাচীর আশরাফ হাকিমি
আশরাফ হাকিমি। মরক্কোর ডিফেন্সে সিসা ঢালা প্রাচীরের মতোই ভূমিকা পালন করেন। রাইটব্যাক হিসেবে খেলেন। বর্তমান ফুটবলে সেরা ডিফেন্ডারের খ্যাতি পেয়েছেন। রিয়াল মাদ্রিদ, বুরুসিয়া ডর্টমুন্ড আর ইন্টার মিলানে নাম কুড়ানোর পর তিনি বর্তমানে খেলছেন পিএসজিতে। মেসি, নেইমার, এমবাপ্পেদের সঙ্গে। আজ ফ্রান্সের বিপক্ষে মরক্কোর প্রাচীরের ভূমিকাই পালন করবেন তিনি।
গতি, ড্রিবলিং আর গোল করার ক্ষমতার জন্য বেশ বিখ্যাত আশরাফ হাকিমি। পাশাপাশি ট্যাকল ও ডুয়েলেও অসাধারণ। ফাউল না করে প্রতিপক্ষের ফরোয়ার্ডদের কাছ থেকে বল কেড়ে নিতে পারেন অনায়াসে। তার ট্যাকলগুলোও দুর্দান্ত। প্রতিপক্ষ বুঝে ওঠার আগেই বলের দখল হারায়। কাউন্টার আক্রমণের শুরুটা করে দেন হাকিমি। কখনো কখনো উঠে যান ফরোয়ার্ড লাইনে। তবে বাজ পাখির মতোই দৃষ্টি রাখেন নিজেদের ডিফেন্সে। প্রতিপক্ষের আক্রমণ আসতে দেখলেই ঝড়ো গতিতে নিচে নেমে ডিফেন্স সামলে নেন। আজ ফ্রান্সের সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে উঠতে পারেন তিনি।
পিএসজিতে খেলে ফরাসি ফুটবলের অনেক কিছুই জানা হয়ে গেছে আশরাফ হাকিমির। ফরাসি ফুটবলারদের সতীর্থ হিসেবে যেমন খেলেছেন তেমনি প্রতিপক্ষ হিসেবেও খেলেছেন। কীভাবে তাদেরকে রুখতে হয়, তা ভালোই জানা আছে। দিদিয়ের দেশমকে আজ আশরাফ হাকিমিদের তৈরি করা ডিফেন্স লাইন ভাঙা নিয়েই চিন্তা করতে হবে। মরক্কো এবারের বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত কোনো গোল হজম করেনি। একটা গোল হয়েছে তাদের জালে। তাও আত্মঘাতী। নিজেরাই গোলটা করে দিয়েছেন প্রতিপক্ষের হয়ে।