'শক্তির বিচারে খুব খারাপ দল নয় গ্রেনাডা। ক্রিকেটাররা অসাধারণ খেলেছেন। ভালো খেলেই জিতেছেন। হোক প্রস্তুতি ম্যাচ। তার পরও আমি বিশ্বাস করি এ জয় ওয়ানডে সিরিজে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী করবে মুশফিকদের।'- ৯৫ রানে ম্যাচ জেতার পর গ্রেনাডা থেকে বললেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ম্যানেজার, সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার। ২০ আগস্ট ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ খেলতে নামবেন মুশফিকরা। গ্রেনাডার সেন্ট জর্জেস স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম দুটি ওয়ানডে খেলবে টাইগাররা। শেষ ওয়ানডে ২৫ আগস্ট সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কে। ওয়ানডে সিরিজের আগে এ বড় জয় স্বাভাবিকভাবেই আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে টাইগারদের।
তিন ওয়ানডে, একটি টি-২০ ও দুই টেস্টের পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে মুশফিকবাহিনী ঢাকা ছাড়ে ১৩ আগস্ট। ব্যাট-বলের ময়দানি লড়াইয়ে নামার আগে গত পরশু সেন্ট অ্যানড্রুর পাহাড়ঘেরা, সবুজের মিশেলের অপরূপসুন্দর স্টেডিয়ামে টাইগাররা প্রথমে ব্যাট করে। ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩২২ রান করে মুশফিকবাহিনী। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৫৬ রানের ভিত দেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও এনামুল হক বিজয়। এ ভিতেই ভর করে রান করেন অন্য ব্যাটসম্যানরা। এনামুল ২৪ রানে সাজঘরে ফেরেন থমাসের বলে আউট হয়ে। ওয়ান ডাউনে খেলতে নেমে ১ রানের বেশি করতে পারেননি বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েশ। ৬৬ রানে ২ উইকেট হারানোর পর তামিম ও শামসুর রহমান শুভ ৮৮ রান যোগ করেন তৃতীয় উইকেট জুটিতে। শামসুর করেন ৩২ রান। শামসুরের বিদায়ের অল্প কিছু পর সাজঘরে ফেরেন তামিম ৮৬ বলে ৯১ রান করে। তামিম সাজঘরে ফিরলে অধিনায়ক মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৫০ রান যোগ করেন দ্রুত লয়ে। মুশফিক ৪৪ রানে আউট হলে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন মাহমুদুল্লাহ। শেষ ১০ ওভারে নাসির হোসেনকে নিয়ে ১১৪ রান যোগ করেন স্কোর বোর্ডে। এর মধ্যে ৪৯ ও ৫০ ওভারে যোগ করেন যথাক্রমে ১৯ ও ১৬ রান। মাহমুদুল্লাহ শেষ ওভারে সাজঘরে ফেরার আগে রান করেন ৭৮। নাসির শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ২২ রানে। গ্রেনাডা থেকে দলের ব্যাটিং নিয়ে বাশার বলেন, 'তামিম খুবই আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিং করেছেন। রিয়াদ (মাহমুদুল্লাহ) অসাধারণ ব্যাটিং করেছেন। ভালো ব্যাটিং করেছেন মুশফিক, শামসুর, নাসিরও।'
৩২৩ রানের টার্গেট। যে কোনো উইকেট যে কোনো দলের জন্যই পাহাড়সম। ক্যারিবীয় দলে খেলা তিন ক্রিকেটারকে নিয়ে গড়া গ্রেনাডার জন্য তো অবশ্যই। হয়েছেও তাই। ৫০ ওভারে ২২৭ রানের বেশি তুলতে পারেনি। তাই হেরেছে বড় ব্যবধানে। অবশ্য বাংলাদেশের সব স্পেশালিস্ট বোলারই ভালো বোলিং করেছেন। বিশেষ করে ২০০৯ সালের পর প্রথমবারের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিজ খেলতে যাওয়া মাশরাফি ৮ ওভারের স্পেলের ৪৪ রানের খরচে নিয়েছেন ৩ উইকেট। স্পিনার সোহাগ গাজী ও আবদুর রাজ্জাক চমৎকার বোলিং করে উইকেট নিয়েছেন যথাক্রমে ১টি ও ২টি। দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ও আল-আমিন নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছেন। বিশেষ করে আল-আমিন নিখুঁত লাইন বজায় রেখে ৮ ওভারে ৩৪ রান দিয়েছেন মাত্র। বোলারদের বোলিং নিয়েও উচ্ছ্বসিত ম্যানেজার বাশার, 'মাশরাফি অসাধারণ বোলিং করেছেন। বিশেষ কারও নাম না বলেই বলতে হবে ভালো করেছেন সব বোলার। আশা করি ওয়ানডে সিরিজে বোলারদের আত্মবিশ্বাস জোগাবে এই ম্যাচ।'
গত পরশু ছিল বাশারের জন্মদিন। ম্যাচ থাকায় ঘটা করে পালন করা হয়নি। কিন্তু ম্যাচ শেষে হোটেল রেড রঙ্ কেক কেটে উদযাপন করা হয় ম্যানেজারের জন্মদিন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ : ৩২২/৬, ৫০ ওভার (তামিম ইকবাল ৯১, এনামুল হক বিজয় ২৪, ইমরুল কায়েশ ১, শামসুর রহমান শুভ ৩২, মুশফিকুর রহিম ৪৪, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৭৮, নাসির হোসেন ২২*, অতি. ২০। পাসকেল ২/৭৬, ম্যাকসুয়েন ১/৭০, থমাস ২/৫৪, জর্জ ১/২৭)।
গ্রেনাডা : ২২৭/১৯, ৫০ ওভার (ক্যাম্পবেল ২৩, জর্জ ৬২, অতি. ১৭। মাশরাফি ৮-১-৪৪-৩, সোহাগ গাজী ৭-০-২২-১, আল-আমিন ৮-১-৩৪-২, আবদুর রাজ্জাক রাজ ১০-১-৩৫-১, তাসকিন আহমেদ ৭-০-৩২-১, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ২-০-১৩-০, নাসির হোসেন ৬-০-৩০-০, শামসুর রহমান শুভ ২-০-১০-০)।
ফল : বাংলাদেশ ৯৫ রানে জয়ী