ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের কথা মনে হলেই স্মৃতিপটে ভেসে ওঠে এক রূপকথার গল্প! ঘটনার সময় ২০০৯ সাল। সেখানে পরাক্রমশালী রাজকুমারের ভূমিকায় ছিলেন সাকিব আল হাসান। যিনি শক্ত হাতে বাংলাদেশ দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে টেনে নিয়ে গিয়েছিলেন সাফল্যের শীর্ষে। বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো শক্তিশালী দলকে তাদের মাটিতে ওয়ানডে ও টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করেছিল। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ক্রিকেটের সেরা সাফল্যও সেটি।
ওয়ানডে ও টেস্ট উভয় সিরিজেই সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পেয়েছিলেন সাকিব। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচেই হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন দেশ সেরা ক্রিকেটার। উইকেটও নিয়েছিলেন দুটি। আর দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ১৩ উইকেটের পাশাপাশি ব্যাট হাতে করেছিলেন ১৫৯ রান। পুরো সফরেই ছিল সাকিবের এককাধিপত্য। অধিনায়ক এবং খেলোয়াড়- উভয় চরিত্রেই সাকিব ছিলেন সেরা। দীর্ঘ ছয় বছর পর আবারও ক্যারিবিয়ান দ্বীপে টাইগাররা তাদের মিশন শুরু করতে যাচ্ছে আজ। কিন্তু সেখানে নেই সেরা তারকা। যদিও গত ছয় বছর সাকিব আল হাসান আরও অনেক বেশি পরিণত হয়েছেন। বর্তমানে টেস্টে বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার তিনি। আলাদা আলাদাভাবে ব্যাটিং ও বোলিংয়ে বাংলাদেশের সেরা খেলোয়াড়ও তিনি। তারপরেও এবার জাতীয় দলের সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যেতে পারেননি তিনি। তার মাথার ওপর ঝুলছে ক্রিকেট বোর্ডের চাপিয়ে দেওয়া ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞার খড়গ। সাকিবকে ছাড়া কি এবারের মিশনে দাপট দেখাতে পারবে মুশফিকবাহিনী? যদিও সফরের একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচের ব্যবধানেই জিতেছিল টাইগাররা। কিন্তু সেটা তো ছিল গ্রানাডা একাদশ। মুশফিকদের আসল পরীক্ষা হবে আজই। প্রথম ওয়ানডেতে আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ক্যারিবীয়দের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। অবশ্য সাকিবকে ছাড়াই জয়ের আশাবাণী ব্যক্ত করেছেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। সেটা কিন্তু অসম্ভবও নয়। সাকিব ছাড়াও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে টাইগাররা গেইল-স্যামিদের দলকে হারিয়েছিল ৩-২ ব্যবধানে। তবে সেটা ছিল দেশের মাটিতে। এবার বিদেশের মাটিতেও নিজেদের সামর্থ্যের জানান দিতে প্রস্তুত মুশফিকুর রহিম। তা ছাড়া এটা টাইগার দলপতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জও বটে। বাংলাদেশ দল কি এক সাকিবের ওপর নির্ভরশীল নাকি সাকিব ছাড়াও ভালো খেলার সামর্থ্য আছে?