শচীন টেন্ডুলকারের পর ডাবল সেঞ্চুরি করেন বীরেন্দর শেবাগ। রোহিত শর্মা তো একাই দুই দুটি ডাবল সেঞ্চুরির মালিক। ভারতীয় ওপেনার ২০৯ রানের পর করেন ২৬৪। শচীন কাঁটায় কাঁটায় ২০০ এবং শেবাগ করেছিলেন ২১৯ রান। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে ক্রিকেটবিশ্ব যার কাছ থেকে ডাবল সেঞ্চুরি আশা করছিল সেই ক্রিস গেইল কেন না যেন পাচ্ছিলেন না। ক্লাব ক্রিকেটের ব্যাটিংয়ে যিনি সাইক্লোন, মেরুন জার্সিতে তিনি টিপটিপ বৃষ্টিও নন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সব শেষ আট ওয়ানডেতে গেইলের ইনিংস- ৬, ৪১, ১৯, ১, ১০, ০, ৩৬, ৪। তারপরেও ক্যারিবীয় ক্রিকেট বোর্ড গেইলের ওপর আস্থা রেখেছিলেন ঠিকই। বিশ্বাস হারাননি ভক্তরাও। অবশেষে গেইল বোর্ড এবং ভক্তদের আস্থার প্রতিদান দিলেন মহাকাব্যিক এক ইনিংস খেলে। ১৪৭ বলে ২১৫ রান। ১৬টি ছক্কার সঙ্গে ১০ টি চার। স্ট্রাইকরেট ১৪৬.২৫।
ভারতের ঘরোয়া টি-২০ লিগ আইপিএলের ২০১৩ মৌসুমে পুনে ওয়ারিয়র্সের বিরুদ্ধে ব্যাঙ্গালুরু রয়েল চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে ১৭৫ রানের সাইক্লোন ইনিংস খেলেছিলেন গেইল। টি-২০র ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড সেটি। কাল সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়লেন বিশ্বকাপে (ওয়ানডের ইতিহাসে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর)। এর আগে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান ছিল গ্যারি কারস্টেনের ১৮৮ রান, ১৯৯৬ বিশ্বকাপে। রেকর্ড হয়েছে পার্টনারশিপেও। দ্বিতীয় উইকেটে মারলন স্যামুয়েলসের সঙ্গে গেইলের ৩৭২ রানের জুটিটি শুধু বিশ্বকাপেই নয়, ওয়ানডের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এর আগে সর্বোচ্চ জুটিটি ছিল ৩৩১ রানের। যেটি ১৯৯ সালে ভারতের হায়দরাবাদে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে করেছিলেন স্বাগতিক দলের দুই ব্যাটিং জিনিয়াস শচীন টেন্ডুলকার ও রাহুল দ্রাবিড়। রেকর্ড হয়েছে আরেকটি, এক ইনিংসে ১৬ ছক্কা। যদিও এমন ঘটনা এর আগে আরও দুইবার ঘটেছে। ২০১৩ সালে রোহিত শর্মা তার ২০৯ রানের ইনিংসেও ১৬ ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার মারকুটে ব্যাটসম্যান এবি ডি ভিলিয়ার্স তার দ্রুততম সেঞ্চুরির ম্যাচেও হাঁকিয়েছেন ১৬ ছক্কা। সেই রেকর্ডে ভাগ বসালেন এবার ক্যারিবীয় তারকা। তবে বিশ্বকাপে গেইলই সেরা।
কাল দ্রুততম ডাবল সেঞ্চুরির বিশ্ব রেকর্ডও গড়েছেন গেইল। ক্যারিবীয় সাইক্লোন ২০০ রান ছুঁয়েছেন ১৩৮ বলে। এর আগের রেকর্ডটি ছিল শেবাগের, ১৪০ বলে। তবে আরেকটি দিক দিয়ে গেইলের ডাবল সেঞ্চুরিটি সবার সেরা। আগের চারটি ডাবল সেঞ্চরি ছিল ভারতের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে। কিন্তু গেইলের ইনিংসটি অস্ট্রেলিয়ার গতিময়-বাউন্সি উইকেটে।
ক্যানবেরার ম্যানুকা ওভালে ক্রিকেট দেবতা যেন ক্যারিবীয় ঝড়কে দুহাত উজাড় করে দিয়েছেন সব কিছু। মহাকাব্যিক ইনিংসের পর বল হাতেও পেয়েছেন দুই উইকেট। রেকর্ডময় এই ম্যাচে শূন্য রানে প্রথম উইকেট হারিয়েও ৩৭২ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এভারেস্টসম লক্ষ্য তাড়া করে ২৮৯ রানে অলআউট জিম্বাবুয়ে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয় ৭৩ রানে।