যেন শিল্পীর তুলিতে অাঁকা মেলবোর্ন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ ক্রিকেট স্টেডিয়ামটির রূপ-সৌন্দর্যে মুগ্ধ হবেন যে কেউ। চার তলাবিশিষ্ট প্রায় ১০০ ফুট উচ্চতার মেলবোর্ন ক্রিকেট স্টেডিয়ামের আসনসংখ্যা প্রায় ১ লাখ। আজ পুরো আসন ভরবে কি না, নিশ্চিত নয়। তবে হাজারদশেক বাঙালি উপস্থিত হবেন প্রিয় দলকে সমর্থন জোগাতে এটা নিশ্চিত। ক্যানবেরার মানুকা ওভালে সম্পূর্ণ দেশি আবহে খেলে যে সুবিধা পেয়েছিলেন মাশরাফিরা, আজ ওই আবহ দিতে প্রস্তুত মেলবোর্ন। অচেনা এই মেলবোর্নে চেনা প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ খেলতে নামছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলতে এই ম্যাচে জয় চাই টাইগারদের। জিততে মরিয়া টাইগার অধিনায়ক মাশরাফিও। পুরো দলের ভাবনায় এখন শুধুই জয়।
ক্যানবেরায় আফগানিস্তানকে হারিয়ে আত্দবিশ্বাস নিয়ে ব্রিসবেনে পা রেখেছিলেন মাশরাফিরা। কিন্তু বৃষ্টির জন্য মাঠে নামা হয়নি। মাঠে লড়াই না হলেও বৃষ্টিভাগ্যে হট ফেবারিট অস্ট্রেলিয়া থেকে ছিনিয়ে এনেছে ১ পয়েন্ট। ব্রিসবেনে খেলতে না পারায় আক্ষেপ রয়েছে টাইগার অধিনায়কের। আজ নামবেন ক্রিকেটের স্বর্গ মেলবোর্নে। প্রতিপক্ষ কুমার সাঙ্গাকারা, মাহেলা জয়বর্ধনের শ্রীলঙ্কা। এ ম্যাচ জিতলে কোয়ার্টার খেলা অনেক সহজ হয়ে যাবে বাংলাদেশের। এই স্বপ্নে বিভোর ১৬ কোটি ক্রিকেটপ্রেমী। তা খুব ভালো করে জানেন টাইগার অধিনায়ক। জানেন বলেই জয় চাইছেন আজকের ম্যাচে, 'শ্রীলঙ্কা ম্যাচে জয় ছাড়া কিছুই ভাবছি না। যদি ভাবনায় জয়ের কথাই থাকে, তাহলে চাপে পড়ে যাব আমরা। সত্যি বলতে, এ চাপটা নিতে চাই না। খেলায় হার-জিত আছেই। তা মেনেই আমরা পরিকল্পনা এঁকেছি। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চাই। যদি পরিকল্পিত ক্রিকেট খেলতে পারি, তাহলে ম্যাচের ফল অটোমেটিক্যালি আমাদের ফেভারে চলে আসবে।'
ব্রিসবেনে খেলতে না পারার আক্ষেপ হয়তো সারা জীবন পোড়াবে মাশরাফিকে। দলের অনেকেই হয়তো ক্যারিয়ারে আর কোনো দিন ব্রিসবেনে খেলার সুযোগ পাবেন না। না খেলার আক্ষেপ থাকবে তাদেরও। সেই আফসোস ঘোচাতে মেলবোর্নে খেলার জন্য মুখিয়ে আছেন সবাই। যদিও সাকিব ছাড়া অন্য কোনো টাইগার ক্রিকেটারের খেলার কোনো অভিজ্ঞতা নেই এখানে। তাই মেলবোর্নে এসে গত দুই দিন টাইগার ক্রিকেটাররা চেষ্টা করেছেন মাঠ ও কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে। উইকেটের আচরণ বুঝতে চেষ্টা করেছেন ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ দেখে। ম্যাচটি দেখে টাইগার অধিনায়কের মনে হয়েছে এখানে রান করা খুব কষ্টকর নয়, 'এখানে আমরা কখনো খেলিনি। উইকেটের আচরণ বোঝার জন্য আমরা খেলাগুলো দেখেছি। এ অভিজ্ঞতাটুকুই কাজে লাগাতে চাই ম্যাচে। এখানে রান উঠছে। ব্যাটসম্যানদের রান করতে হবে।' এ মাঠে না খেলার অভিজ্ঞতা এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পরিসংখ্যানের তুল্যমূল্যে পিছিয়ে থাকায় কোনো চাপ থাকবে না দলের ওপর, 'আফগানিস্তান ম্যাচের আগেও অনেক নেতিবাচক কথা শুনেছিলাম। কিন্তু আমরা সবকিছু ভুলে মাঠে নেমে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আমাদের অতীত কী, তা নিয়ে ভাবতে চাইছি না। আমরা যদি সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারি, তাহলে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।'