দল জয় পেলে ভুলগুলো আর চোখে পড়ে না। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে জয়ের পর তাই মুশফিকের আক্ষেপও ততটা গুরুত্ব পায়নি। ব্যাটিং অর্ডারের ছয় নম্বরে নামানোর জন্য মনঃক্ষুণ্ন্ন হয়েছিলেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক। যদিও আফগানদের বিরুদ্ধে মুশফিকের ব্যাটেই লড়াইয়ের পুঁজি পেয়েছিল টাইগাররা। তবে ছয়ের পরিবর্তে মুশফিককে তিনে নামালে হয়তো টপ অর্ডারের ব্যর্থতাটা চোখে পড়তো না। তাছাড়া বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধান ব্যাটসম্যান তো মুশফিক, তাই তাকে ছয়ে নামানোর যুক্তিটা কী?
নিচের দিকে নামালে মুশফিক ব্যাটিংয়ে সময় কম পান। সেক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ শট খেলতে হয় বেশি। তাই দ্রুত আউট হওয়ার সম্ভাবনাও থেকে যায়। আফগানদের বিরুদ্ধে তিন নম্বরে নামানো হয়েছিল সৌম্য সরকারকে। চারে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ এবং পাঁচে সাকিব। যেকোনো দলের ব্যাটিং অর্ডারে তিন ও চার নম্বর পজিশনটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই দুই পজিশনই তো ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড। আর মেরুদণ্ড দুর্বল হলে সোজা হয়ে দাঁড়ানো কঠিন হয়ে যায়। তিন-চারে নামা ব্যাটসম্যানকে ধৈর্য্য ধরে ইনিংসকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু প্রথম ম্যাচে সৌম্য ও মাহমুদুল্লাহ ব্যর্থ হয়েছেন।
আফগানদের বিরুদ্ধে ম্যাচে ব্যাটিং অর্ডার দেখে যে কারো মনে হতেই পারে, পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্ট। মনে রাখতে হবে, বিশ্বকাপ কিন্তু পরীক্ষা-নিরীক্ষায় জায়গা নয়। বিশ্বকাপের আগে জাতীয় দলের হয়ে মাত্র একটি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা ছিল সৌম্যের। তারপরেও কেন যে তাকে তিন নম্বরে নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল! কিছুদিন আগে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে সিরিজে মাঝে মধ্যে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে তিনে নামানো হয়েছিল। সফলও হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার পরীক্ষিত উইকেটে মুশফিক কিংবা সাকিব-ই তিন নম্বরে মানানসই। তাই তিন ও চার নম্বর পজিশনে মুশফিক-সাকিবকে খেলানোই ভালো হবে। পাঁচ ও ছয় নম্বরে নামানো যেতে পারে সৌম্য ও মাহমুদুল্লাহকে। সেক্ষেত্রে টপ অর্ডারের ব্যর্থতাও অনেকাংশে দূর হতে পারে। যেকোনো দলে টপ অর্ডার ব্যর্থ হলে বড় স্কোর করা অনেক কঠিন হয়ে যায়।
তবে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের বড় সমস্যা পাওয়ার প্লের প্রথম ১০ ওভারে ব্যাটিং নিয়ে। দুই ওপেনার উইকেটে নেমেই যেন শামুকের মতো গুটিয়ে নেন নিজেদের। সে কারণে আফগানদের বিরুদ্ধে ফিল্ডিং রেস্ট্রিকশনের সুবিধাটা নিতে পারেনি বাংলাদেশ। ওই ম্যাচে পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে বাংলাদেশ করেছিল মাত্র ৩৮ রান। দুই ওপেনারের স্ট্রাইকরেটও বিরক্তিকর। আউট হওয়ার আগে তামিম ৫৫ বল খেলে করেছিলেন ২৯ রান, আর বিজয় ৪২ বলে ১৯। শুরুটা খুব বেশি ধীরগতির হলে শেষ দিকে রান তোলা কঠিন হয়ে যায়। তাই উইকেট ধরে রাখার পাশাপাশি দুই ওপেনারকে রানের গতি বাড়ানোর দিকেও মনোযোগী হতে হবে। তা না হলে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে বড় স্কোর করা কঠিন হয়ে যাবে।