ভারত টানা বড় দুই ম্যাচে জয় পাওয়ায় কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়া অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গেছে। সত্যি বলতে কি, পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অসাধারণ খেলেছে তারা। অথচ বিশ্বকাপের আগে ধোনিদের যে পারফরম্যান্স ছিল তা নিয়ে ভারতবাসী চিন্তায় ছিল। ১৯৮৩ ও ২০১১ সালে বিশ্বকাপ জিতলেও এমন দাপুটে জয় খুব একটা ছিল না। এ ধরনের জয়ের পর অনেকে বলছেন, এবারও বিশ্বকাপ জিতবে ভারত। কিন্তু আমি তাদের এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত হতে পারছি না। দেখেন, ক্রিকেট এমন এক খেলা আজ হিরো তো কাল আপনি জিরো হয়ে গেলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কথা বলি, তারা আগের ম্যাচে গেইলের ডাবল সেঞ্চুরির কৃতিত্বে জিম্বাবুয়েকে নিয়ে কী ছেলেখেলাটাই না খেলল। কাল আবার দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে উড়ে গেল। যদিও আমার দৃষ্টিতে ফেবারিট আফ্রিকা ছিল। কিন্তু এতটা সহজভাবে জিতবে তা ভাবতেই পারিনি। এই দক্ষিণ আফ্রিকাকে ভারতের সামনে কতটা না অসহায় মনে হয়েছিল। তাই ক্রিকেটে কে যে কখন হাসবে বা কাঁদবে, বলা মুশকিল। আবারও বলছি, ভারত কোয়ার্টার ফাইনাল খেলবে এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হবে কি না বলা যাচ্ছে না। এখনো খেলতে হবে সংযুক্ত আরব আমিরাত, জিম্বাবুয়ে, আয়ারল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। জানি না কে কী ভাববেন, তার পরও বলছি, পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে যত সহজভাবে হারাক না কেন, বাকি ম্যাচগুলোয় ভারত দাপটের পরিচয় দেবে তা বলা যাচ্ছে না। ক্রিকেট অনিশ্চয়তার খেলা হলেও আমি নিশ্চিত আরব আমিরাতকে হারাতে খুব একটা বেগ পেতে হবে না। ওয়েস্ট ইন্ডিজ তো শক্তিশালী দল। এই ম্যাচে জিততে হলে ভারতকে ব্যাট-বলে অসাধারণ নৈপুণ্য প্রদর্শন করতে হবে। জিম্বাবুয়ে বা আয়ারল্যান্ডকে হালকা করে দেখার উপায় নেই। পচা শামুকে অনেক সময় পা কেটে যায়। আমি দুই দলকে পচা শামুক বলে ছোট করতে চাই না। ভারতের তুলনায় দল দুটি অবশ্যই দুর্বল। কিন্তু নিশ্চয় মাঠে তারা ছেড়ে কথা বলবে না। জিম্বাবুয়ের চেয়ে আমার ভয় আয়ারল্যান্ডকে নিয়ে। আইসিসির সহযোগী দেশ হলেও তারা প্রশংসা করার মতো ম্যাচ খেলছে। গেইলদের বিরুদ্ধে তো বটেই, ম্যাচ জিততে জিম্বাবুয়ে ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সতর্ক হয়ে খেলতে হবে। কোয়ার্টার ফাইনাল হচ্ছে নকআউট পর্ব। এখানে হারলেই বিদায়। তার পরও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ আটে গেলে কিছুটা সুবিধা পাওয়া যায়। আয়ারল্যান্ড টানা দুই ম্যাচ জিতলেও তারা গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হবে না। এ ক্ষেত্রে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার সম্ভাবনা বেশি। দুটো দলকেই অলআউট করেছে ভারত। তার পরও বোলিংয়ে আরও দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। সুতরাং দুই ম্যাচ জিতলেও স্বস্তির কিছু দেখছি না। শিরোপা ধরে রাখতে হলে ভারতকে প্রতিটি ডিপার্টমেন্টে আরও হিংস হয়ে উঠতে হবে।