নামের পাশে অলরাউন্ডার লেখা। অথচ নিজেকে বোলার হিসেবেই ভেবে এসেছেন ক্যারিয়ার জুড়ে। রুয়ান কালপাগে। অর্জুনা রানাতুঙ্গা, অরবিন্দ ডি সিলভা, রোশন মহানামাদের সঙ্গে নিয়মিত খেলতেন শ্রীলঙ্কা দলে। সেই কালপাগে এখন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সহকারী কোচ। চন্ডিকা হাতুরাসিংহের সহকারী হিসেবে কাজ করছেন কালপাগে। বাড়তি কাজ করেন স্পিনারদের সঙ্গে। তাই খুব ভালো করে জানেন সাকিব আল হাসান, আরাফাত সানি, তাইজুল ইসলাম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদদের সামর্থ্য। জানেন বলেই শতভাগ বিশ্বাস করেন, ভালো করার সামর্থ্য রয়েছে স্পিনারদের। কিন্তু বিশ্বকাপে তা সম্ভব হচ্ছে না বিপরীত কন্ডিশনের জন্য। এটা জেনেও নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে দুরন্ত আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলার স্বপ্ন কালপাগের।
ঘরের মাটিতে দুর্বার- নিউজিল্যান্ড সম্পর্কে সবারই এরকম ধারণা। সে ধারণা শতভাগ পূর্ণতা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও আফগানিস্তানকে হারিয়ে। এর মধ্যে শুধু অসিদের বিপক্ষে জয় কিছুটা কষ্টের। কিন্তু বাকি দলগুলোকে দাঁড়াতেই দেয়নি। এমন দুরন্ত ফর্মের ম্যাককালাম বাহিনীর বিপক্ষে লড়াই বুক কাঁপিয়ে দেওয়ারই কথা। অন্য সময় হলে হয়তো হতো। কিন্তু ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অসাধারণ জয়ে টগবগ করছে টাইগারদের আত্মবিশ্বাস। সে আত্মবিশ্বাসের বলিয়ানেই কিউইদের হারানোর স্বপ্ন দেখছেন সহকারী কোচ কালপাগে, 'ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের পর আমাদের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হয়েছে। সেই বিবেচনায় নিউজিল্যান্ড ম্যাচের গুরুত্ব আহামরি নয়। কিন্তু আমরা কোনোভাবেই হালকাভাবে দেখছি না। যে মোমেন্টাম নিয়ে আমরা এসেছি, তা নিয়েই কোয়ার্টার ফাইনাল খেলতে চাই। এজন্য নিউজিল্যান্ডকেও হারাতে চাই।'
নিউজিল্যান্ডকে ঘরের মাঠে হারানো যে কোনো দলের স্বপ্ন। তার ওপর যদি ব্রেন্ডন ম্যাককালামের ব্যাট হয়ে ওঠে নাঙা তলোয়ার। মারমার কাটকাট ব্যাটিংয়ে ম্যাককালাম প্রতিপক্ষের বোলারদের নাভিশ্বাস তুলছেন হামেশা। এ নিয়ে মোটেই চিন্তিত নন কালপাগে, 'ম্যাককালামের আমাদের বিপক্ষে প্রমাণ করার বিষয় আছে। সে কিন্তু কখনোই আমাদের বিপক্ষে সফল নয়।' ম্যাককালাম সফল না হওয়ার মূল কারণ টাইগারদের স্পিন। অথচ এ স্পিনকে তেমন ধারালো মনে হচ্ছে না ক্রিকেট মহাযজ্ঞে। এর কারণ কী? কালপাগের সহজ ব্যাখ্যা, কন্ডিশন, 'অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশন স্পিনারদের জন্য পুরোপুরি উপযোগী নয়। আমাদের স্পিনাররা এজন্য সুযোগ পাচ্ছেন না। তাই বলে স্পিনাররা ভালো নন, এটা নয়। তারা অবশ্যই ভালো এবং বহুবার নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ রেখেছেন।' কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠায় খুশি পুরো দেশ। এখন সবার স্বপ্ন আরও সুদূরপ্রসারী। সেমিফাইনালের স্বপ্ন দেখছেন সবাই। কোয়ার্টারে প্রতিপক্ষ ভারত কিংবা অন্য যে কোনো দলই হোক না কেন। কালপাগেও সেই স্বপ্নে রং লাগিয়ে দিয়েছেন, 'আমরা কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছি। পূরণ করেছি টার্গেট। এবার আরও বড় স্বপ্ন দেখতে চাই। সে স্বপ্ন পূরণের জন্য আমরা প্রস্তুত।'
১৯৯৯ সাল থেকে নিয়মিত বিশ্বকাপ খেলছে বাংলাদেশ। ২০০৭ সালে সুপার এইট খেলেছিল। কিন্তু এবারই প্রথম খেলছে কোয়ার্টার ফাইনাল। তাও আবার অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের ভিন্ন কন্ডিশনে। এবার এমন বাঁধভাঙা ক্রিকেট খেলছেন মাশরাফিরা, তাদের নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে প্রতিপক্ষ। সঙ্গে সঙ্গে পই পই করে বাড়ছে বাজিকরদের বাজির পরিমাণও।