ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক সভাপতি শ্রীনিবাসনের সঙ্গে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্বের কারণে আইসিসির সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন বাংলাদেশের পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ম্যাচে আম্পায়ারদের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে কথা বলায় বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হাতে ট্রফি তুলে দিতে পারেননি কামাল। জোর করে মুস্তাফা কামালের অধিকারকে কেড়ে নিয়ে ছিলেন শ্রীনিবাসন। তারপর প্রকাশ্য শ্রীনির বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ান কামাল। বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের মন জয় করে নেন বিসিবির সাবেক এই সভাপতি।
কিন্তু একই কারণে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড কিংবা ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে তার বিরাগভাজন হওয়ার কথা! কিন্তু না। উল্টো আজকের আইপিএল ফাইনাল দেখার জন্য ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড-বিসিসিআই মুস্তফা কামালকে আমন্ত্রণ জানিয়ে বুঝিয়ে দিলেন কামাল কোনো ভুল করেননি। শুধু তাই নয়, মুস্তফা কামাল যে ভারতের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি তা বোঝা যায় দেশটির সবচেয়ে জনপ্রিয় পত্রিকায় কামালের নিউজের কাভারেজ দেখে। 'আনন্দবাজার পত্রিকা' গতকাল তাদের শেষ পাতার অর্ধেকটা জুড়ে ছাপিয়েছে কামালের সাক্ষাৎকার। পরিবারসহ তোলা বড় এক ছবিও ছাপা হয়েছে। মুস্তফা কামালও তার সাক্ষাৎকারে বলেছেন নির্ভীক অনেক কথা। এখানেই বোঝা যায়, মুস্তফা কামাল ভারতে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বর্তমানে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি জগমোহন ডালমিয়া। বিসিসিআইয়ের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল শ্রীনিকে। মুস্তফা কামালের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ায় ভারতেও শ্রীনির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়। কেননা কামালের দাবিগুলো ছিল খুবই যৌক্তিক। তিনি বিশ্ব মিডিয়ায় তার কথা সাহসের সঙ্গে বলেছেন। কামালের কথা নিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছিল বিশ্বকাপের সময়। হয়তো অনেকে অনুসন্ধান করেও দেখেছেন যে কামালই সঠিক। সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমীরাও এটা হয়তো বুঝতে পেরেছিলেন। তাই দেখা যায়, অস্ট্রেলিয়া চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর যখন কামালের পরিবর্তে মঞ্চে শ্রীনি উঠেছিলেন তখন গ্যালারি থেকে দুয়ো ধ্বনি ভেসে আসছিলেন। শচীন টেন্ডুলকারের সহযোগিতায় কোনো রকমে সেদিন মাঠ থেকে পালাতে হয়েছিল শ্রীনিকে। শ্রীনির সঙ্গে সরাসরি দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ার পরও ভারত-বাংলাদেশের ক্রিকেট সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়েনি। উল্টো জগমোহন ডালমিয়ার কারণে বর্তমানে প্রতিবেশি দুই দেশের সম্পর্ক আরও মধুর হচ্ছে। আগামী মাসে বাংলাদেশে খেলতে আসছে ভারত। এই সফরের পর হয়তো সম্পর্কটা আরও ভালো হবে।