না, হলো না। ম্যাচে নামার আগে বুধবার অধিনায়ক মামুনুল বলেছিলেন জয় দিয়েই বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের মিশন শুরু করবেন। না, ঘরের মটিতে বাংলাদেশ জিততে ব্যর্থ হয়েছে। গতকাল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত গ্রুপের উদ্বোধনী খেলায় তারা কিরগিজস্তানের কাছে ১-৩ গোলে হেরে যায়। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের পেছনে থাকা কিরগিজস্তান ১১ মাস ধরে আন্তর্জাতিক ম্যাচ থেকে বিরত। অর্থাৎ সুবিধাজনক স্থানে থেকে মামুনুলরা ঘরের মাঠে নেমেছিলেন। প্রীতি ম্যাচে সিঙ্গাপুর ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে গোল পেয়েও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। এরপরও মামুনুল বলেছিলেন এতে আমাদের উপকার হয়েছে। কারণ ভুলত্রুটি শুধরিয়ে পুরো প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামতে পারব। কিন্তু সেই খেলা কি খেলতে পেরেছেন তারা। কিরগিজস্তানকে গ্রুপে সবচেয়ে দুর্বল দল ভাবা হয়েছিল। অথচ এই দলের কাছে মামুনুলদের অসহায় চেহারা দেখে দর্শকরা হতাশ।
১৬ জুন ঘরের মাটিতে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ তাজিকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ। এখন সেই খেলায় মামুনুলরা দাঁড়াতে পারবে কিনা কাল হারের পর ভয় ঢুকে গেছে। ক্রুইফের টার্গেট গ্রুপে তিনে থাকা। কিন্তু এই পারফরম্যান্স দিয়ে লক্ষ্য পূরণ করা কি সম্ভব। সকালে বৃষ্টি হওয়াতে মাঠ পিচ্ছিল হয়ে পড়েছিল। মনে হচ্ছিল কিরগিজরা এতে সমস্যার মধ্যে পড়বেন। না, উল্টো বাংলাদেশকে দেখা গেল এলোমেলো খেলা খেলতে। পরিকল্পনাহীন খেলা দেখে দর্শকরা বিরক্ত হয়ে যাচ্ছিলেন। ডিফেন্স, মধ্যমাঠ বা আক্রমণ কোনো লাইনে বাংলাদেশের সমঝোতা দেখা যায়নি। হতাশা বলতে যা বোঝায় তাই দর্শকরা দেখলেন মামুনুল-এমিলিদের প্রথম ম্যাচে। ৯ মিনিটে ডি-বক্সে বাইরে চমৎকার ফ্রি কিকে ডামিনিয়া গোল করে কিরগিজস্তানকে এগিয়ে রাখেন। ২৮ মিনিটে ইয়াসিন মুন্না ডি-বক্সে ভিক্টরকে ফাউল করলে সিঙ্গাপুরের রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দেন। এনগালের শর্ট প্রথম প্রচেষ্টায় গোলরক্ষক লিটন রুখে দিলেও পরবর্তিতে বল জালে জড়িয়ে যায়। ৩২ মিনিটে বাংলাদেশ অবশ্য ব্যবধান কমায়। মামুনুলের কর্নার ডানিরি হেড করে বল ক্লিয়ার করতে গেলে নিজের জালেই বল পাঠিয়ে দেন। গোল খেয়ে আরও সক্রিয় হয়ে উঠে কিরগিজস্তান। ৪১ মিনিটে ডামিনিয়া চমৎকারভাবে জালে বল পাঠালে প্রথমার্ধেই কিরগিজরা ৩-১ গোলে এগিয়ে থাকে।
দ্বিতীয়ার্ধেও ম্যাচ ছিল কিরগিজস্তানের নিয়ন্ত্রণে। লম্বা পাসে বার বার তারা বাংলাদেশের রক্ষণভাগ ভেঙে দিচ্ছিল। অসংখ্য গোলের সুযোগ পেলেও গোলরক্ষক লিটনের দৃঢ়তায় ব্যবধান আর বাড়ানো যায়নি, তবে বাংলাদেশও আক্রমণ চালিয়েছে মাঝেমধ্যে। কিন্তু সুঠামদেহের অধিকারী কিরগিজদের সঙ্গে পেরে উঠতে পারেনি। অপেক্ষাকৃত দুর্বল দলের কাছে অসহায় আত্দসমর্পণ। সামনে খেলতে হবে শক্তিশালী তাজিকিস্তান, জর্ডান ও এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। এই শক্তি নিয়ে মামুনুলরা গোলের বন্যায় ভেসে না যায় সেটাই এখন চিন্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে।