পাঁচ দিনের টেস্টের প্রায় তিন দিন খেলা হয়নি বৃষ্টিতে। দুই দিন হয়েছে নির্ঝঞ্ঝাট। তাতেই হারের শঙ্কায় পড়েছিল বাংলাদেশ। এমন অবস্থার জন্য বোলারদের ওপর নাখোশ হয়েছেন বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। না হারলেও আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে নতুন পরিকল্পনা করে নামার কথা বললেন বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেট দলের অধিনায়ক -
ব্যাটসম্যানরা অনেক বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন...
আমাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল ২৬৩ রান পার করা। সেটা হয়নি। কিছু কিছু ব্যাটসম্যান ভালো খেলেছে। কিন্তু সেট হয়ে আউট হয়েছেন। এমন উইকেটে সেট হয়ে আউট হলে পরে কঠিন হয়ে পড়ে। ইমরুল ভালো ব্যাটিং করেছেন। অনেকে ৩০-৪০'র ঘরে আউট হয়েছেন। তবে অ্যাপ্রোচ ভালো ছিল ব্যাটসম্যানদের। লিটন ভালো ব্যাটিং করেছেন। তবে ফলোঅন এড়ানোই প্রধান লক্ষ্য ছিল।
সবাই যেভাবে শট খেলেছেন...
এভাবে খেলে ওরা আগে রান করেছেন। তারপরও বলবো অফ স্পিনারদের বিপক্ষে একটু সতর্ক হয়ে ব্যাটিং করা উচিত ছিল। সেট ব্যাটসম্যানরা ওভাবে না খেললেও পারতেন। আমি মনে করি ভুল করেছে বলেই দুজন ওভাবে আউট হয়েছেন।
দলের ব্যাটিং চিত্রটা এমন কেন হলো?
চতুর্থ-পঞ্চম দিন রক্ষণাত্মক মানসিকতায় খেলার পরিকল্পনা থাকতে হয়। কখন প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করবেন, কখন রক্ষণাত্মক থাকবেন, কখন রান করবেন, এগুলো পরিকল্পনায় থাকতে হবে। আমাদের ব্যাটসম্যানদের এসব বুঝা উচিত ছিল। ৮ জন ব্যাটসম্যান নিয়ে আমাদের ফলোঅন এড়ানো উচিত ছিল। কিন্তু সেটা হয়নি। তবে এটা ঠিক গত কয়েকটি টেস্টে আমাদের ব্যাটিংয়ে উন্নতি হয়েছে। তবে বোলিংয়ে আরও উন্নতি করতে হবে।
আপনাদের পরিকল্পনা কি ছিল?
প্রথম লক্ষ্য ছিল ফলোঅন এড়ানো। দ্বিতীয় লক্ষ্য ছিল যত বেশি ওদের স্কোরের কাছে যাওয়া। ৮ জন ব্যাটসম্যান নিয়ে এটা করা উচিত ছিল। সেটা হয়নি। সুযোগগুলো পেলে আমাদের এসব কাজে লাগাতে হবে।
আঙুলের চোটের কি অবস্থা?
এক-দুবার একটু ব্যথা লেগেছে। তবে চোটের উন্নতি হচ্ছে। আশা করি ওয়ানডে সিরিজের আগে সুস্থ হয়ে যাব। ওয়ানডেতে কিপিং করতে পারব আশা করছি।
বোলিং কম্বিনেশন নিয়ে কিছু বলবেন...
বোলিংটা পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়নি। উইকেট যেমনই হোক, বোলারকে তার নির্দিষ্ট জায়গায় বোলিং করতে হবে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ফিল্ডিং সাজাতে হয়। আপনি এক রকম ফিল্ডিং সাজাবেন, বোলিং করবেন বাজে জায়গায়। এতে কোনো পরিকল্পনাই কাজে লাগবে না। আরেকজন পেসার খেলালে হয়তো ভালো হতে পারত। মানুষ বলে আমাদের ভুল হতেই পারে। একাদশ নির্বাচনে সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেয়।
ভারতের সঙ্গে আমাদের পার্থক্যটা কোথায়?
অবশ্যই স্কিল। দুই দলের স্কিলের পার্থক্য অনেক। হরভজন, অশ্বিনের সঙ্গে আমাদের স্পিনারদের পার্থক্য রয়েছে। পার্থক্য ব্যাটিংয়েও। আমি মনে করি ওদের দলে স্কিল ক্রিকেটার বেশি। আমাদের ব্যাটসম্যানরা কঠোর পরিশ্রম করে প্রতিনিয়ত উন্নতি করছে। তবে বোলারদের আরও উন্নতি করতে হবে।
বাংলাদেশ কি নিজেদের যাচাইয়ের সুযোগ হারিয়েছে?
যাচাই করার একটা সুযোগ ছিল। কিন্তু প্রকৃতির উপরতো কারোর হাত নেই। তবে দুই ইনিংসে ওদের বিপক্ষে কতটা ভালো বোলিং করতে পারি সেটা দেখার ইচ্ছা ছিল।
ওয়ানডে সিরিজ কেমন হবে?
ওয়ানডেতে আমরা অনেক বেশি ধারাবাহিক। হোম কন্ডিশনে আমরা ভালো খেলছি। বিশ্বকাপেও ভালো খেলেছি। আমাদের ব্যাটসম্যান-বোলাররা ফর্মে রয়েছেন। ভারত শক্তিশালী দল হলেও আমরা পরিকল্পিত ক্রিকেট খেললে খুব কঠিন একটা সিরিজ হবে।