ঝড় তুললেন ওয়েস্ট ইন্ডিসের এভিন লুইস, জনসন চার্লস। পাল্টা আঘাতে কাঁপিয়ে দিলেন ভারতের লোকেশ রাহুল, রোহিত শর্মা। রান বন্যার ম্যাচে নায়ক হতে পারতেন তাদের কেউ। কিন্তু শ্বাসরুদ্ধকর শেষ ওভারে সবটুকু আলো কেড়ে নিলেন ডোয়াইন ব্রাভো। ১ রানের নাটকীয় জয়ে নায়ক ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই অলরাউন্ডার।
শেষ ওভারে ভারতের দরকার ছিল ৮ রান, হাতে ৭ উইকেট নিয়ে ব্যাটিংয়ে তখন ক্যারিবীয়দের ওপর চড়াও হওয়া দুই ব্যাটসম্যান লোকেশ রাহুল ও অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। তবে প্রথম চার বলে চার রানের বেশি নিতে পারেনি অতিথিরা। পঞ্চম বলে আসে দুই রান। শেষ বলে টাই করতে অন্তত এক রান দরকার ছিল। কিন্তু ধোনি শর্ট থার্ড ম্যানে ক্যাচ দিলে দারুণ এক জয় পেয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
পুরো ম্যাচে রান হয়েছে ৪৮৯, যেকোনো টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রানের ম্যাচ। এর আগে ২০১০ সালে আইপিএলের আসরে চেন্নাই সুপার কিংস আর রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর মধ্যকার ম্যাচে রান হয়েছিল ৪৬৯। এছাড়া, এই ম্যাচে সেঞ্চুরি হয়েছে দুটি, উইকেট পড়েছে ১০টি আর জয়ের ব্যবধান রানের হিসেবে ন্যূনতম।
আমেরিকার মাটিতে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে আগে ব্যাট করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ নির্ধারিত ২০ ওভারে ২৪৫ রান সংগ্রহ করে। ৬ উইকেট হারিয়ে তোলা তাদের এই রান টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর। এর আগে ২০০৭ সালে শ্রীলঙ্কা ৬ উইকেটে ২৬০ রান তুলেছিল কেনিয়ার বিপক্ষে। আর ২০১৩ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়া ৬ উইকেটে করেছিল ২৪৮ রান।
বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই অজিঙ্কা রাহানে ও বিরাট কোহলিকে হারায় ভারত। তবে রোহিত শর্মার সঙ্গে ৮৯ রানের জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন লোকেশ রাহুল। ২২ বলে অর্ধশতক করা রোহিত ফিরেন ৬২ রান করে। তার ২৮ বলের ইনিংসটি ৪টি করে ছক্কা-চারে সাজানো। রোহিতের বিদায়ের পর অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির সঙ্গে ৮.১ ওভারে ১০৭ রানের দারুণ এক জুটি গড়েন রাহুল। শেষ বলে আউট হওয়ার আগে ২৫ বলে দুটি করে ছক্কা-চারে ৪৩ রান করেন ধোনি। আর রাহুল অপরাজিত থাকেন ১১০ রানে। তার এই ৫১ বলে ইনিংসে ছিল ৫ ছক্কা ও ১২ চারের মার।
এর আগে, ক্যারিবীয়দের হয়ে ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন দুই ওপেনার জনসন চার্লস আর এভিন লুইস। ওপেনিং জুটি থেকেই তারা তুলে নেন ১২৬ রান (৯.৩ ওভার)। চার্লস ৩৩ বলে ৬টি চার আর ৭টি ছক্কায় করেন ৭৯ রান। আর ৪৯ বলে ৫টি বাউন্ডারি আর ৯টি ওভার বাউন্ডারিতে লুইস করেন ১০০ রান। ইনিংসের ১৬তম ওভারে আউট হন এই সেঞ্চুরিয়ান। এছাড়া, আন্দ্রে রাসেল ২২, কাইরন পোলার্ড ২২ আর নতুন দলপতি কার্লোস ব্রাথওয়েইট ১৪ রান করেন।
২০০৭ সালে ভারতের যুবরাজ সিং ইংল্যান্ড পেসার স্টুয়ার্ট ব্রডের এক ওভারে নিয়েছিলেন ৩৬ রান। এই ম্যাচে ১১তম ওভারে ভারতের স্টুয়ার্ট বিন্নি দেন ৩২ রান। তার করা প্রথম ৫ বলেই ছক্কা হাঁকান লুইস। ভারতের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন রবীন্দ্র জাদেজা এবং জাসপ্রিত বুমরাহ। একটি উইকেট পান মোহাম্মদ শামি।
বিডি-প্রতিদিন/২৮ আগস্ট, ২০১৬/মাহবুব