হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে গত বৃহস্পতিবার সকালে ভারতের মুম্বাইয়ে ৫৯ বছর বয়সে মারা যান অস্ট্রেলিয়ার সাবেক কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান ডিন জোন্স।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে চলমান ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) টি-২০ ক্রিকেটের ত্রয়োদশ আসরে ধারাভাষ্যকার হিসেবে স্টার স্পোর্টসের সাথে যুক্ত থাকায় ভারতে অবস্থানকালে একটি হোটেলে মৃত্যু হয় জোন্সের।
স্বামী জোন্সের মৃত্যুতে মুষড়ে পড়েছেন স্ত্রী জেন জোন্স। ৩৪ বছর ধরে জোন্সের সাথে সংসার করছেন জেন। তাই জোন্সের মৃত্যুতে আবেগঘন এক বার্তা দিয়েছেন জেন।
আবেগঘন বার্তায় জেন বলেন, ‘যখন শুনলাম ডিন ভারতে মৃত্যুবরণ করেছে, এটা আমাদের কাছে অবিশ্বাস্য বিষয় ছিল। আমি ও আমার মেয়েরা ভেঙ্গে পড়েছিলাম। আমার ভালোবাসার মানুষ, আমার সুন্দর স্বামী, যে প্রাণশক্তিতে ভরপুর ছিল, সে আমাদের ছেড়ে চলে গেছে, আমরা বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না। আমাদের বিশাল এক শূন্যতায় ফেলে গেল জোন্স। যা কখনো পূরণ হবে না। আমাদের সুন্দর সব স্মৃতি উপহার দিয়ে বিদায় নিয়েছেন তিনি। তাই তার স্মৃতিগুলোই আমাদের জীবদ্দশায় সম্বল হয়ে থাকবে।’
বৃহস্পতিবার সকালে হোটেলে ব্রেকফাস্টের পর হোটেলেই সহকর্মীদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলেন জোন্স। এমন সময়েই হঠাৎই করেই পড়ে যান জোন্স। জোন্সকে মাটি থেকে তোলার চেষ্টা করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পেসার ব্রেট লি। এরপর অ্যাম্বুলেন্সে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় জোন্সকে। সেখানে চিকিৎসকরা জোন্সকে মৃত ঘোষণা করেন।
তাই লির প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং উপমহাদেশের প্রতি ভালোবাসা জানিয়েছেন জেন, ‘জোন্সের মৃত্যুর পরে অনেকে আমাদের খোঁজ নিচ্ছেন। সকলের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। তবে আমরা সবচেয়ে বেশি কৃতজ্ঞ ব্রেট লির কাছে। জোন্সকে বাঁচাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন ব্রেট লি। তার কাছে আমরা কৃতজ্ঞ থাকবো। এছাড়া আমরা উপমহাদেশ থেকে যে ভালোবাসা পেয়েছি, তাতে আমরা আবেগে-আপ্লুত। আমি বলতে চাই, জোন্স উপমহাদেশের ক্রিকেটকে খুব ভালোবাসতেন।’
১৯৮৬ সালে জেনকে বিয়ে করেন জোন্স। মৃত্যুকালে স্ত্রী জেন জোন্স ছাড়াও দুই কন্যা রেখে যান অস্ট্রেলিয়ার এই কিংবদন্তি।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ১৯৮৪ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত ১৬৪টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন জোন্স। ৭ সেঞ্চুরি আর ৪৬ ফিফটিসহ প্রায় ৪৫ গড়ে রান করেছেন ৬০৬৮। এছাড়া ৫২টি টেস্টে প্রায় ৪৭ গড়ে তার সংগ্রহ ৩৬৩১ রান।
‘প্রফেসর ডিনো’ নামে পরিচিত জোন্স ওয়ানডেতে নিজের মারমুখি ব্যাটিংয়ের জন্যই বিখ্যাত ছিলেন। সম্প্রতি তিনি জায়গা পেয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের ‘হল অব ফেমে’ও।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন