ইতিহাস তৈরির সন্ধিক্ষণে দিল্লি ক্যাপিটালস। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের সামনে আবার ট্রফি ধরে রাখার সুযোগ। ৫২ দিনের লম্বা লড়াই শেষে আজ মঙ্গলবার ফাইনাল।
ফাইনালে টস জিতে ব্যাটিং নিলেন দিল্লি অধিনায়ক শ্রেয়স আয়ার। স্কোর বোর্ডে বড় রান করে মুম্বাইয়ের ওপরে চাপ তৈরি করাই লক্ষ্য দিল্লির। আজ ২০০-তম আইপিএল ম্যাচ হিটম্যানের। একই সঙ্গে ফাইনাল। দারুণ এক অনুভূতি নিয়ে নামছেন রোহিত। রাহুল চহারের পরিবর্তে জয়ন্ত যাদব জায়গা পেয়েছেন মুম্বাইয়ের প্রথম একাদশে। দিল্লি শিবির অবশ্য দলে কোনও পরিবর্তন আনেনি। কিন্তু ইনিংসের শুরুতেই ট্রেন্ট বোল্ট আঘাত হানেন দিল্লি শিবিরে।
শিখর ধাওয়ানের সঙ্গে এ দিন ওপেন করতে নামেন মার্কাস স্টোইনিস। আগের ম্যাচেও ওপেন করতে নেমে ঝড় তুলেছিলেন তিনি। এ দিন কিউয়ি পেসারের প্রথম বলেই কুইন্টন ডি’ ককের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন স্টোইনিস। শট খেলবেন কি না, তা নিয়ে দ্বিধায় ছিলেন। শেষ মুহূর্তে খেলতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন স্টোইনিস। খাতাও খোলেননি তিনি। তার ব্যাট থেকে রান চেয়েছিল দিল্লি। অন্যদিকে মুম্বাই এই উইকেটের খোঁজেই ছিল।
শুরুতেই স্টোইনিসের উইকেট হারানোয় ধাওয়ান ও অজিঙ্কে রাহানের ওপরে নির্ভর করেছিল দিল্লি। দুই তারকা ব্যাটসম্যানের অভিজ্ঞতা অনেক। সেই অভিজ্ঞতা দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারতেন তারা। কিন্তু বোল্টের আগুনে বোলিংয়ে রাহানেকেও ফিরতে হল দ্রুত। মাত্র ২ রান করেন রাহানে। ১৬ রানে ২ উইকেট খুইয়ে রীতিমতো চাপে তখন দিল্লি। অধিনায়ক শ্রেয়স নেমেই বিপজ্জনক শট খেলেন। সে যাত্রায় বাউন্ডারি পান তিনি। পরের বলে ক্যাচ তুলেছিলেন শ্রেয়স। ভাগ্য সহায় ছিল। তাই বোল্ট ক্যাচ ধরতে পারেননি।
চতুর্থ ওভারে বুমরাকে সরিয়ে রোহিত আক্রমণে আনেন জয়ন্ত যাদবকে। মুম্বাই অধিনায়কের এ হেন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছিলেন দেশের প্রাক্তন অধিনায়ক সুনীল গাভাস্কার। তার যুক্তি, ২ উইকেট হারিয়ে দিল্লি চাপে পড়ে গেছে। বুমরাকে আক্রমণে রেখে দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু ধাওয়ানের মতো অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানও ধৈর্য হারিয়ে হতশ্রী শট খেলে দলকে আরও বিপন্ন করলেন। জয়ন্তর বল ভেঙে দেয় ধাওয়ানের (১৫) উইকেট। ৪ ওভারে দিল্লি তখন ৩ উইকেটে ২৫।
দিল্লিকে লড়াই করার মতো স্কোর বোর্ডে রান করতে হলে ঋষভ পন্থ ও শ্রেয়সকে ক্রিজে টিকে থাকতে হবে। চাপ কাটানোর জন্য পাল্টা মারের খেলা শুরু করতে হবে। দিল্লির দুই তরুণ ব্যাটসম্যান ইতিবাচক মানসিকতা নিয়েই খেলতে নেমেছেন। পন্থ সহজাত আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করছেন। দশম ওভারে ক্রুনাল পাণ্ড্যকে দুটো ছক্কা হাঁকিয়ে আত্মবিশ্বাস ফিরে পান। তার আক্রমণাত্মক ব্যাটিং চাপে ফেলে দেয় মুম্বাইকে। কুল্টার নাইলের ওভারে দুটো বাউন্ডারি মেরেও উইকেট ছুড়ে দিয়ে এলেন। এই কারণেই পন্থ অতীতেও সমালোচিত হয়েছেন। এ দিন ক্রিজে জমে গিয়েছিলেন তিনি। শ্রেয়সের সঙ্গে ৯৬ রানের পার্টনারশিপ গড়া হয়ে গিয়েছিল পন্থের। আরও কিছুক্ষণ টিকে থাকলে দিল্লি আরও বেশি রান তুলতেই পারত। ৫৬ রানে আউট হয়ে পন্থ যখন ডাগ আউটে ফিরছেন তখন তাঁর চোখে মুখে হতাশা। ১৫ ওভারে দিল্লির রান ৪ উইকেটে ১১৮।
এবারের আইপিএলে এখনও পর্যন্ত মুম্বাইকে এক বারও হারাতে পারেনি দিল্লি। বরং ৩ সাক্ষাতেই হেরেছে। ফাইনালের প্রথম বল খেকেই চ্যাম্পিয়নের মতো খেলতে শুরু করেছে রোহিতের দল।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ