করোনাল হোল এবং এর প্রভাবে সৃষ্ট সৌর বায়ু প্রমাণ করে যে, সূর্যের বায়ুম-ল অত্যন্ত গতিশীল এবং এর প্রভাব পৃথিবীর মহাকাশীয় পরিবেশের ওপর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
সম্প্রতি সূর্যের বায়ুম-লে বিশাল এক গর্তের ছবি ধারণ করে নাসার ‘সোলার ডায়নামিক্স অবজারভেটরি’ মিশন। প্রায় ৫ লাখ কিলোমিটার প্রশস্ত গর্তটি দেখতে প্রজাপতির মতো। এ ঘটনাটি মহাকাশ বিজ্ঞানীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি করেছে, কারণ বিশাল আকৃতি এবং পৃথিবীর আবহাওয়ার ওপর এর সম্ভাব্য প্রভাব।
করোনাল হোল : সূর্যের রহস্যময় ফাঁকা অংশ
সূর্যের বাইরের স্তর বা বায়ুম-লে যে উন্মুক্ত গর্ত দেখা যায়, তাকে বলা হয় ‘করোনাল হোল’। এই গর্তগুলোতে সূর্যের চৌম্বক ক্ষেত্র খুলে যায়, ফলে সৌর বাতাস উচ্চ গতিতে মহাকাশে বেরিয়ে আসে। টেলিস্কোপে এগুলোকে অন্ধকার দেখায়, কারণ অন্যান্য অঞ্চলের মতো এখানে উত্তপ্ত প্লাজমা থাকে না। প্রজাপতির আকৃতির এ করোনাল হোলটির বিশাল আকারের কারণে মহাকাশপ্রেমী ও বিজ্ঞানীদের কাছে অনন্য হয়ে উঠেছে।
পৃথিবীর ওপর এর প্রভাব : ভূ-চৌম্বকীয় ঝড়
করোনাল হোল থেকে নির্গত গ্যাস পৃথিবীতে পৌঁছালে তা পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া ঘটায়। ফলে ভূ-চৌম্বকীয় ঝড় তৈরি হতে পারে, যা জি১ থেকে জি২ মাত্রার হয়ে থাকে। এই ধরনের ঝড় পৃথিবীর স্যাটেলাইট যোগাযোগব্যবস্থা এবং প্রযুক্তিগত ব্যবস্থার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। এক্ষেত্রে, ‘রাসেল-ম্যাকফেরন প্রভাব’ নামে একটি বিশেষ ঘটনা এই ঝড়ের সম্ভাবনা আরও বাড়িয়ে তোলে। এটি এমন একটি অবস্থা যখন বিষুব (Equinox)-এর কাছাকাছি সময়ে সূর্যের এবং পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের মধ্যে সংযোগ বৃদ্ধি পায়। ফলে, এ সময়ে সৌর বায়ু পৃথিবীতে পৌঁছালে চৌম্বকীয় গোলযোগের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
তথ্যসূত্র : বিবিসি