চট্টগ্রাম নগরীর রেলওয়ে স্টেশনের মধ্যে নির্মিত ফুটওভার ব্রিজটির ব্যবহার চলছে ব্রিটিশ আমল থেকেই। ব্রিজটির ওপর দিয়ে এলাকার শিক্ষার্থী, অতিপ্রাচীন ২২ মহল্লার বাসিন্দাদের চলাচল, চৈতন্যগলির কবরস্থানে লাশ আনা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের চলাচলে নির্ভরযোগ্য এটি। কিন্তু রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ হঠাৎ করেই ব্রিজটি বন্ধ করে দেয়। ফলে চরম বিপাকে পড়েন সবাই। এক ফুটওভার ব্রিজেই নাভিশ্বাস ওঠে সব ব্যবহারকারীর। ফুটওভার ব্রিজ বন্ধে আগাম কোনো নির্দেশনাও দেওয়া হয়নি।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, কে বা কারা ফুটওভার ব্রিজ থেকে কোনো অপকর্ম করেছে। কিন্তু এর খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। নিরাপত্তার বিষয়টি সামনে এলে রেল কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তার স্বার্থে নিজস্ব সিকিউরিটির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে। এটাই তো নিয়ম। কিন্তু এখন রেল কর্তৃপক্ষ তা না করে উল্টো সাধারণ মানুষকে ভোগান্তির শিকার করছে।
জানা যায়, গত ৩১ অক্টোবর কে বা কারা ওভারব্রিজ থেকে প্ল্যাটফরমে রাখা ট্রেনে ককটেলসদৃশ বস্তু ছুড়ে মারে। এরপর থেকেই রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ওভারব্রিজটি বন্ধ করে দেয়। কিন্তু এ ব্রিজটি স্থানীয়ভাবে বেশ ব্যস্ত। এ ব্রিজ দিয়ে দৈনিক যাতায়াত করে হাজার হাজার শিক্ষার্থী। ব্রিজের দক্ষিণ এলাকায় থাকা চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল, পিটিআই স্কুল, রেলওয়ে স্টেশন কলোনি উচ্চ বিদ্যালয়, সিটি গার্লস উচ্চ বিদ্যালয়, বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মহিউস সুন্নাহ মাদরাসা, আল হামিম মাদরাসার শিক্ষার্থীরা ব্রিজটি ব্যবহার করে। তাছাড়া, ২২ মহল্লা এলাকা, রেলওয়ে স্টেশন কলোনি, উত্তর নালাপাড়া, দক্ষিণ নালাপাড়া, কামাল গেট, দারগাখোলা, পূর্ব মাদারবাড়ি এবং সদরঘাট এলাকার মৃতদের লাশ রেলওয়ে স্টেশন ফুটওভার ব্রিজ দিয়েই চৈতন্যগলির করবস্থানে নেওয়া হয়। একই সঙ্গে নগরের ব্যস্ততম ফলমন্ডি, রিয়াজউদ্দিন বাজার ও নিউমার্কেটের ব্যাবসায়ীরা এ ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করে আসা-যাওয়া করেন।
বাংলাদেশ রেলওয়ে স্টেশন কলোনি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজাদ হোসেন বলেন, স্টেশন এলাকার অতি ব্যস্ততম ফুটওভার ব্রিজটি দিয়ে সব শিক্ষার্থী চলাচল করে। কিন্তু এটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন শিক্ষর্থীরা। ভোগান্তিতে পড়ছেন গার্মেন্ট শ্রমিকরাও। সকাল-বিকাল ও রাতে আসা-যাওয়ার সময় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের। অতীতে এমন ঘটনা আর ঘটেনি। এই ফুটওভার ব্রিজ দিয়ে ট্রেনের অসংখ্য যাত্রীও আসা-যাওয়া করে। এখন সবাইকে পুনরায় নিউমার্কেট মোড় ঘুরে আসতে হয়। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আতা উল্লাহ চৌধুরী বলেন, ব্রিজটি খুলে দেওয়ার জন্য আমরা রেল কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করেছি। তারা বলেছে, কয়েক দিন পর খুলে দেবে। তবে এখন মানুষের কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার জাফর আলম বলেন, গত মঙ্গলবার ওভারব্রিজ থেকে প্ল্যাটফরমে রাখা ট্রেনে ককটেলসদৃশ বস্তু ছুড়ে মারা হয়। এরপর থেকে ট্রেন এবং যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ওভারব্রিজটি সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেলে আবারও খুলে দেওয়া হবে।