বুধবার, ৩ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা
সুস্বাস্থ্য

শীতে নাক, কান ও গলার সমস্যা

অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটু, নাক-কান-গলা রোগ বিশেষজ্ঞ

শীতে নাক, কান ও গলার সমস্যা

শীত মৌসুম প্রায় চলেই এলো। হেমন্তে দিনের বেলা গরম কিন্তু রাতের বেলা বয়ে যায় হিমেল পরশ। আবহাওয়ার এমন পরিবর্তন এবং পরিবেশ দূষণসহ নানা কারণে এ মৌসুমে নানা রোগব্যাধি দেখা দেয়। এ সময় নাক, কান, গলার নানা সমস্যা যেমন- সর্দি-কাশি, অ্যালার্জি, টনসিল ইত্যাদি হয়ে থাকে।

 

গলাব্যথা ও খুসখুস করা

একটি সমস্যা প্রায়ই হয়, যা পূর্ববর্তী নাকের সমস্যা থেকে আসতে পারে অথবা সরাসরি হতে পারে। তা হলো গলায় প্রদাহ বা ক্রনিক ফেরিনজাইটিস। গলা খুসখুস করা, ঠান্ডায় কাশি হওয়া এমনকি রাতে ঘুমের মধ্যে দম বন্ধ হয়ে আসার মতো সমস্যা হয়। কাশি অনেক সময় প্রচন্ড আকার ধারণ করে, তবে কাশি সাধারণত শুকনো থাকে। গরম ভাঁপ নিলে বা গড়গড়া করলে এবং ঠান্ডা এড়িয়ে চললে এর সমাধান পাওয়া যায়। পাশাপাশি ঘরের মধ্যে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস ঢুকলে এবং ঘরের মধ্যে যে ধুলোবালি জমে, যেমন- লেপ-তোশক, কম্বল, বই, কার্পেট, সোফা, পোশাক, ভারী পর্দাগুলো পরিষ্কার করতে হবে বা সপ্তাহান্তে রোদে দিতে হবে।

 

নাক দিয়ে রক্ত ঝরা

শীতকালে বাতাস শুষ্ক হয়ে যায়, বাচ্চারা বারবার নাকে হাত দেয়, সর্দি হলে বারবার নাক মোছে বলে এমন সমস্যা হয়। বাচ্চাদের নাক ঝাড়তে শেখানো উচিত এবং নাকে হাত দেওয়া বন্ধ করতে হবে। সঙ্গে বাচ্চাদের নাকে ভ্যাসলিন বা পেট্রোলিয়াম জেলি দিতে হবে। নাক দিয়ে রক্ত পড়লে অভিভাবকদের বাচ্চার নাকের নরম অংশটা দুই আঙুল দিয়ে বেশ শক্তভাবে চেপে ধরতে হবে কমপক্ষে ৫-১০ মিনিট এবং প্রাথমিক চিকিৎসায় কাজ না হলে অথবা সমস্যা যদি ঘন ঘন হয় অথবা আকার ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে তবে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।

 

টনসিল ও এডেনয়েডে সমস্যা

অনেক বাচ্চারই শীতকালে টনসিল এবং এডেনয়েডের সমস্যা দেখা দেয়। টনসিলের সমস্যা হলে- গলাব্যথা করে, ঢোক গিলতে অসুবিধা হয়, বাচ্চারা খেতে চায় না, জ্বর জ্বর ভাব বা প্রচন্ড জ্বর পর্যন্ত হতে পারে। সঙ্গে শারীরিক অসুস্থতা যেমন বাচ্চা দুর্বল হয়ে পড়ে, খেলাধুলা বন্ধ করে দেয়। এমন সমস্যায় বাচ্চাকে কুসুম লবণ গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করাতে পারেন। মনে রাখতে হবে, ছোট বাচ্চারা গড়গড়া করতে পারে না। এ ক্ষেত্রে ডাক্তার দেখাতে হবে। ঠান্ডা খাবার এড়িয়ে চললে ভালো ফল পাওয়া যায়।

 

কণ্ঠনালির সমস্যা

নাকের সমস্যা স্বরনালিতে এক্সটেনশন হয়ে গলার স্বর বসে যাওয়া বা গলা দিয়ে কথার স্বর না বের হওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে। এ সমস্যাগুলো নাকের সমস্যার পরবর্তীতে হতে পারে অথবা সরাসরি হতে পারে। আমরা অনেক সময় কথা বন্ধের নামে ফিসফিস করে কথা বলি যা আসলে আরও খারাপ পরিণতি হয়। গলার স্বরযন্ত্রের জন্য কথা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে। ফিসফিস করে কথা বলা যাবে না। কয়েক দিন কথা বন্ধ রাখার পর গলার স্বর যদি সম্পূর্ণ ফেরত না আসে তবে ডাক্তার দেখিয়ে পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত।

 

কানের সমস্যা

সাধারণত যা হয় তা হলো নাকের সর্দি কানে অ্যাফেক্ট করে। ফলে কান বন্ধ, কানে কম শোনা, কানে প্রচন্ড ব্যথা থেকে শুরু করে কানের পর্দা ফেটে গিয়ে কান দিয়ে পুঁজ বা পানি পড়তে পারে। এ সমস্যা প্রতিরোধ করতে হলে নাকের সমস্যা ও অ্যালার্জি প্রতিরোধ করতে হবে। তাই এ সময়ে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর