বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ ০০:০০ টা

ডাকসু সংগ্রহশালা

ডাকসু সংগ্রহশালা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) কার্যকর নেই দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে। কিন্তু ডাকসুর সমস্ত স্মৃতিচিহ্ন এবং এ দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষিত রয়েছে ডাকসু সংগ্রহশালায়।

১৮৮৩ সাল থেকে এ দেশের মুদ্রা, দুর্লভ আলোকচিত্র, পুস্তক, কোলাজ পদ্ধতির পোস্টার, পত্রিকা কাটিং, ভাষা শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহৃত জিনিসপত্র ইত্যাদি ইতিহাসের উপাদান সংরক্ষিত আছে এখানে। তাই এটিকে অনেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'মিনি জাদুঘর' হিসেবে অভিহিত করে। ১৯৯২ সালের ৭ জানুয়ারি ডাকসু ভবনের নিচতলায় ছোট্ট একটি কক্ষে যাত্রা শুরু করে এ সংগ্রহশালা। তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মিঞা এর উদ্বোধন করেন। ডাকসু সংগ্রহশালায় প্রবেশের আগে চোখে পড়ে ভবনের দেয়ালে অাঁকা ভাষা শহীদদের ম্যুরাল 'চেতনায় একুশ'। ভেতরে প্রবেশ করলেই বিভিন্ন সময়ের ছাত্র নেতা, রাজনীতিবিদ, শহীদ, শিক্ষাবিদ, দার্শনিকদের ছবি দৃষ্টি কেড়ে নেয়। সংগ্রহশালার এক কোনায় রয়েছে ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক আমতলার সেই আমগাছের ধ্বংসাবশেষ। কাচের তৈরি একটি বঙ্ েরাখা হয়েছে এটি। কক্ষের ভেতরে চোখ বোলালেই দেখা মিলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি। দেয়ালের সব জায়গায় রাখা হয়েছে বিভিন্ন তথ্য সংবলিত আলোকচিত্র। এ ছাড়া এখানে রয়েছে ৩৫ জন ভাষাসৈনিকের মুদ্রিত সাক্ষাৎকার, ভাষা আন্দোলনকেন্দ্রিক ২৯টি পোস্টার, ভাষাসৈনিকদের ১৫টি আলোকচিত্র, মুক্তিযুদ্ধের তথ্যসংবলিত ছবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত বিভিন্ন ঐতিহাসিক মুহূর্তের আলোকচিত্র, ভাষাসৈনিক আবুল কাসেম ও খালেক নওয়াজ খানের ব্যবহৃত জিনিসপত্র, প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামের ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার, প্রচারপত্র, স্মারকলিপি ইত্যাদি। সব মিলিয়ে পুরো সংগ্রহশালা যেন দেশের শিল্প, সংস্কৃতি এবং ইতিহাস-ঐতিহ্যের এক অপরূপ সমন্বয়ের বহিঃপ্রকাশ। শুরু থেকেই যে মানুষটি অক্লান্ত পরিশ্রম আর নিরন্তন প্রচেষ্টায় ডাকসু সংগ্রহশালা আজ এত সমৃদ্ধ- তিনি হচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধা গোপাল দাস। তার চিন্তা-চেতনায় যেন এ দেশের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার স্পৃহা। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর যখন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করতে একটি মহল অপচেষ্টা চালায়, তখন ডাকসু সংগ্রহশালা শিক্ষার্থীদের সঠিক ইতিহাসের দিশা দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, জীবনের সবটুকু সময় এই সংগ্রহশালার পেছনে দিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এবং ডাকসুর কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক কামালউদ্দিন আহমেদের আন্তরিক সহযোগিতায় সংগ্রহশালা অত্যন্ত ভালোভাবে চলছে বলে তিনি জানান।

 

সর্বশেষ খবর