অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল একজন জনপ্রিয় শিক্ষাবিদ ও লেখক। যিনি অনেক কষ্ট করে বড় হয়েছেন। দেশের যে কোনো সমস্যা সংকটে তিনি থাকেন। তিনি আমাদের স্বপ্ন দেখান আবার হতাশা থেকে বেরিয়ে আশার আলোর দিকে নিয়ে যান।
নিউজ টোয়েন্টিফোরের জন্য সামিয়া রহমানের নেওয়া সাক্ষাত্কারটি পত্রস্থ হলো।
আমি তখন ইউনিভার্সিটিতে কেবল যোগ দিয়েছি। আপনার সঙ্গে বইমেলায় দেখা হলো। আমি আপনাকে গিয়ে বললাম, স্যার আমি আপনাকে খুব পছন্দ করি। তখন আপনি বলেছিলেন আপনার তো মানসিক পরিপক্বতা হয়নি।
খুবই ভালো কথা। যখন আমি কথাটা বলেছিলাম সেটা কিন্তু নেতিবাচকভাবে বলিনি। আসলে আমি তো ছোট বাচ্চাদের জন্য লেখি। একজন মানুষের স্বভাবে যদি তার শৈশবটা বেঁচে থাকে তাহলে বড় একটা সৌভাগ্য। আমরা ভাব দেখাই আমরা সবাই বড় হয়ে গেছি, কিন্তু আমাদের সবার মধ্যে কিন্তু একটা ছোট বাচ্চা আছে। তাকে আমরা সম্মান দিই কিনা সেটাই ব্যাপার।
আপনার বেড়ে ওঠার গল্প শুনতে চাই। অনেক কষ্টের মধ্যেও আপনার ভাইবোনরা প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।
এখন যখন অন্যদের সঙ্গে তুলনা করি তখন মনে হয়—হ্যাঁ তাইতো কষ্টইতো ছিল। তখন কিন্তু কষ্ট মনে হয়নি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় যখন আমার বাবাকে মেরে ফেলেছিল তখন আমাদের পরিবার কষ্টের মধ্যে পড়েছিল। তখন আমার মা আমাদের রক্ষা করেছেন। মাঝে-মধ্যে চিন্তা করি আমার মা একজন গৃহবধূ। একজন সিংহী যেভাবে বাচ্চাদের রক্ষা করেন ঠিক তেমনি আমাদের তিনি রক্ষা করেছেন।
আমি আপনার বইতে বান্দরবানের অনেক অভিজ্ঞতার কথা পড়েছি। দু-একটি অভিজ্ঞতার কথা বলবেন?
আমার বাবা যেহেতু পুলিশে চাকরি করতেন, এজন্য এখানে এক বছর, ওখানে এক বছর করে সমগ্র বাংলাদেশ কিন্তু আমরা ঘুরে বেড়িয়েছি। আব্বার চাকরিসূত্রে আমরা একসময় বান্দরবান ছিলাম। সেখানে প্রচুর আদিবাসী বসবাস করে। অনেক আদিবাসী ছেলেমেয়ে আমার বন্ধু-বান্ধব ছিল। সেখানে শঙ্খ নদী ছিল। নদীর ওপারে লাখ লাখ বানর ছিল। আমি জানি না, বান্দরবান নামটি ওই বানর থেকে হয়েছে কিনা। এখন যখন যাই তখন দেখি সেই টিলাটি আছে। সেই বানরগুলো নাই। কোথায় যে গেল এই বানরগুলো। ছোট ছিলাম তো, আমরা সেই সকালে বের হতাম আর রাতে ঘরে ফিরতাম। আদিবাসী বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতাম। ওরা ভালো করে বাংলা বলতে পারে না। আমরাও আদিবাসীদের ভাষা বলতে পারি না।
আপনার কি মনে হয় সে সময় বাবা-মাদের টেনশন ছিল না—না আমরা অতি আত্মবিশ্বাসী হয়ে গেছি।
এখন নিরাপত্তাও নাই। তখন কিন্তু ওই জায়গাগুলো অনেক নিরাপদ ছিল। তখন বিপদের ঝুঁকিটা তেমন ছিল না। যদি লেখাপড়ার ব্যাপারটা ধরি—লেখাপড়া করলে করলাম, না করলে নাই। কোনো চাপ নাই আসলে। হুমায়ূন আহমেদ আমার বড় ভাই সে সারা বোর্ডে সেকেন্ড হয়েছে। অসম্ভব ভালো ছাত্র। অথচ সে ক্লাস এইট পর্যন্ত কোনো লেখাপড়া তেমন করে নাই। লেখাপড়া করত বলে আমরা জানতাম না। যখন সে ক্লাস এইটে পড়ে তখন একটা বৃত্তি পরীক্ষার ব্যাপার ছিল। ওই সময় তার চিকেন পক্স ওঠে। আমার বাবা গেলেন স্কুলে—আমার ছেলেটার তো চিকেন পক্স হয়েছে তার সিটবেডে পরীক্ষা দেওয়া যাবে কিনা? স্কুল কর্তৃপক্ষ বিরক্ত হলেন। বললেন, আপনার ছেলে কি নদীয়ার চাঁদ যে তার জন্য আলাদা ব্যবস্থা করতে হবে। তখন বাবার খুব লাগল—তিনি বললেন, হ্যাঁ আমার ছেলে আমার কাছে নদীয়ার চাঁদ। হুমায়ূন আহমেদ কথাটি শুনে—তার মধ্যে পরিবর্তন আসে। সে তখন লেখাপড়া শুরু করে। সে পড়াশোনা তেমন করত না। ঘুরে বেড়াত। খেলত। গল্পের বই পড়ত। সে যে কি পরিমাণ গল্পের বই পড়েছে তা কল্পনা করা যাবে না।
আপনার লেখালেখিটা কখন শুরু হয়?
আমার বাবা আমাদের সবাইকে দিয়ে লেখাতেন। ছোটবেলা থেকে তারা আমাদের লেখালেখি করতে বাধ্য করেছেন। আমরা জানতাম না লেখালেখিটা কঠিন ব্যাপার। বাবার কারণে আমরা নিয়মিত লিখে গেছি। কিছু একটা লিখলে পরে বাবা সেটা পড়েছেন এবং আবেগে আপ্লুত হয়েছেন। তিনি বলতেন, আরে অসাধারণ। সবচেয়ে বড় কথা হলো বই। বাসায় প্রচুর বই ছিল। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি আর্মিরা যখন আমাদের বাড়ি লুট করে তখন বইগুলো হারিয়ে যায়। একটা হরিণও ছিল আমাদের।
মুক্তিযুদ্ধের সময় আপনাদের তো একটা চরম কষ্টের সময় গেছে। সেই গল্পগুলো শুনতে চাই।
তখন আমাদের বয়স কম ছিল। জীবনটা ছিল আনন্দময়। কিন্তু ১৯৭১ সাল আমাদের একটা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল। আমাদের কোনো থাকার জায়গা নাই। একটা বাড়িতে আমরা আশ্রয় নিয়েছি। সেই ভদ্রলোক বললেন, আপনারা যদি এখানে থাকেন তাহলে খবর পেয়ে পাকিস্তানি আর্মিরা আসবে। আপনারা প্লিজ চলে যান। আমরা ছয় ভাইবোন। আমার বোন ইউনিভার্সিটিতে পড়ে। আমাদের সঙ্গে আমার মামি ছিলেন। মোটামুটি একটা বড় টিম। তারপর মা দুটো নৌকা ভাড়া করলেন। আমরা নৌকায় উঠলাম। কোথায় যাব জানি না। মা তখন রোজা রাখলেন। আমরা খবর পেয়েছি ভাসাভাসা বাবাকে মেরে ফেলা হয়েছে। মা নৌকার পাশ থেকে নদীর পানি খেয়ে ইফতারি করলেন। আমরা নৌকা দিয়ে যাচ্ছি। চারদিকে খুব সুন্দর পরিবেশ। রাতে পূর্ণিমার চাঁদ উঠেছে। অবিশ্বাস্য সুন্দর চাঁদ উঠেছে। হঠাৎ এক ভদ্রলোক আমাদের ডাক দিয়ে বললেন, আমি জানি আপনাদের বের করে দিয়েছে। আপনারা যদি চান তাহলে আমাদের বাসায় থাকতে পারেন। ওই মানুষটা আমাদের তার বাড়িতে নিয়ে গেল। চিনি না। গভীর রাতে দেখা গেল মানুষটা আস্তে আস্তে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। তখন মা বললেন—লোকটাকে আমরা চিনি না জানি না। সে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে। তোরা সবাই জেগে থাক। আমরা সবাই জেগে থাকলাম। ঘণ্টা দুই পরে লোকটা ফেরত আসল। সমস্ত শরীর ভেজা। হাতে একটা জাল ও থলি। মা তাকে জিজ্ঞাসা করলেন—বাবা তুমি কোথায় গিয়েছিলে? তখন তিনি উত্তর দিলেন—আপনারা তো আসছেন, খাওয়া-দাওয়া করেননি। বাসায় খাওয়ার কিছু নেই। আমি একটু দেখলাম কিছু মাছ ধরতে পারি কিনা। সে আমাদের জন্য মাছ ধরতে গিয়েছিল, মাছ ধরে এনে রান্না করে আমাদের খাওয়াল। ওই ঘটনার পর থেকে আমি কখনই মানুষকে অবিশ্বাস করি না। পৃথিবীতে অনেক খারাপ মানুষ আছে। কিন্তু তার থেকে একশগুণ বেশি ভালো মানুষ আছে। যখন বিপদ হয় তখন কিন্তু ওই ভালো মানুষগুলো আমাদের পাশে দাঁড়ায়। আমি মানুষকে কখনো অবিশ্বাস করি না।
মুক্তিযুদ্ধের পর বাবার কবর খুঁড়ে নতুনভাবে কবর দিয়েছিলেন।
আমার মা ছিলেন অত্যন্ত শক্তিশালী একজন মহিলা। যুদ্ধের পর মা বললেন—তোর বাবার লাশটা নদীর তীরে ছিল সেখান থেকে তুলে মানুষজন নদীতে কবর দিয়েছে। মা আমাকে বললেন—তুই কি পারবি কবরটা খুঁজে দিতে। মা যখন তার ছেলেকে এই কথাটি বলে এটা কিন্তু বিরাট ব্যাপার।
কবর খোঁড়া কি সোজা কাজ? মা যখন বলেছেন তখন তো না করতে পারি না। ফেব্রুয়ারি মাসে একদিন মাকে সেখানে নিয়ে গেলাম। সেখানে পুলিশ বা অন্য যারা ছিল তারা সকলেই সাহায্য করেছে। তখন আমি খুুঁজে খুঁজে আমার বাবার মৃতদেহ বের করলাম। আমার সঙ্গে আরেকজন ছিল।
চিনলেন কীভাবে?
আমার বাবা অসাধারণ হ্যানসাম একজন মানুষ ছিল। চিন্তা করতে পারবেন না। একজন কিশোরের মতো লাগত তাকে দেখতে। মা ও ছোট বোনকে দূরে বসিয়ে রেখেছিলাম। চেনা গেল এই কারণে যে আমার বাবা পুলিশ অফিসার ছিলেন। তার কাঁধে ব্যাজ ছিল। নাইলনের মোজা ছিল পায়ে। বোতামগুলো ছিল। উনার কোথায় গুলি লেগেছিল তা নির্ণয় করেছিল ডাক্তার। কফিনে করে তার দেহ নিয়ে আসলাম। জানাজা হলো। তারপর পিরোজপুরে তাকে পুনরায় দাফন করা হলো। কবরটা এখন সেখানে আছে। আমরা সুযোগ পেলে সেখানে যাই। আমার বাবার সঙ্গে চারজনকে মেরেছিল।
বাকিদের মৃতদেহ পাওয়া যায়নি। ওখানে তো জোয়ার-ভাটা হয়। তিনি আসলে ভেসে ছিলেন। তখন মানুষজন বলেছিল—উনি আসলে মাটি চাইছে। তখন গ্রামের মানুষেরাই লাশটিকে তুলে এনে তাকে কবর দিয়েছিল। এজন্য আমি বলি সমাজে দু-চারটা খারাপ মানুষকে দেখে কেউ জেন হতাশ না হয়।
মুক্তিযুদ্ধের সময় আপনারা একটা ভয়াবহ সময় পার করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সময়ের কথা জানতে চাই।
দেশ স্বাধীন হলো। আমরা খুব খুশি। আমরা তো জানি না যে অর্থনৈতিক অবস্থা একেবারে শেষ। দেশটাকে দাঁড়াতে আরও অনেক বছর সময় লাগবে। আমাদের কিছু নাই। বাবা চাকরি করতেন। সেটাই ছিল আমাদের জীবিকা। কিন্তু বাবা না থাকায় আমরা খুব বিপদে পড়লাম। কোনো সহায় সম্পত্তি নাই। তখন মা ঠিক করলেন যে আমরা সবাই ঢাকায় থাকব, সবাইকে লেখাপড়া করতে হবে। তখন অনেকেই বুদ্ধি দিয়েছিল বাবার গ্র্যাচুইটি ফান্ড পেলে তা নিয়ে গ্রামে ফিরে যেতে। তারপর ঢাকায় এসে আমরা বাসা ভাড়া করলাম, ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা শুরু করলাম। আমাদের কিছুই ছিল না। ফ্লোরে ঘুমাতাম। বালিশও ছিল না। ফ্লোরে ঘুমাতে ঘুমাতে এমন অভ্যাস হয়ে গেছে যে এখনো আমি সুযোগ পেলে ফ্লোরে ঘুমায়। খুব মজা লাগে। এখনো আমি ফ্লোরে বসে কাজ করি। আমাদের একটা কাজের ছেলে ছিল সে কীভাবে খুঁজতে খুঁজতে ঢাকায় এসে আমাদের খুঁজে বের করল। এটা একেবারে অসম্ভব ব্যাপার। সে আমার মাকে বলল—মা, আমি খবর পেয়েছি স্যারকে মেরে ফেলেছে। আপনি কিছু বোঝেন না। আমি সংসারের হাল ধরতাছি। সে রান্না শুরু করল। আমাদের ভাত দিয়ে সামান্য একটু তরকারি দিয়ে বলে—আর লাগবে। এভাবে সে খাবারের খরচটা কন্ট্রোল করল। আমরা মাকে কম্পেলেন করলাম। মা তখন তাকে বুঝালেন—বাবা মুক্তিযুদ্ধ করে এসেছ। তুমি বাসায় কাজ করবে এটা ভালো হয় না। আগে করেছ ঠিক আছে। তোমার আরও বড় কাজ করা দরকার। এভাবে তাকে গ্রামে ফেরত পাঠালেন। অন্যদিকে একটা বাসায় কদিন থাকি তো অন্য বাসায় যাই। তখন সরকার থেকে আমাদের নামে একটি বাসা বরাদ্দ দেওয়া হয়। সে বাসায় উঠলাম। বাসাটা খুব সুন্দর। ওই বাসার নিচের তলায় রক্ষীবাহিনী। ওরা চাচ্ছিল পুরো বাসাটা নিতে। একদিন ওরা অস্ত্র নিয়ে আমাদের বের করে দিল।
সেই সময় কি আপনি প্রথম গল্পের বই লিখলেন।
হ্যাঁ, সেই সময় আমি প্রথম গল্পের বই লেখি। আমি প্রথম যে গল্পটি লেখি তার নাম ‘ছেলেমানুষী’। সেটা বিচিত্রায় ছাপা হলো। তখন একটায় পত্রিকা বের হতো। সেখানে কেউ যদি কোনো লেখা ছাপাতে পারত তাহলে রাতারাতি সে লেখক পরিচিতি পেয়ে যেত। বিচিত্রায় ওই লেখা ছাপা হওয়ার পর আমি রাতারাতি লেখক খ্যাতি পেয়ে গেলাম।
আপনার লেখালেখির পেছনে হুমায়ূন আহমেদের কোনো প্রেরণা ছিল কিনা?
ছিল। আমি প্রথম যে সায়েন্স ফিকশন লিখছিলাম সেটা কিছুটা লেখার টেবিলে পড়ে ছিল। একদিন হুমায়ূন আহমেদ সেটা দেখে বলল, এটা কোথা থেকে অনুবাদ করেছ? না আমি তো অনুবাদ করিনি। আমি নিজে নিজে লিখেছি। সে আমাকে বলল, ভালো হচ্ছে লেখ। সে তখন কিন্তু বিখ্যাত হয়নি। আমরা পারিবারিকভাবে সবাই জানি, সে লিখলে বিখ্যাত হবে। তার লেখার হাত খুব ভালো। হুমায়ূন আহমেদ যখন কিছু লিখত আমাদের পড়তে দিত। আমরা বুঝে নিতাম সে খুব ভালো লিখেছে। তখন তো বই লিখে টাকা হবে এটা আমরা চিন্তাও করিনি। বই ছাপা হলে আনন্দ হবে অনেক বেশি। আমরা প্রাইভেট পড়াচ্ছি। লিখছি। পড়ছি। হুমায়ূন আহমেদ যখন ইউনিভার্সিটিতে চাকরি পেল তখন আমাদের নিয়মিত আয়ের সুযোগ হলো। তারপর আমি পিএইচডি করতে দেশের বাইরে গেলাম। তখন আমেরিকান প্রফেসররা ভাইভা নিতে দেশে আসতেন। আমার ইন্টারভিউ হলো। তারা আমেরিকা গিয়ে আমাকে চিঠি দিলেন। আমি খুবই আনন্দিত। কিন্তু প্লেনের ভাড়া কোথা থেকে আসবে আমার জানা নেই।
প্লেন ভাড়া জোগাড় হলো কীভাবে?
আমার এক বন্ধু ছিল জার্মানিতে। ও খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জানাল, তোর টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছি একটা শর্তে আমেরিকা যাওয়ার আগে জার্মানিতে এসে আমার সঙ্গে এক সপ্তাহ থাকতে হবে। সে আমার টাকা পাঠাল। সেই টাকা দিয়ে টিকিট কিনলাম। আমেরিকা গেলাম। আমি সব জায়গায় মানুষের সহযোগিতা পেয়েছি।
আমি একটু ড. ইয়াসমিন হকের কথা জানতে চাই।
ইয়াসমিন আমার ক্লাসমেট। আমার ধারণা ছিল না তার সঙ্গে আমার বিয়ে হবে। আমি স্ট্রাগল করে বেড়াচ্ছি। সমস্ত ঢাকা শহর একটা ভাঙা সাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। সে তো খুব ভালো পরিবারের মেয়ে। সে গাড়িতে আসে যায়। যখন আমি আমেরিকায় গেলাম তখন তিনজন গিয়েছিলাম। আমি একা। ওই ইউনিভার্সিটিতে কোনো বাঙালি নাই। তখন আমার দুই বন্ধুকে বললাম, তোমরা এখানে চলে এস। তখন দুজনই এখানে চলে আসার জন্য আবেদন করল। আমার ওই বন্ধুটি আসতে পারল না। ইয়াসমিন চলে এলো। তখন সেখানে শুধু আমরা দুজন। পরের ঘটনাতো স্বাভাবিকভাবেই ঘটল। আমরা একসময় ঠিক করলাম বিয়ে করব। দেশে জানালাম। দেশে এসে বিয়ে করে আবার আমেরিকা গেলাম।
স্যার, আপনি বলছিলেন, একটি সুতো পর্যন্ত কিনতে হয়নি।
সাধারণত স্ত্রীরা খুব ভয়ে থাকে। তুমি এই লেখাটা লিখেছ। তোমার বিরুদ্ধে এটা হবে, সেটা হবে। আমি যেহেতু মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অনেক লেখা লিখেছি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাচ্ছি। কঠোরভাবে স্বাধীনতাবিরোধীদের সমালোচনা করেছি। এটা এক ধরনের ঝুঁকি। এ নিয়ে ইয়াসমিন কখনো কিছু বলেনি। সে আমাকে উৎসাহিত করেছে।
আপনাকে ধন্যবাদ।
আপনাকেও ধন্যবাদ।
 
                         
                                     
                                                             
                                     
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                        