মা আর স্ত্রী-কন্যা নিয়ে ছিল সুখের সংসার। ছিলেন পরিবারের একমাত্র উর্পাজনক্ষম ব্যক্তি। একমাত্র মেয়ে যখন দুই বছরের, তখন এক মধ্যরাতে পরিবারে নেমে আসে বিষাদের ছায়া। বলা হচ্ছে বিএনপির জনপ্রিয় নেতা এম ইলিয়াস আলীর ব্যক্তিগত গাড়িচালক আনসার আলীর কথা। ইলিয়াস আলীর সঙ্গে ‘নিখোঁজ’ হন তিনি। ওই ঘটনার পর পরিবারে নেমে আসে হাহাকার। শুরু হয় সবার প্রিয় মানুষটির ফেরার প্রহর গোনা। এরই মধ্যে কেটে গেছে এক যুগ। ফুরায়নি ছেলের জন্য মায়ের, স্বামীর জন্য স্ত্রীর আর বাবার জন্য মেয়ের অশ্রুসিক্ত অপেক্ষা। ছেলের ফেরার পথ চেয়ে চেয়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন মা। দুর্বিসহ জীবনে একটু স্বস্থির আশায় দেশ ছাড়েন অসহায় স্ত্রী-কন্যা। সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার গুমরাগুল গ্রামের মৃত ইছব আলীর ছেলে আনসার আলী। আত্মীয়তার সুবাধে ইলিয়াসকে চাচা ডাকতেন তিনি। ছিলেন ইলিয়াস আলীর খুবই বিশ্বস্ত। ২০ বছর থেকেছেন ইলিয়াসের রাজধানীর বাসায়। বাড়ি এলে সময় কাটাতেন শিশুকন্যা চাঁদনিকে নিয়ে। তার আয়েই চলতো সংসার। যে রাতে নিখোঁজ হন, ওই রাত ১১টার দিকে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সবশেষ কথা হয় আনসার আলীর।
২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল মধ্যরাতে এম ইলিয়াস আলীর সঙ্গে নিখোঁজ হন গাড়িচালক আনসারও। এরপর থেকে তার সন্ধানে দিনরাত এক করেছে পরিবার। চেয়েছিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ। তবুও সন্ধান মেলেনি। অসুুস্থ মা নূরজাহান বেগমের (৬০) বিশ্বাস ছিল একদিন ফিরবে খোকা। অপেক্ষায় থেকেই না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি। নিখোঁজের সময় মেয়ের বয়স ছিল দুই বছর। সে এখন ১৪ বছরের কিশোরী। জানে না তার বাবা কোথায়? আনসার আলীর স্ত্রী মুক্তা বেগম বলেন, ‘নিখোঁজের পর থেকে কঠিন সময় পার করছি আমরা। তাড়া করে ফিরছে দুঃসহ যন্ত্রণা। আল্লাহ চাইলে কি না হয়? নিখোঁজ অনেকে তো ফিরেছেন। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস তিনি ফিরবেন।’