এলাকাবাসীর উন্নয়নের জন্য করা সেতুটি এখন স্থানীয়দের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। নির্মাণের নয় বছরের মাথায়ই অকার্যকর হয়ে পড়েছে ধনাইখালী নদীর ওপর প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত নেত্রকোনা সদর ও বারহাট্টা উপজেলার সংযোগ সেতুটি। অপরিকল্পিতভাবে নিচু করে নির্মাণের কারণে নৌকার ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেতুর পিলার। ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় দেড় বছর আগে সেতুর ওপর ইটের প্রাচীর দিয়ে বন্ধ করা হয়েছে যান চলাচল।
সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, নেত্রকোনা-২ আসনের দুই (সদর-বারহাট্টা) উপজেলাকে সংযুক্ত করার লক্ষ্যে এবং সহজে কম সময়ে দুই উপজেলা ছাড়াও মোহনগঞ্জ যাতায়াতের জন্য খরস্রোতা ধনাইখালী নদীতে নির্মিত হয় সেতুটি। সাহতা-গোপালপুর গ্রামের মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর ওপর ৯০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৭ দশমিক ৩ মিটার প্রস্থের সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। ২০১১ সালে এনটিটিএমএআর (জেবি) নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ পেয়ে নির্মাণ শুরু করে। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে কাজ শেষ করে ২০১৪ সালে। এরপর যানবাহন চালাচল শুরু হলেও ২০২৩ সালের জুলাই মাসে বালুবাহী ভলগেটের ধাক্কায় সেতুটি চারটি পিলারসহ গার্ডার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ কারণে এলজিইডি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে ওপরে দেয় প্রাচীর। এ প্রাচীর ভেঙেই চলছে সিএনজি, ইজিবাইকসহ অন্য ছোট যান।
স্থানীয় ইসমাইল হোসেন, ইমরান, অলক সরকার, মামুন মিয়া, আলম জানান, সেতুর উচ্চতা কম থাকায় নৌকার ধাক্কায় গার্ডারসহ চারটি পিলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নির্মাণের সময় উচ্চতা ও অনিয়ম নিয়ে স্থানীয়রা বিভিন্ন কর্মসূচি পলন করলেও গুরুত্ব দেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদার। উল্টো তৎকালীন এমপির মদতপুষ্ট আওয়ামী লীগ নেতা ঠিকাদার গাজী মোজাম্মেল হোসেন টুকু এবং অমিত সাহা পুলিশ দিয়ে স্থানীয়দের হয়রানি করেছেন। সেতু নির্মাণের পর নৌ চলাচল বিঘিœত হয়েছে। এ সেতুর মাধ্যমে জনসাধারণের উপকার তো হয়নি উল্টো রাষ্ট্রীয় টাকা গচ্ছা গেছে দাবি স্থানীয়দের। নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রবিউল ইসলাম জানান, তৎকালীন এমপির যোগশাজশে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে এলজিইডির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হুমকি-ধমকি দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে এ সেতু। ফলে এমন অবস্থা হয়েছে। কমপক্ষে ৫০ বছর স্থায়িত্বের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন ক্ষমতার অপব্যবহারের ফলে এই দুর্ভোগ।