বুধবার, ১১ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

গার্মেন্টে ইতিবাচক ধারা

আরও অনেক দূর এগোতে হবে

পোশাক খাতের কর্মপরিবেশ উন্নয়নের নানামুখী পদক্ষেপ বিদেশি ক্রেতাদের আস্থা বাড়িয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ১৫টি দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে এসে পোশাক খাতের অগ্রগতি দেখে গেছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও বাংলাদেশের পোশাক খাতে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রেক্ষিতে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে। বিদেশি ক্রেতাদের আস্থা বাড়ায় তৈরি পোশাক রপ্তানিতে আয়ও বাড়ছে। পোশাক কারখানা মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ জানিয়েছে, শ্রমিকদের নিরাপত্তায় এখন ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে। কারখানার কর্মপরিবেশ পরিদর্শনে এখন পর্যন্ত ২৭৭ জন পরিদর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আরও ১৬৪ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। শ্রমিকদের তথ্য সংরক্ষণে কারখানাগুলোতে ডাটাবেজ তৈরি করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ১ হাজার ২০০ কারখানা শ্রমিকের সমন্বিত ডাটাবেজ তৈরি হয়েছে। শ্রম মন্ত্রণালয় পোশাক খাতের শ্রমিকদের জন্য সরকারের কাছে কর্মপরিবেশ সংক্রান্ত অভিযোগ দেওয়ার জন্য বিনামূল্যে হেল্পলাইন সুবিধা চালু করেছে। নির্দিষ্ট নম্বরে শ্রমিকরা ফোন দিয়ে যে কোনো অভিযোগ জানাতে পারবেন। বাংলাদেশের তৈরি পোশাককে বিশ্বদরবারে ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে দেশীয় পোশাক উদ্যোক্তারা পরিবেশবান্ধব সবুজ কারখানা নির্মাণে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এ পর্যন্ত দেশের ২৮টি কারখানা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের লিড সনদ পেয়েছে। আরও ১১৮টি কারখানা এই স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে। পোশাক কারখানার স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় কাজ করার উদ্যোগ নিচ্ছে বিদেশি ক্রেতাদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স। এর ব্যাপারে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। রানা প্লাজার দুর্ঘটনা বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের ভাবমূর্তির ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। ঘরে-বাইরে চাপের মুখে পড়েন এ শিল্পের উদ্যোক্তারা। রানা প্লাজার দুর্ঘটনাকে যুক্তরাষ্ট্র অজুহাত হিসেবে খাড়া করে সে দেশে বাংলাদেশি পণ্যের জিএসপি সুবিধা বন্ধ করে দেয়। এ দুঃসময় কাটিয়ে উঠতে দেশের পোশাকশিল্পে যে সংস্কার কার্যক্রম শুরু হয় তাতে এ শিল্পের জন্য একটি মানবিক অবস্থান নিশ্চিত হয়েছে। নিজেদের সুনামের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ সৃষ্টিতে পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তাদের আরও অনেক দূর এগোতে হবে।  এ ক্ষেত্রে কোনো আত্মসন্তুষ্টিই বাঞ্ছনীয় নয়।

সর্বশেষ খবর