রবিবার, ২৬ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

সময় গেলে সাধন হবে না

হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ

সময় গেলে সাধন হবে না

গত কয়েকদিনের নৃশংস সব হত্যাকাণ্ডের খবরে আমরা কেউ স্বস্তিতে নেই। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি যে কতটা নাজুক তা ক্রমাগত ঘটে যাওয়া টার্গেট কিলিং থেকে সহজেই অনুমান করা যায়। ৪৮ ঘণ্টার মধ্য খুন হলেন তিনজন। যার শুরুটা হয়েছিল চট্টগ্রামের পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার মধ্য দিয়ে। মাঝে নাটোরে খুন হয়েছেন খ্রিস্টান মুদি দোকানদার সুনীল গোমেজ। অতঃপর ঝিনাইদহের পুরোহিত গোপাল গাঙ্গুলী। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আবারও খুন হলেন পাবনায় অনুকূল চন্দ্রের আশ্রমের সেবক নিত্যরঞ্জন পাণ্ডে। একই ধরনের হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছেন  বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক থেকে শুরু করে ধর্মীয় সংখ্যালঘু, ভিন্নমতাবলম্বী, বিদেশি নাগরিক, ব্লগার বা ভিন্ন জীবনধারায় বিশ্বাসী লোকজন। অবশেষে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী। এরা সবাই নিরীহ জনগণ। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এসব ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত, কে ঘটাচ্ছে, তা রয়ে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। যদিও ঘটনাগুলো ঘটার পর অধিকাংশ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের কাছ থেকে ‘দায় স্বীকারের ঘটনা’ ঘটছে। কিন্তু পরক্ষণেই সরকার থেকে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে আইএসের অস্তিত্ব নেই। ঘটনাগুলো এক একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা এবং দোষারোপ করা হচ্ছে বিরোধী রাজনৈতিক দলকে। কিন্তু মোটেই সমস্যার গভীরে যাওয়া হচ্ছে না। এখানেই সবার প্রশ্ন?

দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, সাম্প্রতিক সময়ে একের পর এক ঘটে যাওয়া চাঞ্চল্যকর সব গুপ্তহত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে বলা হয় এটি বিরোধী দলের কাজ। বিপরীতে বিরোধী দলের পক্ষ থেকে বলা হয় তাদের দমন করতে এ হত্যাকাণ্ড সরকার ঘটিয়েছে। উভয়পক্ষের শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে নিম্ন পর্যায় পর্যন্ত এ ধরনের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য আমরা প্রত্যক্ষ করছি। ৮ জুন বুধবার গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত গুপ্তহত্যা ও টার্গেট কিলিং হত্যা সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, ‘গুপ্তহত্যার বিষয়ে আমার কাছে অনেক তথ্য আছে। একটি বিষয় ভুলে গেলে চলবে না আমি হেড অব দ্য গভর্নমেন্ট। সরকারপ্রধান হিসেবে বিভিন্ন সংস্থার তথ্য আমার কাছে আসে। তদন্তের স্বার্থে সবকিছু বলতে পারি না। তবে গুপ্তহত্যাকারী ও সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এদের কেউ ছাড় পাবে না।’ তিনি বলেন, ‘এদের হত্যা করার প্রক্রিয়া একই রকম। বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট এবং দেশের অগ্রগতি বিনষ্ট করার জন্য এগুলো ঘটানো হচ্ছে। এমনকি বিএনপি-জামায়াত জোটের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, এতে তাদের মদদ রয়েছে। তারা যখন মানুষ পুড়িয়ে মারছিল তখন দেশবাসী যেভাবে জেগে উঠেছিল, ঠিক সেভাবেই আবার জেগে উঠতে হবে। একই বক্তব্য দিচ্ছেন সরকারের মন্ত্রীরাও। যদিও ৫ জানুয়ারির নির্বাচন পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সহিংস ঘটনায় সরকারের বিশেষ সংস্থার হাত রয়েছে দাবি করে বিএনপি সে সময় এক বিবৃতি দিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের একদিন পর মুখ খোলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক আলোচিত সব গুম-খুনের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা জড়িত। তাদের গ্রেফতার করলেই সত্য বেরিয়ে আসবে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, এসপির স্ত্রী হত্যায় কারা জড়িত তা এখন কেন বের করা গেল না? হাসিনার সঙ্গে যারা আছেন তারাই হলেন গুম-খুনের ওস্তাদ। পেট্রলবোমার আবিষ্কারক।’

অতঃপর জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে শুরু হয় পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান। এ অভিযান চলে সাতদিন। এই সাতদিনে গ্রেফতার হয়েছে ১৩ হাজার ৬০০ জনের বেশি। পুলিশ সদর দফতরের হিসাব মতে, সাতদিনে ১৯৪ জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিএনপি থেকে বলা হচ্ছে, এরমধ্যে ২ হাজার ৫০০ জনের ওপরে বিএনপির নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, সাতদিনে জঙ্গিবিরোধী সাঁড়াশি অভিযানে সফলতা খুব কম, উল্টা সাধারণ মানুষকে হয়রানি আর গ্রেফতার বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। গত বৃহস্পতিবার ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শন শেষে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, ‘কারাগারের পরিবেশ আমানবিক হয়ে উঠেছে। সেখানে ধারণক্ষমতার চেয়ে বন্দীর সংখ্যা তিনগুণেরও বেশি। অন্যদিকে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) বলেছে, ‘অপরাধের প্রমাণ ছাড়া বাছ-বিচারহীনভাবে মানুষকে গ্রেফতার করা অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত। ইতিপূর্বে এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের সাঁড়াশি অভিযানের নামে বিরোধী দলগুলোকে দমনের আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। তিনি আরও বলেছিলেন, ‘সাঁড়াশি অভিযানের কথা বলে ক্রসফায়ার বা তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা বেড়ে গেছে। ৯ জন ইতিমধ্যে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। এটা হচ্ছে তাদের সেই কৌশল, যেই কৌশল করে তারা এখানে জনগণের আন্দোলনকে দমিয়ে রেখেছিল।’ আজকে এই সাঁড়াশি অভিযানের অজুহাত নিয়ে তারা আবারও বিরোধী দলগুলোর ওপর দমন চালানো হচ্ছে বলে তখন তিনি তার আশঙ্কার কথা পুনরায় ব্যক্ত করেছিলেন। কিন্তু এ ধরনের একে অপরের দোষারোপের রাজনীতির ফলে প্রকৃত ঘটনা ও খুনিরা চলে যায় আড়ালে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি। দুর্নীতি, কালোবাজারিসহ সার্বিক সমাজে অপরাধপ্রবণতা বেড়ে যায়। তাই এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক আচরণ চর্চায় সবার মনোনিবেশ করা প্রয়োজন। কোন দল এর জন্য দায়ী তার চেয়ে বড় কথা ঘাতকদের চিহ্নিত করা। তবে এটাও মনে রাখতে হবে ক্রসফায়ার সংস্কৃতির কারণে প্রকৃত ঘটনা যাতে হারিয়ে না যায়। সর্বশেষ আমরা দেখতে পেলাম মাদারীপুরে কলেজশিক্ষক রিপন চক্রবর্তীকে হত্যা চেষ্টার মামলায় জঙ্গি তত্পরতার অভিযোগে রিমান্ডে থাকা গোলাম ফাইজুল্লাহ ফাহিম ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে তার কাছ থেকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়ার আগেই ক্রসফায়ারে তার নিহত হওয়ার ঘটনা প্রকৃত তথ্য জনগণের জানার বাইরে থেকে গেল।

আমরা বর্তমানে বাংলাদেশে যে চিত্র দেখছি তা সামাজিক অবক্ষয়ের এক বাস্তব প্রতিফলনের চিত্র। আজকে আমাদের দেশে কোনো কিছুই নিরাপদ নয়। জীবন নিরাপদ নয়, অর্থসম্পদ নিরাপদ নয়। ব্যাংকে টাকা থাকলে সেটা লোপাট হয়ে যাচ্ছে। বিদেশি দুর্বৃত্তরা দেশি লোকজনের সহায়তায় লোপাট করছে। আবার সার্বিক নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে এত সহিংসতা আগে কখনো দেখা যায়নি। ছয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে প্রায় ১১৫ জনের উপরে মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে শত শত। তদুপরি ২০১৫-১৬ সালে গুপ্তঘাতকের ৪৭টি হামলায় ৪৯ জন নিরীহ মানুষের প্রাণ বিসর্জন হয়েছে। হত্যাকাণ্ড থেকে সাংবাদিকতায় ও নাট্যাঙ্গনে যুক্তরাও বাদ পড়ছে না। সাগর-রুনি থেকে শুরু করে উদীয়মান নাট্যশিল্পী সোহাগী জাহান তনু পর্যন্ত। তনু একজন তরুণী, তিনি ধর্ষিতও নিহত হলেন। বাংলাদেশ যেন মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই লাশ পড়ছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় এখন পর্যন্ত বেশির ভাগ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি। ঘাতক চিহ্নিত হয়নি। এতে করে জনমনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ক্রমশ বাড়ছে। চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে মানুষ। অনেক শিল্পী-সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিক্ষকসহ সমাজের বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত পদস্থজনরা আজ প্রাতঃকালীন বা সন্ধ্যাকালীন হাঁটাহাঁটি বা শারীরিক কসরৎ করতে ভয় পাচ্ছেন। তার কারণ কখন যে কে ক্লিং টার্গেটে পরিণত হয় সেই ভয়ে। সরকারের উচিত এ উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দূর করে জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনা। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করা।

এ কথা সত্যি যে, আমরা বর্তমানে যে ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি সেখানে বিভেদ আর বিভাজন ছাড়া আর কিছু দেখতে পাচ্ছি না। পাকিস্তানিদের বিভেদ ও বিভাজনের রাজনীতির কারণে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম। কিন্তু এখন আবার কেন সেটা মাথাচাড়া দিয়ে উঠল। এখানে ন্যায় পর্যুদস্ত হচ্ছে আর অন্যায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। সুবিচার নেই। নেই বিবেকের দংশন। বিবেক আজ তাড়িত করে না ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য। ভিন্নমত বা আদর্শ দেখলেই তাকে দমন কর, হয়রানি কর। মাসের পর মাস, বছরের পর বছর জেলে রাখ, নিপীড়ন কর। কিন্তু নিজ অন্যায় অপকর্মের সংশোধনের জন্য মনোযোগ দেওয়া হয় না। এ এক করুণ চিত্র আমাদের সর্বদা গ্রাস করছে। গণতন্ত্রের কথা বলি কিন্তু গণতন্ত্রের সংস্কৃতি মানি না, ধার ধারি না। নিজ স্বার্থে গণতন্ত্রকে ব্যবহার করি। গণতন্ত্রের সাইনবোর্ডটাকে সামনে নিয়ে আসি। আবার গণতন্ত্রের সীমিত চর্চার কথা বলে উন্নয়নের কথা বলি। মালয়েশিয়া-সিঙ্গাপুরকে রোল মডেল হিসেবে টেনে আনি। কিন্তু প্রশ্ন জাগে, উন্নয়নের নামে যদি হয় মানুষের নিরাপত্তাহীনতা, উন্নয়নের নামে যদি হয় একটি মতাদর্শ ছাড়া অন্য আদর্শের মানুষ থাকবে না, উন্নয়নের নামে যদি হয় ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ রাজকোষের হাজার হাজার টাকা চুরি, উন্নয়নের নামে যদি হয় সহিংস নির্বাচনের মাধ্যমে শত মানুষ নিধন ও একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা, উন্নয়ন যদি হয় সত্য প্রকাশে গণমাধ্যমের অধিকার হরণ তাহলে তো তাকে কোনোভাবেই উন্নয়ন বলা যাবে না। কেন না উন্নয়ন ও গণতন্ত্র তো একে অপরের পরিপূরক।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত ভোটারবিহীন নির্বাচনের পর বিশিষ্টজনেরা বারবার তাদের কথায়-লেখায় বলে আসছিলেন, একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনের বাইরে রেখে কখনোই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যায় না। অন্তত সংসদীয় গণতান্ত্রিক রীতি-পদ্ধতিতে। বরং এ গণতন্ত্রের ফলে কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং যা একসময় ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। কেন না কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা দীর্ঘায়িত হলে জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদের ক্ষেত্রগুলো সম্প্রসারিত হয় এবং যা রাষ্ট্র ও সমাজের জন্য হুমকি হিসেবে দাঁড়ায়।  কথায় আছে লোভে পাপ আর পাপে মৃত্যু। যা আমরা ঈশপের ও আরব্য রজনীর গল্পে পেয়ে থাকি। হেমেসেপিয়েন্স বা সৃষ্টির সেরা হিসেবে আমাদের সবাইকে এই লোভের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তা না হলে সবার জন্য বড় দুর্দিন অপেক্ষা করছে। ক্ষমতার লোভ ও একক কর্তৃত্বে সবকিছুকে বাগে আনা বা বশীভূত করা সবসময় সম্ভব হয় না। বরং অর্থ, ক্ষমতা ও প্রতিপত্তির লোভে আজ নিজেরা নিজেদের মধ্যে সহিংস ও সন্ত্রাসী কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ছে। যা আমরা দৈনিক পত্রিকাগুলো খুললেই দেখতে পাই। এমনকি গত ইউপি নির্বাচনে নৌকার সমর্থকরা নৌকার বিপক্ষে ভোট দিয়ে তাই প্রমাণ করেছে।

পরিশেষে বলা যায়, বর্তমানে দেশে একের পর এক মানুষ খুন হচ্ছে, খুনিরা ধরা পড়ছে না, খুনিদের চিহ্নিত করা সম্ভব হচ্ছে না— এ প্রবণতা ভয়ঙ্কর। আইএস বা অন্য কোনো জঙ্গিগোষ্ঠী বা সন্ত্রাসীগোষ্ঠী যদি এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকে তাহলে দ্রুত এদের চিহ্নিত করে বিচারের মুখে দাঁড় করানো প্রয়োজন। এ পরিস্থিতি বেশিদিন স্থায়ী হলে এটা সবার জন্য আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠবে। এমনকি যা আমাদের গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন। এরমধ্যে রাজনৈতিক দুই শিবির যদি একে অপরের বিরুদ্ধে লড়তে থাকে তাহলে সামগ্রিকভাবে রাষ্ট্র অভ্যন্তরের প্রতিষ্ঠানসহ সার্বিক সমাজব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে। আর তখন রাষ্ট্রের অস্তিত্ব আরও বিপদের সম্মুখীন হতে পারে। তাই জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যে লড়াই সেটা সবার লড়াই। অবশেষে লালনের সেই কালজয়ী গানের কথা দিয়েই শেষ করতে চাই তা হলো—

‘সময় গেলে সাধন হবে না, দিন থাকতে দীনের সাধন কেন জানলে না তুমি কেন জানলে না, সময় গেলে সাধন হবে না।’ অর্থাৎ সময় থাকতেই সবকিছু করতে হবে, উপলব্ধির জায়গায় যেতে হবে।

 

লেখক : চেয়ারম্যান, ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।

ই-মেইল : [email protected]

সর্বশেষ খবর