শিরোনাম
শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

একজন মুক্তিযোদ্ধার ভাবনা

তুষার কণা খোন্দকার

একজন মুক্তিযোদ্ধার ভাবনা

(একজন মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন যেমন বলেছেন আমি তার কথাগুলো হুবহু লিখেছি। এই লেখার কৃতিত্ব তার। আমি তার ভাবনার সঙ্গে একমত, এটুকুই আমার কৃতিত্ব)। ২০১৬ সালের জুলাই মাস। মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন দুই চোখে বিস্ময় নিয়ে টিভি পর্দার দিকে চেয়ে আছেন। ঢাকা শহরের হলি আর্টিজান বেকারির বর্বর ঘটনা দেখতে গিয়ে ইসমাইলের মনে হচ্ছে, এই কি আমার বাংলাদেশ! এই দেশটি স্বাধীন করার জন্য এত যুদ্ধ, এত রক্ত! বিমর্ষ মনে টিভি পর্দায় চোখ রেখে তিনি বর্তমানকে দেখতে পারছেন না। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পুরো নয় মাস তার চোখের সামনে জীবন্ত হয়ে ফিরে এসেছে। যুদ্ধের ময়দানে যারা তার সহযোদ্ধা ছিলেন তাদের মুখগুলো তিনি চোখের সামনে দেখতে পারছেন। যুদ্ধ থেকে যারা জীবিত ফিরে এসেছিলেন তাদের মুখ-চোখের সামনে যতবার না ভাসছে তারচেয়ে বেশি জীবন্ত হয়ে উঠছে যুদ্ধক্ষেত্রে রেখে আসা মৃত সহযোদ্ধাদর মুখ। এতদিন সেই মুখে পড়ন্ত বেলার শেষ আভাটুকু বেঁচে ছিল। আজ মনে হচ্ছে, ওখানে শুধু হতাশার আধার। বার বার মনে হচ্ছে, এত আয়োজন, এত সম্মিলিত ত্যাগ-তিতিক্ষা সবই কি বিফলে গেল। কিছু দেশি নিরীহ মানুষকে জিম্মি করে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে সন্ত্রাসীরা ধ্বনি তুলছে ‘নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবর’। ১৯৭১ সালে রাজাকাররা নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবর ধ্বনি দিয়ে গ্রাম জ্বালিয়ে দিত। গ্রামের পুরুষ এবং শিশুদের হত্যা করত। নারী এবং সম্পদ লুট করে নিয়ে বলত, এগুলো মালে গনিমত। স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরে কয়েকজন জঙ্গি আল্লাহু আকবর ধ্বনি দিয়ে দুই পুলিশ অফিসারকে মেরে ফেলল! সংবাদ মাধ্যমগুলোতে ক্রমাগত খবর প্রচারিত হচ্ছে। উত্সুক মানুষ হলি আর্টিজানে আক্রমণকারী জঙ্গিদের হাতে বন্দী নিরীহ মানুষগুলোর পরিণাম নিয়ে উত্কণ্ঠিত। উত্কণ্ঠার রাত পোহালে পরদিন সেনা অভিযান শেষে নিহত বন্দীদের মৃতদেহের পাশে অল্প বয়সী জঙ্গিদের লাশ পড়ে থাকতে দেখা গেল। সেই সঙ্গে জাতি জানতে পারল একটি রাতে জঙ্গিরা হলি আর্টিজানে কি ভয়ঙ্কর নৃশংস তাণ্ডব চালিয়েছে। দেশের মানুষ, বিশেষ করে নবীন প্রজন্ম যখন জঙ্গিদের নিষ্ঠুরতার স্বরূপ দেখে বিস্ময়ে বিলাপ করছে তখন ইসমাইল দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাবলেন, এ আর নতুন কি! একাত্তর সালে যারা রাজাকারদের তাণ্ডব দেখেছে তারা জানে রাজাকাররা এর চেয়েও নিষ্ঠুর ঘটনা অবলীলায় ঘটাতে পারে। হলি আর্টিজানে হামলেপড়া জঙ্গিরা তাদের হাতে খুন হওয়া জিম্মিদের মৃতদেহের পাশে বসে সাহরি খেয়েছে দেখে ইসমাইলের মনে একাত্তরের একটি স্মৃতি জীবন্ত হয়ে ফিরে এলো। একাত্তর সালের ডিসেম্বর মাস। মুক্তিযুদ্ধ তার অনিবার্য পরিণামের দিকে তরতর করে এগিয়ে চলেছে। মুক্তিযোদ্ধারা ১০ ডিসেম্বর রাতে পাকিস্তানি সৈন্যদের শক্ত ঘাঁটি সুজানগর থানা ঘেরাও করে একযোগে আক্রমণ শুরু করল। ১১ ডিসেম্বর সারা দিন গোলাগুলি শেষে পাকিস্তানি সৈন্যরা সুজানগর ঘাঁটির দখল ছেড়ে দিয়ে রাতের আঁধারে জান নিয়ে পালিয়ে গেল। ১১ ডিসেম্বর সুজানগরের দখল নেওয়ার যুদ্ধে ইসমাইলের ছয় সহযোদ্ধা শহীদ হয়েছিলেন। ১২ ডিসেম্বর সকালে এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের শহীদ সহযোদ্ধাদের স্বাধীন সুজানগরে দাফন শেষ করে অস্থায়ী ক্যাম্পে ফিরে এলেন। ক্যাম্পে ফিরে ইসমাইল দেখেন মাঝবয়সী এক মহিলা সেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের দেখে মহিলা এগিয়ে এসে বললেন, ‘আমার ঘরে রাজাকার ইসাক মওলানা লুকিয়ে আছে। বলেছে, আমাকে ভাত রেঁধে খাওয়াও আর সেই সঙ্গে পথের দিকে নজর রাখ। এ দিকে কাউকে আসতে দেখলে আমাকে আগেই সাবধান করবে। আমি ইসাক মওলানাকে এক বাটি মুড়ি খেতে দিয়ে বলেছি, ঘরে চাল নেই। তোমাকে ভাত খাওয়াতে হলে আমাকে কারও বাড়ি থেকে চাল জোগাড় করে আনতে হবে। চাল জোগাড় করার কথা বলে আমি বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছি। আসলে আমি তোমাদের কাছে আমার স্বামী হত্যার বিচার চাইতে এসেছি। পরশুদিন রাতে রাজাকার ইসাক মওলানা আমার স্বামীকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে ওই মাঠের মধ্যে গুলি করে মেরেছে। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই।’ দুইদিন আগে নিহত স্বামীর শোকে মহিলা চোখের পানি ফেলছেন আর সেই সঙ্গে আঁচলে চোখ মুছতে মুছতে মুক্তিযোদ্ধাদের সাবধান করে দিয়ে বলছেন, ‘ইসাক রাজাকারের কাছে একটা দোনলা বন্দুক আছে। পাঞ্জাবির পকেট থেকে গ্রেনেড বের করে তাকে মেঝেতে রাখতে দেখেছি। তোমরা সাবধানে এগুবে।’ দুইদিন আগে যে মহিলা তার স্বামীকে হারিয়েছেন এত শোক আর বিপদের মধ্যেও তিনি ঠাণ্ডা মাথায় ভেবেচিন্তে কথা বলছিলেন। কয়েকজন সহযোদ্ধাকে সঙ্গে নিয়ে ইসমাইল সেই বিধবা মহিলার বাড়িতে চুপিসারে এগিয়ে গিয়ে দেখেন, ঘরের দরজা খোলা রেখে রাজাকার ইসাক মওলানা মেঝেতে বসে মুড়ি খাচ্ছে। লোকটার বয়স ৩০ পার হয়নি। অথচ এই বয়সেই লোকটা কি ভয়ানক নিষ্ঠুর। দুইদিন আগে এই মহিলার নিরীহ স্বামীকে ডেকে এই ঘর থেকে ঘুম থেকে জাগিয়ে পাশের মাঠে নিয়ে হত্যা করেছে। দুইদিন পার না হতেই রাজাকারটা বিধবা মহিলার কাছ থেকে মুড়ি চেয়ে নিয়ে নির্বিকারচিত্তে আয়েশ করে খাচ্ছে। ঘটনার এখানেই শেষ নয়, এরপর সে এই মহিলার হাতে রান্না করা ভাত খাবে বলে দুবির্নীত চিত্তে অপেক্ষা করছে। ইসমাইল মনে বিস্ময় নিয়ে লোকটার দিকে চেয়ে থাকেন। বিস্ময় কাটিয়ে পা চালিয়ে কাছে গিয়ে তিনি দ্রুত অস্ত্র তাক করে রাজাকার ইসাক মওলানাকে বললেন, হ্যান্ডস আপ। হ্যান্ডস আপ বলার কারণ যুদ্ধ শেষ হয়ে যাওয়ার পরে একজন রাজাকারকে শান্ত মাথায় কাছে থেকে গুলি করে মারার কথা ইসমাইল সেদিনও ভাবতে পারেননি। তিনি জানতেন, মুক্তিযোদ্ধারা সদ্য স্বাধীন দেশে একটি রাজাকারকে হয়তো নিয়মতান্ত্রিক বিচারের আওতায় আনতে পারবে না। সুজানগর স্বাধীন হলেও দেশের অনেক জেলা এবং রাজধানী ঢাকা তখনো পাকিস্তানিদের নিয়ন্ত্রণে। দেশে কোর্ট-কাছারির কোনো অস্তিত্ব নেই। কোর্ট-কাছারির অস্তিত্ব না থাকলেও রাজাকারটাকে নিজেদের ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের সালিসে সোপর্দ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু রাজাকারটা ইসমাইলের সদিচ্ছার মর্ম বুঝতে রাজি ছিল না। মুক্তিযোদ্ধাদের সদিচ্ছার কাছে আত্মসমর্পণ না করে রাজাকার ইসাক মওলানা তার অস্ত্রের দিকে হাত বাড়াতে ইসমাইল তাকে ধরে ফেলে হাত বেঁধে ক্যাম্পের পথে রওনা হয়েছিলেন। কিন্তু সদ্য স্বাধীন সুজানগরের সাধারণ মানুষ তখন রাগে ফুঁসছে। মারমুখী জনতা ইসাক মওলানাকে মুক্তিযোদ্ধাদের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ রাজাকারটাকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছিল। স্বাধীন দেশে এক রাজাকারকে বিনাবিচারে খুন করে মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল তার নিজের হাত কলুষিত করতে চাননি। কিন্তু কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার পক্ষে অমন প্রবল জনরোষ শান্ত করা সম্ভব ছিল না। ইসাক মওলানার মতো অনেক রাজাকার সে সময় জনতার হাতে মার খেয়ে মরেছে। কিন্তু আসলে কি তারা মরেছে? হলি আর্টিজানের ঘটনার দিকে চোখ রেখে ইসমাইলের মনে হয়, ইসাক মওলানারা মরে ভূত হয়ে গেছে কিন্তু ওদের প্রেতাত্মারা প্রেতলোক থেকে বেরিয়ে এসে বাঙালিকে তাদের অস্তিত্বের জানান দিতে শুরু করেছে।

১৯৭১ সালে ইসমাইল হোসেন যুদ্ধ করে পাকিস্তানি সৈন্যদের হারিয়ে দিয়েছিল। যুদ্ধে পাকিস্তানি সৈন্যদের ভরাডুবি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওদের এ দেশীয় দোসর শান্তি কমিটির নেতা কিংবা রাজাকাররা কেউ বাঁচল কেউ মরল। রাজাকাররা বাঁচল কি মরল সেটা বড় কথা নয়। ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা ভেবেছিল, বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে তারা রাজাকারদের চেতনা, রাজাকারদের নষ্ট মূল্যবোধকে কবর দিতে পেরেছে। ইসমাইলের ১৬ ডিসেম্বরের কল্পনা ১৭ ডিসেম্বর বুদবুদের মতো হাওয়ায় মিলিয়ে যেতে শুরু করেছিল। রাজাকাররা যে তাদের রক্তবীজের ঝাড়ের মধ্যে বেঁচে ছিল সেটি টের পেতে মুক্তিযোদ্ধাদের বেশি দিন অপেক্ষা করতে হয়নি। যুদ্ধের নয় মাস মুক্তিযোদ্ধারা ছিলেন সামনের সারির বীর। ১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারাদের পেছনের সারিতে ঠেলে দেওয়ার কাজ শুরু হয়ে গেল। ১৭ ডিসেম্বর যারা দেশের দায়িত্ব নিল তারা ভুলে গেল বাংলাদেশকে স্বাধীন করার জন্য এ দেশের গণমানুষ মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিল। যুদ্ধক্ষেত্রে যারা জানবাজি রেখে যুদ্ধ করেছিল তাদের কেউ কেউ হয়তো যুদ্ধে যাওয়ার আগে রাজনীতিতে সক্রিয় ছিল। কিন্তু বেশির ভাগ মুক্তিযোদ্ধা রাজনীতি থেকে যুদ্ধের প্রেরণা পাননি, তারা দেশপ্রেমকে পুঁজি করে যুদ্ধে গিয়েছিলেন এবং তাদের অনেকে রাজনৈতিক পরিচয়ের তোয়াক্কা না করেই স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধে প্রাণ দান করে গেছেন। গণমানুষের কাতার থেকে উঠে আসা মুক্তিযোদ্ধারা স্বাধীন বাংলাদেশে সরকার গঠন করার স্বপ্ন দেখেননি। স্বাধীন দেশে তারা মুক্তিযোদ্ধার সম্মানজনক স্বীকৃতি এবং বেঁচে থাকার জন্য সামান্য সহযোগিতা আশা করেছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের যৎসামান্য চাওয়া যখন কারও মনোযোগ পেল না তখনই রাজাকাররা বাংলাদেশে মাথা তোলার সুযোগ পেয়ে গেল। দেশে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের পরিচয় ১৭ ডিসেম্বর থেকে ঝাপসা হতে শুরু করেছে কারণ সেদিন থেকে রাজনীতির আঙিনায় নব্য ‘মুক্তিযোদ্ধাদের’ চাতুরীর যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। চোখের সামনে মিথ্যার ছড়াছড়ি দেখলেও মুক্তিযোদ্ধাদের মুখ বুজে থাকা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। ইসমাইল গণমানুষের কাতার থেকে উঠে আসা মুক্তিযোদ্ধা। এ দেশের গণমানুষের সততার ওপর তার বরাবর আস্থা ছিল। ’৭২ সালে তিনি দেখেছেন, মুক্তিযোদ্ধারা মুখ বুজে থাকলেও দেশের মানুষ মুখ বুজে ছিল না। দেশের মানুষ নিজেরা উদ্যোগী হয়ে ১৭ ডিসেম্বরে জন্ম নেওয়া ভেকধারী ‘মুক্তিযোদ্ধা’দের উপহাস করে সিক্সটিনথ ডিভিশন নাম দিয়েছিল। কিন্তু ‘সিক্সটিনথ ডিভিশন’ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে কবর দেওয়ার কাজটি সফলভাবে শেষ করে ফেলেছিল।

ইসমাইলের সহযোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধা রহমান ’৭২ সালে যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে একবেলা একমুঠো ভাতের জন্য মানুষের কাছে হাত পেতেছেন। আরেক সহযোদ্ধাকে তিনি দেখেছেন আরিচা-নগরবাড়ী ঘাটে নদী পারাপারের ফেরিতে সন্দেশ বিক্রি করে বেঁচে থাকতে। যুদ্ধের ধকলে ভেঙেপড়া শরীর নিয়ে অভাবী মুক্তিযোদ্ধা রহমানকে একবেলা ভাতের জন্য মানুষের দুয়ারে হাত পেতে ভিক্ষা চাইতে দেখে ইসমাইলের মনে হয়েছিল তার যুদ্ধের সাথী নুরু বড় ভাগ্যবান। একাত্তর সালের ১১ ডিসেম্বর ভোরে সুজানগরে পাক সেনাদের সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে নুরু কপালে গুলি খেয়ে মারা গেল। স্বাধীন বাংলাদেশে মুক্তিযোদ্ধা রহমানের ভিক্ষা করে বেঁচে থাকার দৃশ্য নুরুকে দেখতে হলো না। নয় মাস যারা জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করে দেশটাকে স্বাধীন করেছিলেন স্বাধীন দেশে সেই মুক্তিযোদ্ধারা অপাঙেক্তয় হয়ে গিয়েছিল। স্বাধীন বাংলাদেশে যুদ্ধে জয়ী মুক্তিযোদ্ধাদের জীবনযুদ্ধে পরাজয়বরণ করে নিতে দেখে রাজাকারদের প্রেতাত্মা মাঠ দখল করে নিতে সময় নষ্ট করেনি। রাজাকারদের চেতনা নামে-বেনামে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে। তবুও একদিনের জন্য ইসমাইল আশা ছাড়েননি। তিনি এখনো ভাবেন, এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাওয়ার তার শ্রেষ্ঠ সময়। বাংলাদেশের যুবসমাজ কি নষ্ট নব্য রাজাকারদের হাত থেকে দেশটাকে বাঁচাতে পারবে? বয়সের ভারে নুয়ে পড়া ইসমাইলের চোখে স্বপ্ন ঘনিয়ে এসে আবার সে স্বপ্ন দ্বিধায় মিলিয়ে যায়। মনে হয় একাত্তর সালে যুদ্ধটা অনেক সহজ ছিল। তখন শত্রু-মিত্র সহজেই চেনা যেত। কিন্তু এখন? রাজনীতির মারপ্যাঁচে সমাজের পানি বেজায় ঘোলা। এখানে কে শিকার কে শিকারি—নবীন প্রজন্ম কি সেটা আলাদা করতে পারবে? বুকে সাহস থাকলেও প্রতিপক্ষের রাজনীতির কৌশলের কাছে হার মেনে যাবে না তো!  

লেখক : কথাসাহিত্যিক।

সর্বশেষ খবর