কোটা সংস্কার আন্দোলন কেন্দ্র করে ১৬ জুলাই ছয়জনের মৃত্যু এবং ওই দিনের সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের তথ্যপ্রমাণ চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন এ ঘটনায় গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন। গতকাল প্রথম বৈঠকের পর প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান কমিশনের একমাত্র সদস্য হাই কোর্টের বিচারপতি খোন্দকার দীলিরুজ্জামান।
প্রথম বৈঠকে বিচারপতি খোন্দকার দীলিরুজ্জামান ছাড়াও মন্ত্রিপরিষদ সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. মাহমুদুল হোসাইন খান, অতিরিক্ত সচিব (আইন অনুবিভাগ) জাহেদা পারভীন, আপিল বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার শেখ মো. আমীনুল ইসলাম, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব (আইন-১ অধিশাখা) তানভীর আহমেদ ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জেলা ম্যাজিস্ট্রেসি নীতি অধিশাখার উপসচিব মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন অংশ নেন। বিচারপতি খোন্দকার দীলিরুজ্জামান বলেন, আমরা কাজ শুরু করেছি। আজ (গতকাল) প্রথম মিটিং করলাম। কোটা সংস্কার আন্দোলন কেন্দ্র করে ৫ থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত সংঘটিত অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও ছয়জনের মৃত্যুর বিষয়ে তথ্যপ্রমাণ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। ডাক অথবা ইমেইলে কমিশনের কাছে তা পাঠানো যাবে। আর কমিশনের দৈনন্দিন কার্যক্রম প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হবে।
কমিশনের তদন্ত ১৬ জুলাইয়ের ঘটনা নিয়েই হবে কি না-জানতে চাইলে বিচারপতি খোন্দকার দীলিরুজ্জামান বলেন, আমার যে টার্মস অব প্রেফারেন্স আছে, সেই টার্মস অব প্রেফারেন্স অনুযায়ীই হবে। সে অনুযায়ী কমিশনের কার্যক্রম চলবে। এখন পর্যন্ত এ ছয়জনের মৃত্যুর ব্যাপারেই প্রজ্ঞাপনে বলা আছে। পরিস্থিতি আরেকটু স্বাভাবিক হলে এবং কমিশনের কার্যক্রম আরেকটু গুছিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হবে। ঘটনাস্থলগুলো পরিষ্কার করে ফেলা হয়েছে। এখন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে প্রকৃত অবস্থা জানা যাবে কি না-এমন প্রশ্নের উত্তরে বিচারপতি দীলিরুজ্জামান বলেন, একটা অস্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছিল। কারফিউ ছিল, সাধারণ ছুটি ছিল। যে কারণে তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। আমরা চেষ্টা করব সব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করার। কোটা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৬ জুলাই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসে আন্দোলনকারীরা পুলিশ ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের সঙ্গে ত্রিমুখী সংঘর্ষে জড়ায়। সংঘাতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীসহ ছয়জন প্রাণ হারান। এরপর আন্দোলন আরও জোরালো হলে সরকার বিচার বিভাগীয় তদন্তের ঘোষণা দেয়। ১৮ জুলাই হাই কোর্টের বিচারপতি খোন্দকার দীলিরুজ্জামানকে সদস্য করে তদন্ত কমিশন গঠন করে। কমিশনকে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।