রংপুরে আওয়ামী লীগের নেতারা ফেল করেছেন, তারা ঘুরে দাঁড়ালেই দুর্বৃত্তরা নাশকতা করতে পারত না বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি বলেন, কোটা সংস্কারের নামে সারা দেশে যে তাণ্ডব চালানো হয়েছে, তা দেশের মানুষ দেখেছেন। সেই নৃশংসতা থেকে রংপুরও বাদ যায়নি। কিন্তু রংপুরে আওয়ামী লীগের দুর্বলতা রয়েছে, নেতারা ফেল করেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত আইনশৃংখলা বাহিনী ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে, মন্ত্রী কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে রংপুরের তাজহাট থানা, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি’র বাসভবন, ডিবি অফিস, জেলা-মহানগর আওয়ামী লীগ অফিস ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসে অগ্নিসংযোগ-ভাংচুর এবং লুটপাটের ঘটনা পরিদর্শন করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ছাত্রদের পুঁজি করে দেশ বিরোধী চক্র দেশে তাণ্ডব চালিয়েছে। কোটা আন্দোলনের নামে যারা দেশে সহিংসতার ঘটনা ঘটিয়েছে, মদদ দিয়েছে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। দেশে তাণ্ডব চালোনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে দেশে যে নাশকতা করা হয়েছে তা ছাত্ররা করেনি, বিএনপি-জামায়াত-জঙ্গি একসঙ্গে এই তাণ্ডবলীলা চালিয়েছে।
তিনি বলেন, দেশব্যাপী তারাই তাণ্ডব চালিয়েছে, যারা স্বাধীনতাবিরোধী। তারা ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যা করেছে। তারা ছাত্রদের কোটা আন্দোলন একটা সহিংস আন্দোলনে পরিণত করেছে। রংপুরের তাজহাটসহ ঢাকার কয়েকটি থানায় তারা আক্রমণ চালিয়েছে। আমাদের গর্বের জায়গা বিটিভি, মেট্রোরেল পুড়িয়ে দিয়েছে। এ আন্দোলনের নামে কারা পেছন থেকে মদদ দিয়েছে তা মানুষ জানে। এটা সেই স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি। বাংলাদেশকে একটা অকার্যকর দেশে পরিণত করার জন্য যারা ইন্ধন দিয়েছে, তারা ছাত্রদের বাদ দিয়ে নিজেরাই সামনে নেমে এসেছিল। তাদের এমন নাশকতায় দেশের মানুষ হতবাক হয়েছে। আমাদের দেশপ্রেমিক পুলিশ, বিজিবি ও আনসারসহ সব বাহিনী ধৈর্যের সাথে এ আন্দোলন মোকাবিলা করেছে।
তিনি আরও বলেন, ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সব দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। তারপরও দুর্বৃত্তরা ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। পুলিশকে টার্গেট করে হামলা চালানো হয়েছে। বাংলা ভাই যে জঙ্গি উত্থান করেছিল এই জামায়াত-বিএনপিও একই কাজ করেছে। আমরা আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে তাদের প্রত্যেককে চিহ্নিত করে আইনের মুখোমুখি করবো। সবাই মিলে তাদের প্রতিহত করবো। এই গোষ্ঠীকে আর মাথা তুলে দাঁড়াতে দেবো না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা বাধ্য হয়ে কারফিউ জারি করেছি, সেনাবাহিনীকে ডেকেছি। তারা সহযোগিতা করছে। এই জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের উত্থান, বিএনপি-জামায়াতের চক্রান্ত ইতোমধ্যে আমরা নিয়ন্ত্রণে এনেছি। খুব দ্রুতই জনজীবন আবারও স্বাভাবিক গতিতে চলবে।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য টিপু মুনশি, নাসিমা জামান ববি, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মনিরুজ্জামান প্রমুখ। মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মো. জাহাংগীর আলম, বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।
বিডি-প্রতিদিন/শআ